November 27, 2024
অসম্ভব গরম, কি খাব? কি খাব না?

অসম্ভব গরম, কি খাব? কি খাব না?

অসম্ভব গরম, কি খাব? কি খাব না?

অসম্ভব গরম, কি খাব? কি খাব না?

অসম্ভব রকম প্রচণ্ড গরমে পুড়ছে গোটা বাংলা। এখনই সময় আমাদের খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনধারা পরিবর্তন করার। তাপমাত্রা বাড়ার সাথে সাথে আমাদের এমন খাবার খাওয়া উচিত যা শরীরকে ঠান্ডা ও হাইড্রেট রাখে। প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই সময়ে আমরা ঘাম ও প্রস্রাবের মাধ্যমে প্রচুর পানি হারাই। যার কারণে শরীরে পানির ঘাটতি হতে পারে।

গ্রীষ্মকালে আমরা অন্যান্য সময়ের তুলনায় বেশি তৃষ্ণার্ত থাকি। তাই এই সময়ে পানির পরিমাণ বেশি থাকে এমন খাবার খাওয়া উচিত। এই গরমে নিজের বাড়তি যত্ন নিতে হবে। খাবারের তালিকায় মনোযোগ দিতে হবে। এ অবস্থায় সারাদিন কর্মস্থলে যাওয়া, স্কুলে যাওয়াসহ নানা কাজে ব্যস্ত। এই গরমে কি খাবেন? কি খাবার খেলে শরীর সুস্থ থাকবে? আসুন জেনে নিই এই গরমেও যে খাবারগুলো আমাদের সুস্থ থাকতে সাহায্য করবে।

নিরাপদ পানি

গরমে নিরাপদ পানি পানের বিকল্প নেই। কারণ গরমে ঘাম ও প্রস্রাবের সঙ্গে শরীর থেকে সোডিয়াম ও পটাশিয়াম বের হয়ে যায়। একজন সুস্থ মানুষের প্রতিদিন তিন থেকে সাড়ে তিন লিটার বা ১২ থেকে ১৩ গ্লাস পানি পান করা উচিত।

ডাবের পানি

ডাবের পানি আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। এতে রয়েছে প্রাকৃতিক ইলেক্ট্রোলাইট, যা শরীরের পানির স্তর বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং শরীরকে পুনরুজ্জীবিত করতেও সাহায্য করে। তাই গরমে আরাম পেতে নিয়মিত পান করতে পারেন ডাবের পানি।

শসা

শসার মাল্টি ভিটামিন এবং মাল্টি মিনারেল প্রাকৃতিক ওষুধ হিসেবে কাজ করে এবং ভিটামিন ও মিনারেলের অভাবজনিত সমস্যা থেকে রক্ষা করে। এছাড়াও শসার মধ্যে থাকা পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। শসাতে ৯৫ % পানি  থাকে। এটি শরীরের আর্দ্রতা ধরে রাখে এবং শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। তাই শসা খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন।

 দই

টক দই গরমে খুবই উপকারী একটি খাবার। দইয়ের পটাশিয়াম রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। দই খাবার সহজে হজমেও সাহায্য করে। এতে কিছু উপাদান রয়েছে, যা শরীরকে সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

লেবুর শরবত

তৃষ্ণা মেটাতে অন্য কোন কোমল পানীয় ছাড়া লেবু-পানি  পান করুন, অন্য কোন কোমল পানীয় ছাড়া লেবু-পানি  পান করুন। লেবুর পানিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম, যা রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। পাকা লেবুতে ইলেক্ট্রোলাইট থাকে (যেমন পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ইত্যাদি)। লেবু পানি  আপনাকে হাইড্রেট করে, শরীরকে এই প্রয়োজনীয় উপাদানগুলি সরবরাহ করে যা ডিহাইড্রেশন প্রতিরোধে সহায়তা করে। গরমে শরীরকে সতেজ রাখতে এর কোনো মিল নেই।

তরমুজ

গ্রীষ্মে তরমুজ আল্লাহর বড় আশীর্বাদ। তরমুজ পটাসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ, যা রক্তচাপ স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে। তরমুজ একটি পানযোগ্য ফল। গরমের সময় অতিরিক্ত ঘামের কারণে শরীর থেকে পানি বের হয়ে যায়। ফলে পানিশূন্যতার আশঙ্কা বেড়ে যায়। তরমুজ এই পানির ঘাটতি দূর করে শরীরকে ঠান্ডা রাখে।

টমেটো

টমেটো গ্রীষ্মকালে একটি উপকারী সবজি। লাল টুক-টুক টমটো দিয়ে তৈরি করা যায় নানা ধরনের খাবার। এটি লাইকোপেন সমৃদ্ধ। লাইকোপিন একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা শরীরকে মুক্ত র্যাডিকেল ক্ষতির সাথে লড়াই করতে সহায়তা করে। টমেটোতে প্রচুর পানি থাকে। এতে ভিটামিন এ এবং সিও রয়েছে। তাই গরমে নিয়মিত টমেটো খাওয়া উচিত।

কাঁচা আমের শরবত

কাঁচা আমে রয়েছে ভিটামিন-সি। কাঁচা আম যদি মরিচ না দিয়ে শরবত হিসেবে খাওয়া যায় তাহলে তাপ কমানো যায়।

সবুজ শাক – সবজি

এই ধরনের খাবারে ফাইবার এবং পানি খুব বেশি থাকে। তাই প্রতিটি খাবারের সঙ্গে অল্প পরিমাণে শাকসবজি খেলে শরীরে পানি কমার আশঙ্কা কমে। সেই সঙ্গে শরীরও মজবুত হয়।

পুদিনাপাতা

গরমে শরীর ঠান্ডা রাখতে পুদিনার রস খুবই ভালো। গোসলের আগে পানিতে কিছু পুদিনা পাতা ফেলে দিন। সেই পানি দিয়ে গোসল করলে শরীর ও মন সবল হয়। তাছাড়া যেকোনো ব্যথা থেকে তাৎক্ষণিক উপশম পেতে পুদিনা পাতার রস খুবই উপকারী। পুদিনা পাতার রসও ত্বকের জন্য উপকারী।

হালকা খাবার

গ্রীষ্মকালে খাবার হজমে সমস্যা হয়। তাই এ সময় হালকা খাবার খাওয়াই ভালো। গরম আবহাওয়ায় ভারী ও তৈলাক্ত খাবার যথাসম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে। দুপুরের খাবারে শাকসবজি, ছোট মাছ, মুরগির মাংস এবং ভাতের সাথে সালাদ থাকতে পারে।

ফল

গ্রীষ্মকালে আমাদের দেশ ভরে যায় মৌসুমী ফলের। আম, কাঠাল, লিচু, আনারস এর  মতো রসালো ফল বাজার হয়ে যায়। আপনি সকালের নাস্তা, দুপুরের খাবার এবং রাতের খাবারের পাশাপাশি সারাদিনের স্ন্যাকসের জন্য পর্যাপ্ত মৌসুমি ফল খেতে পারেন। এগুলোর পুষ্টিগুণ আপনাকে গরমে স্বস্তি দেবে এবং শরীর থেকে পানি বের করে বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা থেকে মুক্তি দেবে।

ফুটি

গ্রীষ্মকালীন আরেকটি সুস্বাদু ফল হল ফুটি। এটি যেমন মিষ্টি তেমনি হাইড্রেটিং। ফুটি খেলে সারাদিন সতেজ থাকবে। সেই সঙ্গে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়বে। ফুটি জুড়ি মেলা ভার হার্ট সুস্থ রাখতে, দৃষ্টিশক্তি উন্নত করতে, ওজন কমাতে এবং পেট সুস্থ রাখতে। তাই গ্রীষ্মকালে আপনার খাদ্য তালিকায় সুস্বাদু এবং স্বাস্থ্যকর ফুটি যোগ করুন।

যে খাবারগুলো খাওয়া উচিত্‍ নয়
  • বেশি মসলাদার খাবার
  • অতিরিক্ত তেলজাতীয় খাবার
  • ভাজাপোড়া,তৈলাক্ত খাবার ও জাঙ্ক ফুড
  • অতিরিক্ত চা-কফি
  • চিজ বা পনির যুক্ত সস
  • অ্যালকোহল
  • আইসক্রিম

1 Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X