ব্যস্ত সড়কে প্রকাশ্যে যুবককে কুপিয়ে হত্যা: নেপথ্যে নারী
হাদিসে বলা নবীজির বাণীটি অক্ষরে অক্ষরে বাস্তবে প্রতিপাত হতে চলছে। আর সেটা হল উম্মতের শেষ জামানায় কঠিন মুসিবতের দিনে মানুষের জন্য বিশেষ করে পুরুষের জন্য সবচাইতে বেশি প্রকট আকারে দেখা দিবে দুটি সমস্যা বা ফিতনা তার একটি হলো অর্থ সম্পদ আর আরেকটি হলো নারী। এবং অনেক খুনাখুনি, ঝগড়া বিবাদের অন্তরালে পাওয়া যায় নারীকে। এমনই ঘটনা ঘটেছে মিরপুরের এই যুবককে খুনের ঘটনার নেপথ্যেও রয়েছে সেই নারী। আর যার কারনেই এই ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে আজকের লেখা। বিপদ একজনের হলেও শিক্ষা সবার জন্য। তাহলে অল্প সময়ে পড়ে নেয়া যাক আজকের লেখাটি।
রাজধানীর মিরপুরের একটি ব্যস্ত সড়কে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে মো. ফয়সাল (২৫) নামে এক যুবককে । সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়ে নৃশংস ও নৃশংস এই হত্যাকাণ্ড। এ ঘটনায় গত শনিবার দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ। নিহত যুবকের নাম ফয়সাল পল্লবীর মুড়াপাড়া বিহারী ক্যাম্পের বাসিন্দা। তিনি পেশায় একজন কারচুপি কাজের কারুশিল্পী। আহত হয় তার বন্ধু রাশেদ। পুলিশ জানিয়েছে, এক মহিলার সঙ্গে বিবাদের জেরে ওই যুবককে খুন করা হয়েছে। পল্লবী অঞ্চলের এডিসি নাজুমাল হাসান জানান, হত্যাকাণ্ডে আটজন অংশ নেয়। গ্রেফতারকৃত দুজনসহ অন্যদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
পুলিশ ও নিহত ফয়সালের স্বজনরা জানান, গত শনিবার সন্ধ্যায় ফয়সাল তার বন্ধু রাশেদকে নিয়ে মিরপুর ১২ নম্বরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে ইফতার করতে যায়। সেখান থেকে অটোরিকশায় বাড়ি ফেরার সময় তাদের ওপর হামলা হয়। ঘটনার সময় রাস্তায় অনেক মানুষ ছিল, দোকানপাট খোলা ছিল, যানবাহন চলাচল করছে। কিন্তু মানুষ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে।
সিসিটিভি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজে দুর্বৃত্তরা অটোরিকশা থামিয়ে দুই যুবককে নামিয়ে মারধর শুরু করে। রাস্তার একপাশে নিয়ে যায়। আরেকজনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। রাজধানীর মিরপুর ১২ নম্বর সেকশনের সি ব্লকে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানায়, গ্রেফতারকৃত দুজনের মধ্যে একজন সরাসরি হত্যার সঙ্গে জড়িত। তারা হত্যার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। রোববার পর্যন্ত মামলা হয়নি। পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নিহত ফয়সাল তার পরিবারের সঙ্গে মিরপুর ১২ নম্বর সেকশনের মুরাপাড়া বিহারী ক্যাম্পের ই ব্লকে থাকতেন। প্রতিবেশী তানজিলা আক্তার নামে এক নারীর সঙ্গে ফয়সালের বিরোধ ছিল। ফয়সালের পাশের বাসায় তার বান্ধবী থাকে। কিছুদিন পর তার বান্ধবীর সঙ্গে ফয়সালের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল।
আরও জানা যায়, তিন দিন আগে ফয়সাল তানজিলার বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে গার্লফ্রেন্ডকে নিয়ে গান গেয়েছিলেন। তানজিলা ধরে নিয়েছিলেন যে ফয়সাল তাকে ব্যঙ্গ করে গানটি গেয়েছেন। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে হাতাহাতিও হয়। তাদের দুজনকেই আটকে রেখেছিল এবং মীমাংসাও করেছিল স্থানীয় বাসিন্দারা। গত শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে আবারও একই বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এ সময় ফয়সাল তানজিলার দিকে লাঠি ছুড়ে মারে। দুজনের মধ্যে আবার সংঘর্ষ হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রাশেদ জানান, এ বিরোধের জের ধরে তানজিলার স্বামী আকাশ, তার বন্ধু কাল্লু মিয়া ও তানজিলার বড় ভাই শাহীনসহ ৮ জন তাদের ওপর হামলা চালায়।
পথচারীরা ফয়সাল ও রাশেদকে রক্তাক্ত অবস্থায় স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে রাত সাড়ে ৮টার দিকে তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক ফয়সালকে মৃত ঘোষণা করেন। ফয়সালের বাবা শাহাদাত হোসেন একটি তাঁত কারখানায় কাজ করেন। ফয়সাল তার চার ছেলের মধ্যে তৃতীয়।
উল্লেখ্য, মিরপুর ১২ নম্বর সেকশনে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে ২০২১ সালের ১৬ মে এক যুবক সাহিনুদ্দিন (৩৩) কে তার ৬ বছরের শিশুর সামনে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ওই ঘটনায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে বলেন, লক্ষ্মীপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এম এ আউয়ালের প্ররোচনায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। এম এ আউয়াল ইসলামী গণতন্ত্রী পার্টির চেয়ারম্যান। তিনি একটি হত্যা মামলায় জামিনে মুক্ত হয়ে এখন আবারো রাজনীতিতে সক্রিয় রয়েছেন
ঢাকা শহরের মিরপুর হত্যাকাণ্ডের এবং খুনাখুনির একটি অন্যতম স্পট হয়ে দাঁড়িয়েছে। কখনো চাঁদাবাজি করে খুন, প্রতিপক্ষের আঘাতে প্রতিপক্ষ খুন, নারী গঠিত খুন , কিশোর গ্যাং দ্বারা দ্বারা খুন-সহ হরেক রকমের খুনের আধিপত্য চলছে মিরপুরে। অবশ্যই কর্তৃপক্ষকে যেভাবেই আপনি ক্ষমতায় থাকেন্না কেন; কঠোর হস্তে দমন করুন তাদের। এটাই হবে সাধারণ মানুষের চাওয়া পাওয়া এবং থামিদেরকে খুনিদেরকে এক্ষুনি।