November 22, 2024
নির্বাচনে অনিয়ম আর কারচুপির অভিযোগ স্বীকার করে পদত্যাগ করলেন রাওয়ালপিন্ডির কমিশনার

নির্বাচনে অনিয়ম আর কারচুপির অভিযোগ স্বীকার করে পদত্যাগ করলেন রাওয়ালপিন্ডির কমিশনার

নির্বাচনে অনিয়ম আর কারচুপির অভিযোগ স্বীকার করে পদত্যাগ করলেন রাওয়ালপিন্ডির কমিশনার

নির্বাচনে অনিয়ম আর কারচুপির অভিযোগ স্বীকার করে পদত্যাগ করলেন রাওয়ালপিন্ডির কমিশনার

নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগে পদত্যাগ করেছেন রাওয়ালপিন্ডির কমিশনার, গ্রেফতার করা হয়েছে তাকে।

পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডির কমিশনার ভোট কারচুপিতে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে পদত্যাগ করেছেন। একই সঙ্গে তিনি নিজের এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিচার চেয়েছেন।

শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাওয়ালপিন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিয়াকত আলী পদত্যাগ করেন এবং দাবি করেন যে পিন্ডিতে জোর করে ১৩ প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমরা পরাজিত প্রার্থীকে ৫০ হাজার ভোটের ব্যবধানে বেশি ভোট দেখিয়ে জিতেছি।

লিয়াকত বলেন, আমি রাওয়ালপিন্ডি বিভাগে অবিচার করেছি। আমি আজ ফজরের নামাজের পর আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পরে ভাবলাম, মহাপাপের মৃত্যু কেন মেনে নেব? আমি কেন মানুষের কাছে সবকিছু প্রকাশ করি না?

কমিশনার বলেন, রাওয়ালপিন্ডি বিভাগে ভোট জালিয়াতির দায় স্বীকার করছি। আর নিজেকে পুলিশের হাতে তুলে দিই।

কমিশনার লিয়াকত বলেন,তিনি এই শহরে অনেক উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। তবে দেশকে পেছনের দিকে ঠেলে দিয়ে নিজের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য তিনি আফসোস করেন।

লিয়াকত আরও বলেন, এ কাজ করে রাতে ঘুমাতে পারিনি। এখন আমি শান্তিতে মরতে চাই। আমি যা করেছি তার শাস্তি হোক। প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ ইসিপির অন্য কর্মকর্তাদের শাস্তি পেতে হবে।

হইহই রইরই  পড়ে গেছে পাকিস্তানে। চিলের পেছনে ছুটতে ছুটতে এবার পুরো ‘কানটাই’ পেয়ে গেছে। ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে; দিবালোকে ডাকাতি হয়েছে ; মধ্যরাতে অধিনায়কের (ইমরান খান) জয় ছিনতাই হয়েছে। সরকারের উচ্চপদস্থ আমলা-জেলা প্রশাসকের মুখেই এই  বাঁশি! পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা পাকিস্তানের সবচেয়ে প্রভাবশালী প্রদেশ পাঞ্জাবের রাওয়ালপিন্ডিতে ‘পানিপথে’ গদি দখল করতে ব্যর্থ হতে বাধ্য হয়। শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে রাওয়ালপিন্ডির ডিসি (কমিশনার) লিয়াকত আলী চট্টা এ তথ্য জানান।

নির্বাচনী কারচুপি ইস্যুতে পাকিস্তান আগে থেকেই উত্তাল ছিল। পূর্বঘোষিত কর্মসূচিতে পাকিস্তানের প্রায় সব শহরেই পিটিআইয়ের নির্বাচন বাতিলের স্লোগান ছড়িয়ে পড়ে । রাস্তার আওয়াজে হঠাৎ আগুনে ঘি মেশালেন লিয়াকত আলী চাটা।

ভোট গণনায় কারচুপির কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, যেসব প্রার্থী ৭০ হাজার ভোটে জয়ের পথে ছিলেন, তারা ৫০ হাজার ভোট হেরে গেছেন। তিনি আরও বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও প্রধান বিচারপতিও এতে পুরোপুরি জড়িত ছিলেন। তিনি অভিযোগ স্বীকার করে শনিবার পদত্যাগ করেন। কয়েক ঘণ্টা পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে তাও গোপন। স্বভাবতই ডিসির ঘোষণায় বেকায়দায় পড়েছে দেশটির সরকার। বিশেষ করে পিএমআর-এন এবং পিপিপি জোট যে ‘সেনাগালিচায়’ ‘ সরকারের সিংহাসনের নেশায় হাঁটছে।  এটা কি পরিবর্তন বা বন্ধ হবে? নাকি পাকিস্তানের আকাশে ঝড়ের মতো ‘মার্শাল ল’ আসবে?

৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের জাতীয় ও প্রাদেশিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বিজয়ীরা এখনো সরকার গঠন করতে পারেনি! প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সহ বেশ কয়েকটি দল ফলাফলের বিড়ম্বনার কারণে নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ করছে। পিটিআই দাবি করেছে যে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি নির্বাচনে অন্তত ৮৫ টি আসনে কারচুপি হয়েছে। দলটির কেন্দ্রীয় তথ্য সম্পাদক রওফ হাসান বলেন, বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে ভোট গণনা করে বিজয়ের ব্যবধান প্রশস্ত হয়েছে। তারা কারসাজির কারনে হেরে  গেছে। এবার অভিযোগ স্বীকার করে পদত্যাগ করলেন আলী চাটা।

শনিবার রাওয়ালপিন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, সব অন্যায়ের দায় আমি নিচ্ছি। তবে শুধু আমি নই, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও প্রধান বিচারপতিও এর সঙ্গে পুরোপুরি জড়িত। রাওয়ালপিন্ডি বিভাগে পরাজিত প্রার্থীদের বিজয়ী করতে এটি করা হয়েছে। দুঃখ প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, তার ওপর প্রতারণার চাপ ছিল। একপর্যায়ে তিনি আত্মহত্যার চিন্তাও করেন। কিন্তু পরে তিনি বিষয়গুলো জনগণের সামনে তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নেন। আলী চাটা আরো বলেন, নির্বাচনী কর্মীরা আজও ব্যালট পেপারে জাল স্ট্যাম্প লাগাচ্ছেন। তিনি আমলাতন্ত্রকে অনুরোধ করেন, এই রাজনীতিবিদদের কোনো ভুল যেন না হয়। অধিদফতরের রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে বলেন, ‘আমরা দেশের প্রতি অবিচার করেছি। আমার মৃত্যুদণ্ড হওয়া উচিত।

তবে কমিশনার লিয়াকত আলী চাটার দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন (ইসিপি)। এক প্রেস বিবৃতিতে নির্বাচন কর্তৃপক্ষ বলেছে, “কমিশনের কোনো কর্মকর্তা তাকে ফলাফল কারচুপির বিষয়ে কোনো নির্দেশনা দেননি।” তবে যত দ্রুত সম্ভব বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। পাঞ্জাবের তত্ত্বাবধায়ক মুখ্যমন্ত্রী মহসিন নকভি বিষয়টি নিয়ে কড়া নোটিশ জারি করেছেন। অভিযোগ খতিয়ে দেখতে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন তিনি। আসল ঘটনা সামনে আনতেআলি চাটার অভিযোগের নিরপেক্ষ তদন্তেরও নির্দেশ দিয়েছেন

পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি (সিজেপি) কাজী ফয়েজ ইসাও লিয়াকত আলী চাটার অভিযোগের প্রমাণ চেয়েছেন। চাট্টাকে উদ্দেশ্য করে বলেন  আপনি ভিত্তিহীন অভিযোগ করেছেন। আপনার অভিযোগের কোন সত্যতা নেই। কারণ আপনি প্রমাণ দেননি। আপনি চাইলে অভিযোগ করতে পারেন। এটা আপনার অধিকার। কিন্তু প্রমাণ দিতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X