November 26, 2024
নির্বাচনে প্রকৃত প্রতিদ্বন্দ্বিতা নেই: পশ্চিমা কূটনীতিকদের পর্যবেক্ষণ

নির্বাচনে প্রকৃত প্রতিদ্বন্দ্বিতা নেই: পশ্চিমা কূটনীতিকদের পর্যবেক্ষণ

নির্বাচনে প্রকৃত প্রতিদ্বন্দ্বিতা নেই পশ্চিমা কূটনীতিকদের পর্যবেক্ষণ

নির্বাচনে প্রকৃত প্রতিদ্বন্দ্বিতা নেই: পশ্চিমা কূটনীতিকদের পর্যবেক্ষণ

জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে দেশ-বিদেশে চলছে নানা ধরনের বিশ্লেষণ। ঢাকায় কর্মরত বিদেশি কূটনীতিকরাও এবারের নির্বাচনের দিকে কড়া নজর রাখছেন। ফলে বাংলাদেশে বিরোধী দলবিহীন একতরফা নির্বাচন নিয়ে তাদের কাছে কিছু গোপন নেই।

পশ্চিমা কূটনীতিকরা পর্যবেক্ষণ করেছেন যে বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে প্রকৃত প্রতিদ্বন্দ্বিতা নেই এবং ভোটারদের তাদের প্রতিনিধি বেছে নেওয়ার কোনো বাস্তব বিকল্প নেই। ফলে ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে জয়ী হবে আওয়ামী লীগ।

ঢাকায় পশ্চিমা কয়েকটি দেশের দূতাবাস সূত্রে জানা গেছে, ভোট ঘোষণার পর থেকে ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্বাচনী পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে তারা প্রতিবেদন তৈরি করেছে। এরই মধ্যে প্রতিবেদনটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। তাদের নিজ নিজ দেশ। সেসব দেশের কয়েকজন কূটনীতিকের সঙ্গে কথা বলে তারা সবাই প্রায় একই রকম পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন। তবে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি কেউ।

পশ্চিমা প্রভাবশালী একটি দেশের কূটনীতিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে গণমাধ্যমকে বলেন, নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে নির্বাচনে প্রকৃত প্রতিদ্বন্দ্বিতার অভাব রয়েছে। প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ও সমমনা জোটের দলগুলো নির্বাচন বর্জন করেছে, ভোটারদের কাছে কোনো বিকল্প নেই।

এ নির্বাচনকে ঘিরে সংঘাত ও সহিংসতার ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে বিভিন্ন দূতাবাস। সেই সঙ্গে দ্বন্দ্ব-সহিংসতার সঙ্গে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনার প্রয়োজনীয়তার কথাও তারা পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন।

বাংলাদেশে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবেশ তৈরিতে সব রাজনৈতিক দলকে রাজি করাতে না পারায় ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) আক্ষেপ রয়েছে। ইইউ দেশের একজন কূটনীতিক বলেছেন যে রাজনীতিতে বহু-গণতান্ত্রবাদ, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং মানবাধিকারের আন্তর্জাতিক মান সবারই অনুসরণ করা উচিত। এগুলো দেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। আর এটি বাংলাদেশকে ইইউর জিএসপি প্লাস পেতে সাহায্য করবে। কারণ ইইউর জিএসপি প্লাসের অন্যতম শর্ত হল – গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং সুশাসন। এ কূটনীতিক বলেন, নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে ইইউর একটি বিশেষজ্ঞ দল বাংলাদেশ সফর করছে। ভোটের কয়েক সপ্তাহ পর তারা তাদের প্রতিবেদন দেবেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরেক পশ্চিমা কূটনীতিক বলেন, নির্বাচন যেভাবে চলছে তাতে তাকে ক্ষমতাসীন দলের যোগ্য প্রার্থী বাছাই করতে বললে ভুল হবে না। কারণ পুরো বিষয়টি যেভাবে সামনে এসেছে তাতে আওয়ামী লীগই আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী। তাদের একজন নৌকা প্রতীক পেয়েছেন, অন্যজন পাননি।

যাইহোক, বাংলাদেশ সম্পর্কে প্রতিটি দেশের নিজস্ব অগ্রাধিকার রয়েছে, যা অন্যদের থেকে আলাদা। পশ্চিমা দেশগুলো সেই অগ্রাধিকারের কথা মাথায় রেখেই সাড়া দিচ্ছে। এই কূটনীতিক আরও বলেন, “পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে প্রকৃত চিত্র দেখানো উচিত।” কিন্তু এর মানে এই নয় যে আমাদের অবস্থান পরিবর্তন হয়েছে।
উল্লেখ্য,
বিএনপির দুই ভাইস চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী ও মেজর (অব.) মো.হাফিজ উদ্দিন আহমেদসহ ৮ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। গতকাল ঢাকা মহানগর হাকিম রাজেশ চৌধুরীর আদালত তাকে এ সাজা দেন। গত ১৬ সপ্তাহে বিএনপির ১৫৬১ নেতা-কর্মীকে সাজা দিয়েছেন আদালত।
বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, গত ১৬ সপ্তাহে আদালত ১৫৬১ বিএনপি নেতাকর্মীকে সাজা দিয়েছেন। দ্রুত সাজা চেয়ে রাত পর্যন্ত মামলার শুনানি হয়। যেসব মামলায় নেতাকর্মীদের সাজা হয়েছে সেসব মামলার রায়ের কপিও পাচ্ছি না। যে কারণে আমরা আপিল করতে পারি না।

অন্যদিকে, গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন বিএনপির আরেক নেতা। তিনি রাজধানীর মুগদা থানা শ্রমিক দলের যুগ্ম আহ্বায় ফজলুর রহমান কাজল। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টায় তিনি মারা যান। বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এ তথ্য জানান। তিনি জানান, গত ২৬ অক্টোবর গায়েবি মামলায় গ্রেফতার কাজলকে কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়। ২৬ ডিসেম্বর কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়লে কারা কর্তৃপক্ষ তাকে হার্ট হাসপাতালে ভর্তি করে। রাত সাড়ে ১০টায় তিনি মারা যান।
বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস এ মৃত্যুকে হত্যাকাণ্ড উল্লেখ করে উপযুক্ত বিচার দাবি করেছেন।
উল্লেখ্য, গত ২৮ অক্টোবর গণসমাবেশের পর বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়। গত দুই মাসে কাজলসহ বিএনপির সাত নেতা কারাগারে মারা যান।

এভাবেই ধরপাকড়, হত্যা হামলা-মামলা এবং কারাগারে নিক্ষেপ এবং সেখানে অসুস্থ অবস্থায় মৃত্যু । এরকম পরিস্থিতি চলছে প্রকৃতপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বী, সবচেয়ে বড় জনমানুষের দল বিএনপির অবস্থা। এবং সেভাবেই কম্বোডিয়ান স্টাইলে নির্বাচন করতে যাচ্ছে বর্তমান আঃ লীগ  সরকার ।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X