November 1, 2024
বিশ্বে ধনীদের ১ শতাংশ ৬৬ শতাংশ দরিদ্রের সমান কার্বন নিঃসরণ করছে

বিশ্বে ধনীদের ১ শতাংশ ৬৬ শতাংশ দরিদ্রের সমান কার্বন নিঃসরণ করছে

বিশ্বে ধনীদের ১ শতাংশ ৬৬ শতাংশ দরিদ্রের সমান কার্বন নিঃসরণ করছে

বিশ্বে ধনীদের ১ শতাংশ ৬৬ শতাংশ দরিদ্রের সমান কার্বন নিঃসরণ করছে

দুটি প্রধান জীবাশ্ম জ্বালানী হল কয়লা এবং ডিজেল। এই দুটি পদার্থের ব্যবহার এখন বিশ্বে সবচেয়ে বেশি। ফলে কার্বন ডাই অক্সাইডের নিঃসরণ মারাত্মকভাবে বেড়েছে। কার্বনের এই নিঃসরণ না কমলে ২০৫০ সাল নাগাদ বছরে একবার সমুদ্রের পানিতে তলিয়ে যাবে ৩০ কোটি মানুষের বিশাল এলাকা।

কার্বন নিঃসরণ বলতে কী বোঝায়?

কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমন বা CO 2 নির্গমন হল জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানো এবং সিমেন্ট তৈরি থেকে নির্গমন; এর মধ্যে রয়েছে কঠিন, তরল এবং গ্যাস জ্বালানীর পাশাপাশি গ্যাস ফ্লারিংয়ের সময় উত্পাদিত কার্বন ডাই অক্সাইড।

পেট্রোল, ডিজেল, কয়লা, প্রাকৃতিক গ্যাস সহ প্রায় সমস্ত জীবাশ্ম জ্বালানীতে কার্বন বিদ্যমান এবং শক্তি উৎপাদনের জন্য তাদের পোড়ানো হলে কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গত হয়। অন্যদিকে, কিছু পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি, যেমন বায়ু, সৌর, জলবিদ্যুৎ এবং পারমাণবিক জ্বালানীতে  কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গত করে না।

বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ১ শতাংশ মানুষ অর্থাৎ প্রায় ৮ কোটি মানুষ ৬৬ শতাংশ গরিব জনগোষ্ঠীর চেয়েও বেশি কার্বন নিঃসরণ করে।  কিন্তু এই কার্বন নির্গমনের ক্ষতিকর প্রভাবের অধিকাংশই বহন করে বিশ্বের দরিদ্ররা। অলাভজনক আন্তর্জাতিক সংস্থা অক্সফাম এবং স্টকহোম এনভায়রনমেন্ট ইনস্টিটিউটের যৌথ গবেষণায় বিষয়টি উঠে এসেছে।

বিশ্বের জনসংখ্যার সবচেয়ে দরিদ্র ৬৬ শতাংশ বা ৫০০ কোটি মানুষ যে পরিমাণ কার্বন নিঃসরণ করে, একই পরিমাণ নিঃসরণ করছে মাত্র ১ শতাংশ ধনী বা ৭ কোটি ৭০ লাখ মানুষ।  রোববার আন্তর্জাতিক সংস্থা অক্সফামের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনের সহ-লেখক ম্যাক্স লসন বলেন, “জলবায়ু সংকট মোকাবেলা করা একটি সমন্বিত চ্যালেঞ্জ।” জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য সবাই সমানভাবে দায়ী নয়। এটা মাথায় রেখে সরকারি নীতি প্রণয়ন করা প্রয়োজন। আপনি যত ধনী হবেন, ব্যক্তিগত খরচ এবং বিনিয়োগ থেকে আপনার কার্বন নিঃসরণ কমানো আপনার পক্ষে তত সহজ হবে। আপনার তৃতীয় গাড়িটির প্রয়োজন নেই কিংবা চতুর্থ নাম্বারের  অবকাশে যাওয়ার প্রয়োজন নেই অথবা সিমেন্টশিল্পে বিনিয়োগের প্রয়োজন নেই।

স্টকহোম এনভায়রনমেন্ট ইনস্টিটিউটের (SEI) গবেষণার ভিত্তিতে ‘ক্লাইমেট ইক্যুইটি: এ প্ল্যানেট ফর দ্য ৯৯ পার্সেন্ট’ শিরোনামের প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে। এটি ২০১৯ পর্যন্ত বিভিন্ন আয়ের ব্যক্তিদের ব্যক্তিগত খরচ কার্বন নির্গমনের প্রবণতা পরীক্ষা করে। বিশ্ব নেতারা দুবাইতে COP-২৮ গ্লোবাল ক্লাইমেট সামিটে যোগ দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হওয়ার সময় প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। চলতি মাসের শেষ দিকে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। দীর্ঘমেয়াদে উষ্ণায়নের হার ১.৫ শতাংশে সীমাবদ্ধ রাখার লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে কি না  সে ব্যাপারে  ইতিমধ্যেই আশঙ্কা রয়েছে।

উদাহরণস্বরূপ বলা যায় ,, ফ্রান্সে ১০ বছরে দেশটির দরিদ্রতম ৫০ শতাংশ মানুষ যে পরিমাণ কার্বন নিঃসরণ করে, একই পরিমাণ কার্বন এক বছরে নিঃসরণ করে মাত্র ১ শতাংশ ধনী। ফ্রান্সের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি এবং লুই ভিটনের প্রতিষ্ঠাতা বার্নার্ড আর্নোর ক্ষেত্রে দেখা গেছে যে তিনি কার্বন নিঃসরণে বিনিয়োগের পাশাপাশি ব্যক্তিগত খরচের কারণেও কার্বন নিঃসরণে অবদান রাখছেন। তিনি গড় ফরাসি নাগরিকের তুলনায় ১২৭০ গুণ বেশি কার্বন নির্গত করেন।

বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম প্রধান কারণ হল উচ্চ কার্বন নিঃসরণ। এর জন্য শিল্পোন্নত দেশগুলোকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা। বিভিন্ন গবেষণায় এটি নিশ্চিত করা হয়েছে। সম্প্রতি, ইউরোপীয় কমিশন (ইসি) এবং পিবিএল নেদারল্যান্ডস এনভায়রনমেন্টাল অ্যাসেসমেন্ট এজেন্সির যৌথ গবেষণা কেন্দ্রের যৌথ গবেষণায় বলা হয়েছে যে বিশ্বের দুটি বৃহত্তম অর্থনীতি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চীন, তারা বৈশ্বিক কার্বন নির্গমনের ৪০ শতাংশের জন্য যৌথভাবে দায়ী। একই সময়ে, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি এশিয়া ও ইউরোপের বৃহৎ অর্থনীতিগুলো কার্বন নিঃসরণে এগিয়ে রয়েছে।

দুর্ভাগ্যবশত আমাদের জন্য, পৃথিবীর তাপমাত্রা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। কার্বন নিঃসরণ ঠিক করার বিষয়ে মতপার্থক্য যত বেশি থাকবে, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি তত বেশি ফেইস করতে হবে। সেই ঝুঁকি এড়ানোর উপায় হল শিল্পোন্নত দেশগুলোকে এক টেবিলে নিয়ে আসা এবং ঐকমত্যে পৌঁছানো।

এই অঞ্চলগুলির মধ্যে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ বড় শহরগুলি রয়েছে। ১৫০ টিরও বেশি দেশের ১১,০০০ এরও বেশি বিজ্ঞানী সতর্ক করেছেন এবং বলেছেন যে আমরা যদি পরিবেশগত ইস্যুতে বর্তমান পথ পরিবর্তন না করি তবে মানব জাতির উপর ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে আসবে।

আরও পড়ুন

শুক্রাণুর ঘনত্ব কমে যেতে পারে মাত্রাতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহারে

ডেঙ্গু পরিস্থিতি রাজনৈতিক ব্যস্ততার ফাঁদে অবহেলিতঃ প্রকোপ মৃত্যু ও আক্রান্ত চলছেই

খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের বিষয় পর্যবেক্ষণ করছে যুক্তরাষ্ট্রঃ অবস্থান করছে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X