November 25, 2024
বিশ্বকাপে হতাশাজনক বাজে পারফরম্যান্সঃ সাকিব-পাপনদের পদত্যাগ চেয়ে আইনি নোটিশ

বিশ্বকাপে হতাশাজনক বাজে পারফরম্যান্সঃ সাকিব-পাপনদের পদত্যাগ চেয়ে আইনি নোটিশ

বিশ্বকাপে হতাশাজনক বাজে পারফরম্যান্সঃ সাকিব-পাপনদের পদত্যাগ চেয়ে আইনি নোটিশ

বিশ্বকাপে হতাশাজনক বাজে পারফরম্যান্সঃ সাকিব-পাপনদের পদত্যাগ চেয়ে আইনি নোটিশ

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন চৌধুরী এবং বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের (পুরুষ) অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের পদত্যাগ চেয়ে আইনি নোটিশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী খন্দকার হাসান শাহরিয়ার। রোববার (১২ নভেম্বর) রেজিস্ট্রি পোস্টের মাধ্যমে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের ঠিকানায় এই নোটিশ পাঠানো হয়।

এ প্রসঙ্গে খন্দকার হাসান শাহরিয়ার বলেন, আইসিসি পুরুষ বিশ্বকাপ ক্রিকেট ২০২৩-এর ব্যর্থতার দায়ভার গ্রহণ এবং সমগ্র জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার পর তাদের নিজ নিজ পদ থেকে পদত্যাগের জন্য আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। নোটিশে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে পুরো কোচিং স্টাফ ও নির্বাচক কমিটি বাতিল, আইসিসি পুরুষ ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০২৩-এর ব্যর্থতার কারণ খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন, নিজস্ব কোচ তৈরির কথা বলা হয়েছে। উন্নত প্রশিক্ষণ, আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার মতো অন্তত একই মানের উইকেটে ঘরোয়া লিগ আয়োজন, স্কুল বয়সভিত্তিক ক্রিকেট টুর্নামেন্ট ও প্রশিক্ষণের আয়োজন করার কথাও বলা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ক্রিকেট এখন বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা। কিন্তু আইসিসি পুরুষ ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০২৩ বাংলাদেশের জন্য একটি ব্যর্থ মিশন ছিল। আইসিসি ওয়ানডে সুপার লিগে তৃতীয় হয়ে বিশ্বকাপে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ। তেমনি অভিজ্ঞ ওপেনার তামিম ইকবালকে ছাড়াই শুরু হয়েছে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ মিশন। অবশ্য তিনি বাদ পড়েছিলেন, নাকি তিনি নিজেই  সরে গিয়েছিলেন, সেই বিতর্ককে একপাশে রেখে, এটা বলতেই হবে যে বাংলাদেশ জাতীয় পুরুষ ক্রিকেট দল বিশ্বকাপ মিশন শুরু করেছিল মহা বিতর্কে। তারপর দলটি সেমিফাইনাল খেলা আশা করেছিল। এরপর প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানকে হারিয়ে দারুণ শুরু করে বাংলাদেশ জাতীয় পুরুষ ক্রিকেট দল। ধর্মশালায় সেই ম্যাচের পরও বাংলাদেশের বিশ্বকাপ মিশন এমন বাজেভাবে শেষ হয়ে যাবে যা কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। ধর্মশালায় ইংল্যান্ডের কাছে পরের ম্যাচ হেরে যাওয়ার পর থেকে বাংলাদেশ জাতীয় পুরুষ ক্রিকেট দল তাদের একটি ম্যাচ ছাড়া সবকটি হেরেছে। সেই হারে আত্মসমর্পণের এমন হাওয়া ছিল যে মনে হচ্ছিল খেলার আগেই ফলাফল জানা হয়ে গেছে। যা সমগ্র বাংলাদেশের মানুষকে আঘাত করেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ জাতীয় পুরুষ ক্রিকেট দল ১৯৯৯ সাল থেকে মোট ৭টি বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করেছে। প্রথম বিশ্বকাপে দুটি জয় পেলেও পরের বিশ্বকাপে জয়ের রেকর্ড ছিল শূন্য।২০১৯ সালে ৯ ম্যাচের ৩টি জিতলেও ৭ নম্বরে থেকে আসর শেষ করে বাংলাদেশ জাতীয় পুরুষ ক্রিকেট দল। কিন্তু কখনো সেমিফাইনাল খেলার আশা করিনি। ব্যর্থতা এত বড় মনে হচ্ছে কারণ ইডেনে নামার আগে তা স্বীকার করলেন বাংলাদেশ জাতীয় পুরুষ ক্রিকেট দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন, এটাই কি বাংলাদেশের স্মৃতিতে সবচেয়ে বাজে বিশ্বকাপ? জবাবে সাকিব আল হাসান বলেন, ‘আপনি নির্দ্বিধায় বলতে পারেন, আমি দ্বিমত করব না। বাংলাদেশের স্মৃতিতে এটিই সবচেয়ে বাজে বিশ্বকাপ।

বলা হচ্ছে, বাংলাদেশ জাতীয় পুরুষ ক্রিকেট দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান তার দলের দুর্বল পারফরম্যান্সের কথা অকপটে স্বীকার করেছেন, যা অধিনায়ক হিসেবে তার ব্যর্থতাকে স্পষ্ট করে দিয়েছে। এ ছাড়া টুর্নামেন্টের মাঝপথে দল ছেড়ে মাঠের খেলার বাইরে অনুশীলন করতে দেশে এসেছিলেন তিনি! এর আগে খেলার সময় বিজ্ঞাপনের শুটিংয়ের জন্যও সমালোচিত হয়েছিলেন তিনি।  নোটিশে বলা হয়েছে, পুরো জাতি আপনার মতো একজন খেলোয়াড়ের কাছ থেকে আরও পেশাদারিত্ব এবং দায়িত্বশীল আচরণ আশা করে।

বলা হয়, বর্তমান ক্রিকেট বিশ্বে এমন কোনো ক্রিকেট বোর্ড খুঁজে পাওয়া যাবে না, যারা দেশের সেরা ওপেনারকে দল থেকে বাদ দিয়ে সেমিফাইনালে খেলার স্বপ্ন নিয়ে বিশ্বকাপ দল গঠন করেছে। যে ওপেনারকে স্বয়ং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ডেকে নিয়ে অবসর থেকে খেলায় ফিরিয়েছেন। বিশ্বকাপ শুরুর দুই মাস আগে দল ছেড়েছেন নিয়মিত অধিনায়ক তামিম ইকবাল। ওই ঘটনায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন এমপি ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন চৌধুরী বিশ্বকাপের কথা চিন্তা করে বাংলাদেশ দলের বৃহত্তর স্বার্থে সময়োপযোগী ও কার্যকর ভূমিকা পালনে ব্যর্থতার পরিচয় দেন।

নোটিশে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ জাতীয় পুরুষ ক্রিকেট দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান সাংবাদিকদের বলেন,’হ্যাঁ আমরা অনেক আন্ডার প্রিপেয়ার্ড ছিলাম’। এখন এসব অভিযোগ দিয়ে আসলে লাভ হবে না। তবে অবশ্যই প্রস্তুতি কম ছিল। তাহলে কেন জাতীয় দলের প্রধান কোচ, কোচিং স্টাফ, টিম ম্যানেজমেন্ট, নির্বাচক কমিটি এবং বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড ২০২৩ সালের আইসিসি পুরুষ ক্রিকেট বিশ্বকাপের সাফল্যের জন্য সঠিকভাবে প্রস্তুতি নিতে কার্যকর ভূমিকা পালন করেনি? ফলস্বরূপ, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন চৌধুরী আইসিসি পুরুষ ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০২৩ -এ বাংলাদেশ জাতীয় পুরুষ ক্রিকেট দলের ব্যর্থতার দায় এড়াতে পারেন না।

আইনি নোটিশে আইনজীবী খন্দকার হাসান শাহরিয়ার আরও বলেন, বাংলাদেশের অধিকাংশ ক্রিকেটার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য প্রয়োজনীয় মান ও দক্ষতার দিক থেকে পিছিয়ে রয়েছে। ঘরোয়া ক্রিকেটের কাঠামো এখনও প্রাচীনকালেই রয়ে গেছে। স্কুলভিত্তিক, বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্ট ও প্রশিক্ষণের অভাবে নতুন প্রতিভাবান ক্রিকেটার তৈরি হচ্ছে না। স্লো ধীরগতির উইকেটে খেলে বাংলাদেশ। আধুনিক কৌশল ও প্রযুক্তির চর্চা হয় না। অধিকাংশ ক্রিকেটার জাতীয় দলে আসে শেখার জন্য,  যেই জায়গাটা আসলে শেখার নয়; বরং এটি একটি পরীক্ষার স্থান। ক্রিকেট একটি দলগত খেলা হলেও, বাংলাদেশ জাতীয় পুরুষ ক্রিকেট দলকে দল গঠন ও একাদশ সাজাতে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত ইচ্ছা ও অনীহার জন্য চড়া মূল্য দিতে হয়েছে। …বিস্তারিত অর্থের আশায় বিদেশি লিগে খেলা এবং বিজ্ঞাপনে অংশ নিতেই বেশি আগ্রহী জাতীয় দলের শীর্ষ খেলোয়াড়রা। ফলে জাতীয় দলের প্রতি তাদের যথাযথ পারফরম্যান্স ও দায়বদ্ধতার অভাব পরিলক্ষিত হয়। কিন্তু বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড এ ব্যাপারে বরাবরই নীরব ভূমিকা পালন করেছে। দায় এড়াতে পারেন না বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন চৌধুরী ও অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।

আরও পড়ুন-৭১ বছরের টেস্ট রেকর্ড ভাঙলেন লঙ্কান স্পিনার প্রভাত জয়াসুরিয়া

1 Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X