Customize Consent Preferences

We use cookies to help you navigate efficiently and perform certain functions. You will find detailed information about all cookies under each consent category below.

The cookies that are categorized as "Necessary" are stored on your browser as they are essential for enabling the basic functionalities of the site. ... 

Always Active

Necessary cookies are required to enable the basic features of this site, such as providing secure log-in or adjusting your consent preferences. These cookies do not store any personally identifiable data.

No cookies to display.

Functional cookies help perform certain functionalities like sharing the content of the website on social media platforms, collecting feedback, and other third-party features.

No cookies to display.

Analytical cookies are used to understand how visitors interact with the website. These cookies help provide information on metrics such as the number of visitors, bounce rate, traffic source, etc.

No cookies to display.

Performance cookies are used to understand and analyze the key performance indexes of the website which helps in delivering a better user experience for the visitors.

No cookies to display.

Advertisement cookies are used to provide visitors with customized advertisements based on the pages you visited previously and to analyze the effectiveness of the ad campaigns.

No cookies to display.

March 31, 2025
শিশুকে মায়ের বুকের দুধ পান করানোঃ ইসলামিক দৃষ্টিভঙ্গি

শিশুকে মায়ের বুকের দুধ পান করানোঃ ইসলামিক দৃষ্টিভঙ্গি

শিশুকে মায়ের বুকের দুধ পান করানোঃ ইসলামিক দৃষ্টিভঙ্গি

শিশুকে মায়ের বুকের দুধ পান করানোঃ ইসলামিক দৃষ্টিভঙ্গি

শারীরিক সৌন্দর্য এবং সৌঠব ধরে রাখার ব্যর্থ আশায় অনেক মা স্তন্যদুগ্ধ থেকে বাচ্চার চিরন্তন অধিকারকে বঞ্চিত করে । ফলশ্রুতিতে দেখা যায় এসব মায়েরাই বেশিরভাগ স্তন্য-ক্যান্সার সহ বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। এবার আমরা জানবো ইসলাম এবং আধুনিক বিজ্ঞান মায়ের দুধ পান করানো সম্পর্কে কি বলে?

জাতিসংঘের দুটি সংস্থাসহ সরকারি উদ্যোগে প্রতি বছরই ১ থেকে ৭ আগস্ট বিশ্বের ১৭০টিরও বেশি দেশে সপ্তাহটি পালিত হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, মায়ের দুধ পান করে শিশু যেমন সুস্থ ও সবল হয়ে ওঠে, তেমনি মা নিজেও অনেক উপকৃত হয়।

শুধুমাত্র মায়ের দুধ পান করে প্রতি বছর ৮ লাখেরও বেশি শিশুর জীবন বাঁচানো সম্ভব  হবে। ছয় মাসের কম শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর বিকল্প নেই। বুকের দুধ খাওয়ালে মা ও শিশু উভয়েরই উপকার হয়। জন্মের ১ ঘণ্টার মধ্যে শিশুকে মায়ের দুধ খাওয়ালে মায়ের গর্ভফুল দ্রুত পড়ে, রক্তপাত সহজে বন্ধ হয়, ফলে মা রক্তস্বল্পতা থেকে রক্ষা পান। উর্বরতায় সাহায্য করে, স্তন ও জরায়ু ক্যান্সার এবং উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমায়। শিশুর সর্বোচ্চ শারীরিক বৃদ্ধি ও মানসিক বিকাশ নিশ্চিত করা, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা, ডায়রিয়ার ঝুঁকি এবং এর তীব্রতা কমানো, শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ ও কানের সংক্রমণ কমানো, দাঁত ও মাড়ি গঠনে সাহায্য করা সহ এর আরও অনেক সুবিধা রয়েছে।

মা যদি বুকের দুধ না খাওয়ান – নিউমোনিয়ার কারণে মৃত্যুর ঝুঁকি প্রায় ১৫গুণ বেড়ে যায়, ডায়রিয়া থেকে মৃত্যুর ঝুঁকি প্রায় ১১ গুণ বেড়ে যায়, অপুষ্টি ও অন্যান্য কারণে শিশুদের মৃত্যুর ঝুঁকি প্রায় ১৪ গুণ বেড়ে যায়, ডায়রিয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। জন্ডিস, চোখের সংক্রমণ এবং পরিপাকতন্ত্রের সংক্রমণ বৃদ্ধি পায়। শারীরিক বৃদ্ধি ও বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়। বয়সের তুলনায় অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি; দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি (ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, স্থূলতা)।

দুই বছর পর্যন্ত বুকের দুধ খাওয়ানো বছরে ৮২০০০০ শিশুর জীবন বাঁচাতে পারে। মায়েরাও বুকের দুধ খাওয়ানোর মাধ্যমে অনেক প্রাণঘাতী রোগ প্রতিরোধ করতে পারেন; এজন্য চিকিৎসকরা তাদের আরও উৎসাহিত করতে বলেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী, জন্মের প্রথম ঘণ্টার মধ্যে নবজাতককে বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। প্রথম ৬ মাস শিশু শুধু বুকের দুধ খাবে, এমনকি পানিও খাবে না। এর পরে, পরিপূরক খাবারের সাথে কমপক্ষে দুই বছর বয়স পর্যন্ত বুকের দুধ চালিয়ে যেতে হবে। এই বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে ১৯৯২ সাল থেকে আগস্টের প্রথম সপ্তাহে ‘বিশ্ব স্তন দুধ সপ্তাহ’ পালিত হয়ে আসছে।

কিন্তু এখনও বিশ্বের মাত্র ৪১ শতাংশ শিশু জন্মের পর প্রথম ছয় মাস একচেটিয়াভাবে বুকের দুধ পান করে। ওয়ার্ল্ড হেলথ অ্যাসেম্বলি ২০২৫ সালের মধ্যে এই হার ৫০ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। আর এখন আমাদের দেশে হাজার হাজার মা তাদের সৌন্দর্য ধরে রাখতে বুকের দুধের পরিবর্তে বাজারের কৃত্রিম দুধ পান করে। এতে ভালোর চেয়ে ক্ষতিই বেশি হচ্ছে। শিশুর ভবিষ্যৎ জীবন অন্ধকারের দিকে ধাবিত হচ্ছে। মায়ের দুধ শিশুদের জন্য সেরা খাদ্য ও পানীয়। শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার পাশাপাশি মায়ের দ্রুত আরোগ্য লাভের ক্ষেত্রে মায়ের বুকের দুধের কোনো বিকল্প নেই।

বুকের দুধ খাওয়ানোর বিষয়ে ইসলামিক বিধান: মায়ের বুকের দুধ শিশুর জন্য অপরিহার্য। কারণ মায়ের বুকের দুধে আল্লাহ প্রদত্ত প্রয়োজনীয় পুষ্টি ও উপাদান থাকে, যা শিশু সহজেই হজম করতে পারে এবং শিশুর শরীরকে সহজে বেড়ে উঠতে সাহায্য করে। তাই হজরত মুসা (আ.)-এর জন্মের পর আল্লাহ তায়ালা তাঁর মাকে নির্দেশ দেন, ‘আমি মুসার মায়ের অন্তরকে নির্দেশ দিয়েছিলাম তাকে দুধ পান করাতে। (সূরা কাসাস : আয়াত ৭)। জন্মের পর শিশুর জন্য সবচেয়ে ভালো খাবার হল মায়ের বুকের দুধ। আল্লাহ তায়ালা প্রত্যেক নবজাতক শিশুর জন্য মায়ের বুকের দুধ সৃষ্টি করেন। যা মৃদু মিষ্টি এবং উষ্ণ; যা নবজাতক শিশুদের নাজুক অবস্থার জন্য বিশেষ উপকারী।

নবজাতক শিশুকে মায়ের বুকের দুধ পান করতে উত্সাহিত করার জন্য, মহানবী (সা.)  বলেছেন, “রমজানে রোজা রাখার বাধ্যবাধকতা স্তন্যদানকারী এবং গর্ভবতী মহিলাদের থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। (আবু দাউদ, তিরমিজি, মিশকাত) শিশুদের মায়ের দুধ খাওয়ানোর গুরুত্ব, যা বর্তমান সময়ে চিকিৎসা বিজ্ঞান বলে, ইসলাম ১৫০০ বছর আগে ঘোষণা করেছে। আল্লাহ তায়ালা কুরআনে নবজাতক শিশুকে দুধ খাওয়ানোর জন্য সুস্পষ্ট নির্দেশনা ঘোষণা করেছেন।

আল্লাহ তায়ালা সূরা লোকমানের ১৪ নং আয়াতে বলেন, ‘আমি মানুষকে তার পিতামাতার সাথে সদ্ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছি। তার মা তার কষ্ট মেনে নিয়ে তাকে গর্ভে ধারণ করেন। অতঃপর তার দুধ ছাড়ানো হয় দুই বছরে।

অন্য আয়াতে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘মায়েরা তাদের সন্তানদের পূর্ণ দুই বছর দুধ পান করাবেন। (সূরা বাকারা: আয়াত ২৩৩ )।

কুরআন ও হাদীসের আলোচনা থেকে বোঝা যায় যে, জন্মের পর চান্দ্র মাসের হিসাব অনুযায়ী শিশুকে স্তন্যপান করানোর সময়কাল পূর্ণ দুই বছর।

শিশুর প্রয়োজনে এই সময় আরও ছয় মাস বাড়ানো যেতে পারে। আল্লাহ অন্য আয়াতে বলেন, ‘আর আমি মানুষকে তার মাতা-পিতার প্রতি সদয় ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছি। তার মা তাকে অতিকষ্টে গর্ভে ধারণ করেছে এবং অতি কষ্টে তাকে প্রসব করেছে। তার গর্ভধারণ ও দুধপান ছাড়ানোর সময় লাগে ত্রিশ মাস। (সুরা আহকাফ : আয়াত ১৫)।

মা ও শিশুর শারীরিক অসুস্থতার কথা বিবেচনা করে  বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে চিকিৎসা বিজ্ঞানও বলেছে নবজাতক শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানো থেকে বিরত থাকতে। অধিকন্তু, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমাদের সন্তানদের দেহপসরিণী(ব্যভিচারী মহিলা) এবং পাগল মহিলাদের দুধ পান করতে দিও না। দূরে থাক।’আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান জানে যে দেহপসরিণীর (ব্যভিচারী মহিলা) দুধ পান করে শিশুরা ‘হেপাটাইটিস বি’ এবং ‘এইডস’-এর মতো ভয়ানক ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে। তাই ইসলামে বিশেষ শিশুদের মায়ের বুকের দুধ পান করা থেকে বিরত রাখার কথাও বলা হয়েছে। সর্বোপরি, একটি শিশু যদি মায়ের বুকের দুধ পান করে তবে শিশু এবং মায়ের মধ্যে এমন একটি মানসিক বন্ধন তৈরি হয়, যা চিরন্তন।

মুসলিম উম্মাহর সকল শিশুর মায়েদের উচিত তাদের সন্তানদেরকে কোরানের নির্দেশ অনুযায়ী পূর্ণ দুই বছর বুকের দুধ খাওয়ানো। পূর্ণ দুই বছর বুকের দুধ খাওয়ানোর পর প্রয়োজনে শিশুকে অতিরিক্ত ছয় মাস দুধ দেওয়া যেতে পারে। পরিশেষে, মায়ের দুধ সর্বশক্তিমান আল্লাহর একটি বিশেষ নেয়ামত। কারণ অনেক মায়ের সন্তান হয়, কিন্তু শিশুর পান করার মতো পর্যাপ্ত দুধ থাকে না। এ ক্ষেত্রে মায়েদের আগে থেকেই পুষ্টিকর খাবার দিতে হবে। আজকের শিশু আগামী দিনের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ। আর ইসলামের দৃষ্টিতে মায়ের দুধ নবজাতক শিশুর জন্মগত অধিকার। এটি যাতে কোনও কারণে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।  মায়ের দুধ দানকে প্রচার ও সমর্থন করা অভিভাবকের দায়িত্ব।

আরও পড়ুন

নারী শিক্ষার পথিকৃৎ মহানবী (সা.)

ইসলামে হালাল উপার্জন

শিশুরা যাতে নিয়মিত বুকের দুধ পায় সেজন্য মায়েদের মধ্যে ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। মায়ের দুধের অনন্য ভূমিকা আজ বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। বর্তমানে, চিকিৎসা বিজ্ঞান বুকের দুধ খাওয়ানোকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে। মায়েরা এই বিষয়টি উপলব্ধি করলে ভালো হয়।

সবশেষে শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য মায়ের বুকের দুধ নিশ্চিত করতে হবে। এটি সন্তানের জন্য মায়ের একটি অধিকার বা অধিকার। বুকের দুধ খাওয়ানো শিশুদের মৃত্যুর হারও খুবই কম। আল্লাহ তায়ালা সকল মাকে তাদের সন্তানদের কুরআন ও হাদীসের বিধান অনুযায়ী খাওয়ানোর এবং সন্তানের যথাযথ যত্ন নেওয়ার মাধ্যমে আল্লাহর নির্দেশ মেনে চলার তাওফীক দান করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X