১০ বছর পর জনসম্মুখে জামায়াতের সভা
১০ বছর পর রাজধানীতে প্রকাশ্য কর্মসূচি পালন করেছে জামায়াতে ইসলামী। শনিবার (১০ জুন) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিশাল সমাবেশের মধ্য দিয়ে ১০ বছর পর উন্মুক্ত সমাবেশের অনুমতি পেয়েছে দলটি। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি রোধে জামায়াতের আমীর ড. শফিকুর রহমানসহ অন্যান্য জাতীয় নেতৃবৃন্দ ও উলামায়ে কেরামের মুক্তি এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার দাবিতে রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর দক্ষিণ এক সভার আয়োজন করে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর মো. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, জামায়াতে ইসলামী নিজে থেকে কোনো সংঘাত বা সংঘাত সৃষ্টি করে না। জামায়াত সন্ত্রাস, নাশকতা, হামলা, বিশৃঙ্খলা, সংঘর্ষে বিশ্বাস করে না। জামায়াতে ইসলামী শান্তিতে বিশ্বাসী। এভাবেই তারা দল গঠন করেছে। আমি বিএনপি, আওয়ামী লীগ এবং অন্যান্য দলের লোকদের অনুরোধ করছি জামায়াত সম্পর্কে পড়ুন এবং জানুন, দয়া করে জামায়াত সম্পর্কে জানুন। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দেশের তৃতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দল।
জামায়াতের এই নেতা বলেন, অনেকেই দেশকে সোনার দেশ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেই মানুষটার অভাব ছিল। এজন্য আমরা দেশে ছাত্র সংগঠন গড়ে তুলেছি। আপনাদের কাছে আমার প্রশ্ন, আমাদের ছেলেরা কি কখনো কোনো মেয়ের ঘোমটা টেনেছে? আপ্নিকি কি বলতে পারবেন? তাদের হাতে মদ দেখেছেন? তারা দেশের স্মার্ট তরুণ। এটা কি আকাশ থেকে এসেছে নাকি জন্ম থেকেই? না, এটা স্মার্ট তরুণদের তৈরির কারখানা, সেই কারখানা বা দলকে বলা হয় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
ডিএমপিকে ধন্যবাদ জানিয়ে পুলিশ প্রশাসনের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি আপনারা জুলুম করতে চান না। আপনারা অত্যাচার করতে বাধ্য। আমাদের সাহায্য করুন, তাদের বিদায় করে দেশের অবস্থা পরিবর্তন করুন।
সাবেক সংসদ সদস্য ও জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আজাদ বলেন, শাপলা চত্বরের ভাষণের পর আমরা মুখে তালা দিলেও এখন তালা খুলে দেওয়া হয়েছে। আর মুখ বন্ধ হবে না। একটি বক্তব্যের জন্য আমি তিন মাস জেল খাটলাম। হামলা-নিপীড়ন করে এদেশের মানুষের কণ্ঠ স্তব্ধ করা যাবে না। সভা করার জন্য অনুমতির প্রয়োজন হলে আমরা এই আইন মানি না। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন, অবিলম্বে ক্ষমতা ত্যাগ করুন এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করুন। তা না হলে এদেশের জনগণ গণতান্ত্রিক পন্থায় প্রতিবাদ করে পদত্যাগে বাধ্য করবে।
জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম বলেছেন, সরকার সব সময় জামায়াতে ইসলামীকে সন্ত্রাসী দল হিসেবে প্রচার করে। আজকে কী দেখলেন, জামায়াতে ইসলামী একটি সুশৃঙ্খল দল। কোনো কর্মসূচিতে জামায়াতে ইসলামীর কোনো কর্মী একটি ঢিলও ছুড়েনি। এগুলো আওয়ামী লীগ নেতাদের কাজ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, এ সরকারের আমলে ৫ শতাধিক কর্মী শহীদ হয়েছেন, ১০ লাখের বেশি কর্মীকে কারাগারে রাখা হয়েছে। আমাদের থামাতে চেয়েছিল। আগামীতে যৌথ আন্দোলন শুরু হবে। এই সরকারের পতন ঘটাতে রাজপথে নামতে হবে। অবিলম্বে নিখোঁজ নেতাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করতে হবে।
র্যালি শেষে কর্তব্যরত পুলিশ ও সাংবাদিকদের ফুল দিয়ে সংবর্ধনা দেন ছাত্রশিবির।
1 Comment