রক্তস্বল্পতা ও অপুষ্টিতে ভুগছে ১০০ কোটির বেশি কিশোরী ও নারী: ইউনিসেফ
সারা দুমিয়ায়ই বেড়ে চলেছে অপুষ্টি ও রক্তস্বল্পতায় ভুক্তভোগী নারীর সংখ্যা। প্রচলিত লিঙ্গ বৈষম্যের কারণে এ সংকট আরও তীব্র হচ্ছে। ফলে কিশোরী ও নারীদের মধ্যে পুষ্টির অভাব আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। বৈশ্বিক নানা সংকট নারীদের পুষ্টিকর খাবার প্রাপ্তির সুযোগকে ব্যাহত করে চলেছে। ফলস্বরুপ, খাদ্য নিরাপত্তায় লিঙ্গ ব্যবধান আরও প্রকট হচ্ছে। ২০২১ সালে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় থাকা নারীর সংখ্যা ছিল পুরুষের চেয়ে ১২ কোটি ৬০ লাখ বেশি, যেখানে ২০১৯ সালে নারীর সংখ্যা ছিল পুরুষের চেয়ে ৪ কোটি ৯০ লাখ বেশি, অর্থাৎ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার ক্ষেত্রে লিঙ্গ ব্যবধান প্রায় দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে।
খাদ্য ও পুষ্টি সংকটে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ১২টি দেশে অপুষ্টিতে ভোগা গর্ভবতী ও মায়ের দুধ পান করানো কিশোরী ও নারীর সংখ্যা বেড়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ইউনিসেফ।
ইউনিসেফের প্রতিবেদন বলছে, ২০২০ সালের এ সংখ্যা ছিল ৫৫ লাখ। এখন ২৫ শতংশ বেড়ে হয়েছে ৬৯ লাখ।
আন্তর্জাতিক নারী দিবসের আগে প্রকাশিত ‘অপুষ্টিতে আক্রান্ত এবং উপেক্ষিত কিশোরী ও নারীদের মধ্যে বৈশ্বিক পুষ্টি সংকট’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ সব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতিবেদনের তথ্যানুসারে, ১০০ কোটির বেশি কিশোরী ও নারী অপুষ্টি ও রক্তস্বল্পতায় ভুগছে। আর এটি তাদের স্বাস্থ্যসহ জীবনের সামগ্রিক ক্ষেত্রে ভয়াবহ পরিণতি বয়ে আনছে।
অপর্যাপ্ত পুষ্টির কারণে কিশোরী ও নারীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাচ্ছে, পাশাপাশি তাদের মেধার দুর্বল বিকাশ এবং গর্ভকালীন ও প্রসবকালীন জটিলতাসহ নানান ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিচ্ছে।
ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল বলেন, বৈশ্বিক ক্ষুধা সংকট লাখ লাখ মা ও তাদের সন্তানকে মারাত্মক অপুষ্টির দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় থেকে জরুরি পদক্ষেপ না নেওয়া হলে আগামী কয়েক প্রজন্মকে এর পরিণতি ভোগ করতে হতে পারে।
দক্ষিণ এশিয়া ও সাব-সাহারান আফ্রিকা কিশোরী ও নারীদের পুষ্টি সংকটের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে । বৈশ্বিকভাবে ওজন স্বল্পতায় ভোগা প্রতি ৩ জনের মধ্যে ২ জন এবং রক্তস্বল্পতায় ভোগা প্রতি ৫ জন কিশোরী ও নারীর মধ্যে ৩ জনই এ দুই এলাকার। ইউনিসেফ জানায়, দরিদ্রদের মধ্যে এ হার ধনীদের তুলনায় দ্বিগুণ।