সন্তানের অভিভাবক হিসেবে মাকে স্বীকৃতি দিয়েছেন আদালত
এখন থেকে সন্তানের অভিভাবক হিসেবে মাকেও স্বীকৃতি দিয়েছেন হাইকোর্ট। পিতৃহীন সন্তানের অভিভাবক হবেন মা। শিক্ষার ক্ষেত্রে মাকেও আইনগত অভিভাবক হিসেবে যুক্ত করা হবে।
বিচারপতি নাইমা হায়দার বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন। এ রায়কে ঐতিহাসিক রায় বলছেন আইনজীবীরা।
উল্লেখ্য, ২০০৭ সালের এপ্রিল মাসে বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় অংশগ্রহণের আগে শিক্ষার্থী তথ্য ফরম এ অত্যাবশ্যকীয়ভাবে বাবার নাম পূরণ করতে না পারার কারণে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, রাজশাহী ঠাকুরগাঁও জেলার এক তরুণীকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের প্রবেশপত্র দিতে অস্বীকৃতি জানায়।
যদিও মা ও সন্তানকে কোনরূপ স্বীকৃতি না দিয়ে বাবার চলে যাওয়ার পর উক্ত তরুণী তার মায়ের একার আদর স্নেহে বড় হয়েছিলেন।
পরবর্তীতে এ ঘটনার যথাযথ অনুসন্ধানের উপর প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে এবং সন্তানের অভিভাবক হিসেবে মা এর স্বীকৃতি প্রতিষ্ঠার দাবীতে ২০০৯ সালের ২ আগস্ট ৩টি মানবাধিকার সংগঠন বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ এবং নারীপক্ষ যৌথভাবে জনস্বার্থে রিট দায়ের করে।
রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ওই বছরের ৩ আগস্ট বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহম্মেদ এবং বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ মানবাধিকার, সমতার পরিপন্থী ও বিশেষভাবে শিক্ষার অধিকারে প্রবেশগম্যতার বাধাস্বরূপ বিদ্যমান বৈষম্যমূলক এ বিধানকে কেন আইনের পরিপন্থী এবং অসাংবিধানিক হিসেবে ঘোষণা করা হবে না- মর্মে রুল জারি করেন।
একইসঙ্গে, বর্তমানে কোন কোন শিক্ষা বোর্ডে এস এসসি পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন কার্ড পাওয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর বাবা ও মা উভয়ের নাম সম্পর্কিত তথ্য বাধ্যতামূলকভাবে উল্লেখ করতে হয় তার একটি তালিকা এবং যে সকল যোগ্য শিক্ষার্থী তাদের বাবার পরিচয় উল্লেখ করতে অপারগ তাদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে কি ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়, সে সম্পর্কে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়।
পরে ২০২১ সালের ৬ জুন ব্লাস্ট আবেদনকারীদের পক্ষে একটি সম্পূরক হলফনামা আদালতে দাখিল করে। রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে হাইকোর্ট রায় ঘোষণার জন্য ২৪ জানুয়ারিকে দিন ধার্য করে এ আদেশ দেন।