November 10, 2024
কোরআনের বাণী দিয়ে নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদ আফগান সাহসী তরুণীর

কোরআনের বাণী দিয়ে নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদ আফগান সাহসী তরুণীর

কোরআনের বাণী দিয়ে নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদ আফগান সাহসী তরুণীর

কোরআনের বাণী দিয়ে নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদ আফগান সাহসী তরুণীর

ইসলাম ধর্মের ধর্মগ্রন্থ পবিত্র কোরআনে বর্ণিত আরবি শব্দ ‘ইকরা’র বাংলা অর্থ হচ্ছে ‘পড়’। আফগানিস্তানের ১৮ বছর বয়সী এক তরুণী কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে একা একটি প্ল্যাকার্ডে এই একটিমাত্র শব্দ লিখে মেয়েদের সেখানে পড়ার ওপর তালেবানের নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

আফগানিস্তানের তালেবান কর্তৃপক্ষ কয়েক দিন আগে নারীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়া নিষিদ্ধ করেছে। এর আগে মেয়েদের জন্য মাধ্যমিক স্কুলের দরজা বন্ধ করা হয়েছিল।

দেশের নারীসমাজ ছাড়াও জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক মহল এর নিন্দা করেছে।

নিরাপত্তাজনিত কারণে পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক কাবুলের ওই প্রতিবাদী তরুণী নিজের অবস্থান সম্পর্কে বলেন, ‘আমি কোনো ভয় পাই না। কারণ আমি বিশ্বাস করি, আমার চাওয়াটা ন্যায্য।’

ইসলাম ধর্মের শিক্ষা হচ্ছে, মহানবী (সা.)-কে আল্লাহ প্রথম যে শব্দ শিখিয়েছিলেন তা হচ্ছে ‘ইকরা’। এর মাধ্যমে পাঠের প্রতি তাগিদ দেওয়া হয়েছিল। বিষয়টি উল্লেখ করে আদিলা ছদ্মনামের ওই তরুণী বলেন, ‘আল্লাহতায়ালা আমাদের শেখার অধিকার দিয়েছেন। আমাদের আল্লাহকে ভয় পাওয়া প্রয়োজন, তালেবানকে নয়। তারা আমাদের অধিকার হরণ করতে চায়।’

আদিলার প্রত্যাশা হল , আরো অনেক আফগান নারী উচ্চশিক্ষার অধিকারের জন্য তাঁর সঙ্গে শামিল হবে। তালেবান কর্তৃপক্ষের প্রতিরোধের মুখে নিজের প্রতিবাদের সময় অবিচল থাকার কথা জানান তিনি। আদিলা বলেন, ‘প্রথমে তারা (তালেবান) আমাকে ততটা গুরুত্ব দেয়নি। কিন্তু পরে একজন অস্ত্রধারী আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে চলে যেতে বলে। ’ তখন ওই তালেবান সদস্যকে উদ্দেশ করে প্ল্যাকার্ডটি দেখিয়ে আদিলা বলেন, ‘আমি জানতে চাই, আপনি কি এই লেখা পড়তে পারেন না? আপনি কি আল্লাহর বাণী পড়তে পারেন না?’

আদিলা জানান, বাধার মুখে মাত্র ১৫ মিনিট অবস্থান করতে পেরেছিলেন তিনি। কারণ অস্ত্রধারী তালেবান সদস্য রেগে গিয়ে তাঁকে হুমকি দিতে থাকেন।

২০২১ সালে, মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো সামরিক জোট আফগানিস্তান ছেড়ে যাওয়ার পর তালেবান দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতা দখল করে। শুরুতে, তালেবান কর্তৃপক্ষ বলেছিল যে তারা প্রথম সময়ের মতো কঠোরতা আরোপ করবে না। তবে কিছু সময়ের জন্য একের পর এক নারী অধিকার সীমিত হচ্ছে। অতি সম্প্রতি উচ্চশিক্ষার সুযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর এনজিওগুলোতে নারীদের কাজ করা থেকে বিরত রাখা হয়েছে। এতে সাহায্য সংস্থার কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি অনেক পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা ভয়াবহ হয়ে ওঠার আশঙ্কা রয়েছে।

বর্তমানে নারীরা কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি অনুষদের প্রধান। তালেবানদের নিষেধাজ্ঞার পর থেকে তাদের ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।

আদিলা জানান, বিক্ষোভ চলাকালে এক যুবক তাকে সমর্থন করে ঘটনার ভিডিও ধারণ করছিল। তালেবান সদস্যরা তাকে মারধর করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X