কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা যেসব খাবার খেলে মিলবে মুক্তি
কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা যেসব খাবার খেলে মিলবে মুক্তি

কোষ্ঠকাঠিন্য হল একটি অস্বাভাবিক শারীরিক অবস্থা যখন একজন ব্যক্তি সহজে মলত্যাগ করতে পারেন না, সাধারণত প্রতি এক থেকে দুই দিন অন্তর অন্তরও মল শুষ্ক এবং শক্ত থাকে, সেই অবস্থাকে কোষ্ঠকাঠিন্য বলা হয়। সাধারণত, ডাক্তারদের মতে, পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার গ্রহণ করার পরেও যদি কারো সপ্তাহে তিনবারের কম মলত্যাগ হয়, তাহলে এই অবস্থাকে কোষ্ঠকাঠিন্য বলা হয়। এই অবস্থায়, দীর্ঘক্ষণ টয়লেটে বসে থাকার পরেও মল পরিষ্কার হয় না।
কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগা মানুষের সংখ্যা মোটেও কম নয়। এই সমস্যার পিছনে আরও অনেক কারণ রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে পানিশূন্যতা, খাদ্যতালিকাগত ফাইবারের অভাব, মানসিক চাপ, দুগ্ধজাত দ্রব্যের অতিরিক্ত ব্যবহার ইত্যাদি। অনেকেই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে প্রতিদিন ওষুধ খান। তবে, ডাক্তারদের মতে, খাদ্যতালিকায় কিছু খাবার যোগ করলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। ডাক্তাররা কিছু ফল, শাকসবজি এবং বীজ খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন, যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করবে।
পাকা কলা
কলা ফাইবার সমৃদ্ধ এবং দীর্ঘদিন ধরে কোষ্ঠকাঠিন্যের ঘরোয়া প্রতিকার হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। পাকা কলা ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোমের উন্নতি করে এবং ক্ষুদ্রান্ত্রে উপস্থিত মাইক্রোভিলিকে আরও ভালোভাবে কাজ করতে দেয়। এটি হজমে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। হয়।
পাকা পেঁপে
পাকা পেঁপেতে থাকে একই সাথে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার এবং পানি থাকে। যা হজমে সাহায্য করে। পেঁপে যেকোনো জটিল খাবার সহজেই হজম করতে পারে।
কমলা
কমলা ফাইবার এবং ভিটামিন সি-এর অন্যতম সেরা উৎস। এই সাইট্রাস ফলের একটি নির্দিষ্ট রেচক প্রভাব রয়েছে। জুস করার পরিবর্তে পুরো কমলা খেলে আপনাকে আরও ফাইবার পাওয়া যাবে। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে কমলায় উপস্থিত ন্যারিনজেনিন যৌগ কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগছেন এমন ব্যক্তিদের সাহায্য করতে পারে।
ডুমুর
ডুমুর বা আরবি ত্বীন ফল ফাইবারের অন্যতম উৎস। এটি মলত্যাগ সহজ করে। এতে ফিসিন নামক একটি এনজাইমও রয়েছে, যা রেচক প্রভাবে অবদান রাখতে পারে। ডুমুর শুকিয়ে বা রাতারাতি ভিজিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
আপেল
আপেল ডায়রিয়ার পাশাপাশি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেও সাহায্য করতে পারে। খোসা সহ আপেল খান। এই বাইরের অংশে অদ্রবণীয় ফাইবার থাকে এবং অন্ত্রের গতি বৃদ্ধি করতে পারে। আপেলে দ্রবণীয় ফাইবার, বিশেষ করে পেকটিন, একটি খাদ্যতালিকাগত ফাইবারও থাকে।
নাশপাতি
নাশপাতিতে কেবল ফাইবারই নয়, ফ্রুক্টোজ এবং সরবিটলও থাকে। ফলটি রেচক প্রভাব ফেলতে পারে এবং পেটের সমস্যা থেকেও মুক্তি দিতে পারে। সরবিটল মল নরম করতে সাহায্য করে এবং স্ট্রেইনিংয়ের মাধ্যমে মলত্যাগ সহজ করে তোলে।
কিউই
এই ফলে বিভিন্ন ধরণের ভিটামিন এবং খনিজ রয়েছে। এছাড়াও, প্রতিটি কিউইতে কমপক্ষে আড়াই গ্রাম ফাইবার থাকে। তা ছাড়া, এতে প্রচুর পরিমাণেপানিও থাকে। সব মিলিয়ে, এই ফলটি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে যথেষ্ট সক্ষম।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করবে এমন সবজি:
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে ফাইবার সমৃদ্ধ খাবারের বিকল্প নেই। আর সবজি ফাইবারের সেরা উৎস। আপনার প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় তাজা মৌসুমি সবজি অন্তর্ভুক্ত করুন।
সবজির মধ্যে
লাউ, পেঁপে, চাল কুমড়া, মিষ্টি কুমড়া,তরমুজ এবংসালাদ অন্তর্ভুক্ত করুন। শসা এবং কাঁচা পেঁপের সালাদ খুবই উপকারী। শসায় ৯৪ শতাংশ পানি থাকে, যা মল নরম করতে সাহায্য করে।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করবে এমন বীজ
চিয়া বীজ
পানিতে ভিজিয়ে খাওয়া হলে এটি একটি জেল তৈরি করে, যা অন্ত্রের কার্যকারিতা উন্নত করে। এক গ্লাস পানিতে ১-২ চা চামচ চিয়া বীজ ১৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখলে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে।
তিলের বীজ
তিলের বীজে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড অন্ত্রকে তৈলাক্ত করে, যা মলত্যাগ সহজ করে। এটি সিরিয়াল, সালাদ বা দইয়ের সাথে মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
ইসোবগুল
এটি একটি প্রাকৃতিক রেচক হিসেবে কাজ করে এবং অন্ত্রের গতিশীলতা বাড়ায়। এক গ্লাস পানিতে ১-২ চা চামচ ইসোবগুলের ভুসি মিশিয়ে পান করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে।
মেথি বীজ
হজমশক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। রাতভর পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে সেই পানি পান করলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হবে।
কোষ্ঠকাঠিন্য করতে নিম্নের কাজগুলোও করা যায়
- পর্যাপ্ত পানি পান ।
- নিয়মিত ব্যায়াম এবং হাঁটা ।
- অতিরিক্ত মাংস এড়িয়ে চলা এবং প্রচুর শাকসবজি খাওয়া।
- আদা চা বা পুদিনা চা পান ।
- প্রিবায়োটিক খাবার খাওয়ার অভ্যাস করা ,যেমন দই লাচ্ছি মানসম্পন্ন আচার ইত্যাদি।
প্রাকৃতিক উপাদান এবং স্বাস্থ্যকর অভ্যাসের মাধ্যমে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা সহজেই দূর করা সম্ভব।তবে অতিরিক্ত সমস্যায় অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
স্বাস্থ্য এর আরো খবর

বিশ্বের সবচেয়ে ছোট পেসমেকার আবিষ্কার এটি কাজ করবে যেভাবে / বিশ্বের সবচেয়ে ছোট পেসমেকার আবিষ্কার এটি কাজ করবে যেভাবে

ব্রাউন সুগার বা বাদামি চিনি খাওয়া কি ভালো

মাথাব্যথা মানেই কি দৃষ্টির সমস্যা

মেরুদণ্ডের গড়ন বদলে দিতে পারে যে বাতরোগ
