ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বড় আন্দোলন হচ্ছে
অসংখ্য কুকর্মের কারিগর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা বড় ধরনের আন্দোলন গড়ে তুলতে পারে। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকেই ছাত্র সংগঠনটিকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ আখ্যা দিয়ে নিষিদ্ধের দাবি উঠে আসছে। এরই মধ্যে বিভিন্ন মহল থেকে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করতে সরকারকে আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছে।
আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সম্প্রতি বিভিন্ন জায়গায় বক্তব্য দিতে গিয়ে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে এক সপ্তাহের মধ্যে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ ঘোষণা করে নিষিদ্ধ করতে হবে।
মাহমুদুর রহমানের আল্টিমেটাম শেষ হচ্ছে আগামীকাল সোমবার। এরপর থেকে তার নেতৃত্বে এ দাবিতে মাঠে নামতে পারেন অনেকে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দেশের প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নিয়ন্ত্রণে ছিল।
সরকারের বিভিন্ন এজেন্ডা বাস্তবায়নে ছাত্রলীগ অন্য কোনো ছাত্র সংগঠনকে মাঠের রাজনীতিতে অংশ নিতে দেয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। সর্বশেষ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্রলীগের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালানো হয়। এরপর থেকে ছাত্ররা সংগঠনটিকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ বলে আখ্যায়িত করে।
এদিকে ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করার আন্দোলন চট্টগ্রাম থেকে শুরু হবে বলে জানা গেছে।
জুলাইয়ের গণআন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী বৈষম্য বিরোধী শিক্ষার্থীদের প্লাটফর্ম অন্তর্বর্তী সরকারকে আগামীকাল সোমবার পর্যন্ত সময় দিয়েছে। অন্যথায় আগামী মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) চট্টগ্রাম থেকে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী রাসেল আহমেদ বলেন, ‘৩৬ জুলাই পর্যন্ত প্রায় প্রতিদিনই ছাত্রদের ওপর নৃশংস হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ। এই সংগঠনের কর্মীরা চট্টগ্রাম, ফেনী ও কুমিল্লায় ২০ জনের বেশি ছাত্রকে হত্যা করেছে। তাই এটি একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। আমরা চট্টগ্রাম থেকে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করতে আন্দোলন শুরুর ঘোষণা দিয়েছি। রাসেল আহমেদ আরও বলেন, আওয়ামী লীগ ও তাদের জোটের সব সংগঠনকে নিষিদ্ধের দাবিতে আন্দোলন শুরু করা হবে।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতন হয়। এরপর থেকে ছাত্রলীগকে সেভাবে প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। সারাদেশে ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হলেও কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী হাসান ইনান আত্মগোপনে চলে যান। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতকে আটক করেছে পুলিশ।
অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল মন্তব্য করেছেন, বাংলাদেশে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করার জন্য শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি সচেতন নাগরিক সমাজের এই দাবি একটি জনপ্রিয় দাবিতে পরিণত হয়েছে।
শনিবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে স্মরণসভায় অংশ নিয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা একটি জনপ্রিয় দাবিতে পরিণত হয়েছে। আমরা তৎকালীন ফ্যাসিস্ট সরকারের মতো কোনো কিছুকে নিষিদ্ধ করব না। বাংলাদেশে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করার আইন রয়েছে। আমরা সেই আইনের আওতায় নিষিদ্ধ করার প্রত্যাশা রাখি।’