November 21, 2024
এতটা নোংরা কথা ভারতের কোনো প্রধানমন্ত্রী আগে বলেননি: মোদীর দিকে ইঙ্গিত করলেন মনমোহন

এতটা নোংরা কথা ভারতের কোনো প্রধানমন্ত্রী আগে বলেননি: মোদীর দিকে ইঙ্গিত করলেন মনমোহন

এতটা নোংরা কথা ভারতের কোনো প্রধানমন্ত্রী আগে বলেননি: মোদীর দিকে ইঙ্গিত করলেন মনমোহন

এতটা নোংরা কথা ভারতের কোনো প্রধানমন্ত্রী আগে বলেননি: মোদীর দিকে ইঙ্গিত করলেন মনমোহন

এবার লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দীর্ঘদিন ধরে ‘হিন্দু-মুসলিম’ বাজাচ্ছেন। বাংলায় এসেও তিনি বারবার বলেছেন, এ রাজ্যে হিন্দুরা দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হয়েছে। মুসলমানরা ছিল মনমোহন সিংয়ের নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস সরকারের চোখের মণি। সকল সুযোগ সুবিধায় মুসলমানদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। মোদির আক্রমণের জবাব দিলেন স্বল্পভাষী প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন। ইউপিএ সরকারের দুই বারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি কখনো কোনো সম্প্রদায়কে বিভক্ত হতে দেখেননি। কোনো ধর্মকে অন্য ধর্মের থেকে আলাদা করে দেখা হয়নি ।

শেষ রাউন্ডের ভোটের আগে দেশবাসীর উদ্দেশে লেখা চিঠিতে বৃহস্পতিবার মনমোহন বলেছেন, এবারের নির্বাচনী প্রচার তিনি খুব ভালোভাবে দেখছেন। মোদীজি সারাক্ষণ জঘন্য বিদ্বেষমূলক বক্তব্য দিয়ে আসছেন। যা খুবই বিভাজনের রাজনীতি। মোদিজি দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী যিনি এই  পদটিকে  ছোট করে ফেল্লেন । তিনি প্রধানমন্ত্রীর পদের গুরুত্বকে ক্ষুন্ন করেছেন।

ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দিকে ইঙ্গিত করে বলেছেন যে কোনো পূর্ববর্তী প্রধানমন্ত্রী দেশের কোনো বিশেষ অংশ, সম্প্রদায় বা বিরোধী দলকে টার্গেট করার জন্য এই ধরনের নোংরা, অসংসদীয় এবং নিম্নমানের ভাষা ব্যবহার করেননি। এবং দেশের একটি ধর্মীয় সম্প্রদায় থেকে অন্য ধর্মীয় সম্প্রদায়ের সাথে আলাদা আচরণ করা বিজেপির ‘বিশেষ অধিকার’।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। বৃহস্পতিবার লোকসভা নির্বাচনের শেষ পর্বের আগে দেশবাসীকে উদ্দেশ্য করে এক চিঠিতে মনমোহন সিং এসব কথা বলেন।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অভিযোগ, মনমোহন সিং প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে বলেছিলেন, সম্পত্তিতে প্রথম অধিকার পাবে মুসলমানরা। কিন্তু কংগ্রেস সেই দাবি নাকচ করে দেয়। কিন্তু মোদির মন্তব্য নিয়ে মনমোহন সিং দীর্ঘ সপ্তাহ পরেও মুখ খুলছিলেন না। অবশেষে, তিনি তার মুখ খুললেন এবং বললেন, “সম্প্রদায়ের মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টি করা বা তাদের ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখা কখনই ঠিক হবে না।”

মনমোহন সিং বলেন, ‘এই নির্বাচনী প্রচারণার সময় আমি খুব মনোযোগ দিয়ে রাজনৈতিক আলোচনা দেখছি। মোদি জঘন্য বিদ্বেষমূলক বক্তব্য দিয়েছেন, যা একেবারেই বিভেদ সৃষ্টিকারী। মোদিই প্রথম প্রধানমন্ত্রী যিনি নিজের অবস্থানকে অবমাননা করেছেন এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের গুরুত্ব কমিয়েছেন।’

কংগ্রেস সরকারের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তারা আমার সম্পর্কে কিছু ভুল বক্তব্যও দিয়েছে। আমি আমার জীবনে এক সম্প্রদায়কে অন্য সম্প্রদায় থেকে আলাদা দেখিনি। এটা বিজেপির “বিশেষ অধিকার” এবং অনুশীলন।’

শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়ে মনমোহন সিং আরও বলেন, ‘আমি পাঞ্জাবের প্রতিটি ভোটারকে উন্নয়ন ও সমন্বিত অগ্রগতির জন্য ভোট দেওয়ার আবেদন করছি। আমি তরুণদের আহ্বান জানাই সাবধানে ভোট দিতে এবং ভবিষ্যতের জন্য ভোট দিতে। শুধুমাত্র কংগ্রেসই একটি প্রগতিশীল ভবিষ্যতের গ্যারান্টি দিতে পারে, যেখানে গণতন্ত্র ও সংবিধান সুরক্ষিত থাকবে।”

এর আগে, কংগ্রেস গত মাসের প্রথম দিকে জাতীয় ‘জাত সমীক্ষার’ অংশ হিসাবে একটি ‘অর্থনৈতিক এবং প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন’-এর পরিকল্পনা উন্মোচন করেছিল। দলের নির্বাচনী ইশতেহার ও তাদের সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিংয়ের একটি মন্তব্য উল্লেখ করে মোদি বলেন, “কংগ্রেস বলছে যে তারা আমাদের মা-বোনের সোনা গণনা করবে এবং সেই সম্পদ সবার মধ্যে বিতরণ করবে।” মনমোহন সিংয়ের সরকার বলেছিল যে সমস্ত সম্পদের প্রথম অধিকার মুসলমানদের…’

রাজস্থানের বাঁশবাড়ায় এক জনসভায় মোদি বলেন, ‘…কাকে (সম্পদ) বিতরণ করা হবে? যাদের বেশি সন্তান রয়েছে তাদের?  মুসলিমদের উল্লেখ করে তাদের মধ্যে বিতরণ করা হবে, অনুপ্রবেশকারীদের মধ্যে বিতরণ করা হবে। আপনার কষ্টার্জিত অর্থ কি হ্যাকারদের কাছে যাওয়া উচিত?

শনিবার লোকসভা ভোটের সপ্তম ও শেষ দফার ভোট। তার আগে মোদির আগে প্রধানমন্ত্রী থাকা মনমোহন সিং দেশবাসীর উদ্দেশে একটি খোলা চিঠি লিখেছিলেন। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘এই নির্বাচনী প্রচারণা খুব ভালোভাবে দেখছিলাম। মোদীজি সারাক্ষণ জঘন্য ঘৃণামূলক বক্তব্য দিয়ে চলেছেন। যা খুবই বিভাজনের রাজনীতি।

মৃদুভাষী প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী আরও লিখেছেন, ‘তিনি যেভাবে কথা বলেছেন তা অসংসদীয় এবং অবমাননাকর। তার বক্তব্যের ভাষা ছিল একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী বা বিরোধীদের লক্ষ্য করে। আমার সম্পর্কেও ভুল উপস্থাপন করা হয়েছে। আমি আমার জীবনে কখনও একটি সম্প্রদায়কে অন্য সম্প্রদায় থেকে আলাদা দেখিনি।  বিজেপি এতে অভ্যস্ত।

মনমোহন দেশবাসীকে শান্তি ও সম্প্রীতি ফিরিয়ে আনার আবেদন জানিয়েছেন। কিভাবে? চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘কেবল কংগ্রেসই দেশের অগ্রগতি এবং প্রগতিশীল ভবিষ্যতের গ্যারান্টি দিতে পারে। কংগ্রেস সংবিধান অক্ষত রাখতে বদ্ধপরিকর। এই মুহুর্তে এই সংঘাতময় শক্তির হাত থেকে দেশকে রক্ষা করা দেশের প্রতিটি মানুষের কর্তব্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X