টাকার বিছানায় ঘুমাচ্ছেনভাইরাল নেতা
প্রধানমন্ত্রীর আবাসন প্রকল্প এবং গ্রামীণ চাকরি প্রকল্পের সাথে যুক্ত একটি বড় মাপের দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত নেতা এখন টাকার বিছানায় ঘুমাচ্ছেন। এমন ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে তোলপাড় শুরু হয়। সবার জানার আগ্রহ কে এই নেতা যিনি দেশের মানুষের এত টাকা মেরে দিয়েছেন।
জানা গেছে, বেঞ্জামিন বসুমাতারী। ভারতের আসামে ইউনাইটেড পিপলস পার্টি লিবারেল (ইউপিপিএল) এর একজন নেতা। তিনি প্রধানমন্ত্রীর আবাস প্রকল্প এবং গ্রামীণ কর্মসংস্থান প্রকল্প সংক্রান্ত একটি বড় দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্ত। অদ্ভুত ঘটনা ঘটিয়ে ফের আলোচনায় এসেছেন এই নেতা।
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে বসুমাতরীর একটি ছবি। আর তাতেই তোলপাড় ভারত জুড়ে। ভাইরাল ছবিতে দেখা যাচ্ছে আসামের ওদালগুড়ি জেলার ভৈরাগুড়িতে গ্রাম পরিষদ উন্নয়ন কমিটির (ভিসিডিসি) চেয়ারম্যান টাকার বিছানায় ঘুমাচ্ছেন। তার উপর ৫০০ টাকার নোটের স্তূপ।
ছবিটি ইতিমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। এদিকে তার দল ইউপিপিএল বসুমাতরীর এমন কর্মকাণ্ডের দায় নিতে অস্বীকার করেছে। বোডোল্যান্ড-ভিত্তিক পার্টি প্রধান এবং বোডোল্যান্ড টেরিটোরিয়াল কাউন্সিল (বিটিসি) প্রধান নির্বাহী সদস্য প্রমোদ বোরো বুধবার সকালে স্পষ্ট করেছেন যে বেঞ্জামিন বসুমাতারি আর দলের সাথে যুক্ত নন। কয়েক মাস আগে তাকে বহিষ্কার করা হয়।
এক বিবৃতিতে প্রমোদ বোরো বলেছেন, ‘বেঞ্জামিন বসুমাতারির একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। আমরা স্পষ্ট করতে চাই যে বেঞ্জামিন বসুমাতারী আর ইউপিপিএল এর সাথে যুক্ত নন। ১০ জানুয়ারি তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয় এবং তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি সমস্ত মিডিয়া এবং সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারকারীদের অনুরোধ করছি ইউপিপিএলের সাথে বেঞ্জামিন বসুমাতারীকে যুক্ত করা থেকে বিরত থাকতে। তার কর্মের দায় সম্পূর্ণ তার নিজের। তার ব্যক্তিগত কোনো কাজের জন্য দল দায়ী নয়।
বিরোধীরা অবশ্য ইউপিপিএল প্রধানের এমন বক্তব্য মানতে নারাজ। তাদের দাবি, বেঞ্জামিন বসুমাতারী এখনও ইউপিপিএলের সঙ্গে যুক্ত।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুসারে, বোডোল্যান্ড নেতা প্রধানমন্ত্রীর আবাসন প্রকল্প এবং গ্রামীণ চাকরি প্রকল্পের সাথে যুক্ত একটি বড় মাপের দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্ত। ওদালগুড়ি ডেভেলপমেন্ট জোনের বসুমাতারি ভিসিডিসির অধীনে পিএমএওয়াই এবং মনরেগা প্রকল্পের অধীনে দরিদ্র সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
ভারতে যেখানে টাকার অভাবে স্বল্প ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে কৃষকরা আত্মহত্যা করছেন। সেখানেই চলছে টাকার উপরে ঘুম।
আত্মহত্যাকারী কৃষকদের মাথার খুলি ও হাড় নিয়ে বিক্ষোভ
ভারতে প্রতি বছর শত শত কৃষক ঋণ শোধ করতে না পারায় আত্মহত্যা করে। তারা প্রথমে সুদে অল্প টাকায় চাষ করে। ভালো ফসল হলে সব টাকা শোধ করে দেবেন। কিন্তু তাদের কষ্টার্জিত পণ্যের দাম না পাওয়ায় অনেক কৃষককে আরও ঋণগ্রস্ত করেছে। পরে এই ঋণ শোধ করতে না পেরে আত্মহত্যা করেন।
জানা যায়, ঋণ পরিশোধ করতে না পেরে আত্মহত্যা করা কৃষকদের মাথার খুলি ও হাড় নিয়ে বিক্ষোভ করেন শত শত কৃষক।
গতকাল মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) তামিলনাড়ুর প্রায় ২০০ কৃষক ভারতের নয়াদিল্লির যন্তর মন্তরে এই অভিনব কায়দায় প্রতিবাদ করেন। দেশটির সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে এ তথ্য জানিয়েছে।
বিক্ষোভ চলাকালে তারা প্রধানমন্ত্রী মোদির বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও ফসলের দাম বাড়ানো হয়নি। ঋণ মওকুফের দাবি করা হলেও তা করা হয়নি। তাই ঋণের বোঝা সইতে না পেরে আত্মহত্যা করেছে শত শত কৃষক।
বক্তারা আরও বলেন, তারা কোনো দলের কাছে সাহায্য চাচ্ছেন না, সাধারণ কৃষক হিসেবে। দাবি না মানলে মোদির বিরুদ্ধে লোকসভা নির্বাচনে লড়বেন বলেও হুমকি দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। একই দাবিতে এর আগেও এ স্থানে বিক্ষোভ করেছেন ঋণগ্রস্ত কৃষকরা।
প্রসঙ্গত, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০১৯ সালের নির্বাচনী প্রচারণার সময় শস্যের দাম দ্বিগুণ করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। এরপর তিনি ঘোষণা করেন শস্যের দাম দ্বিগুণ করে নদীগুলোকে পরস্পর সংযুক্ত করা হবে।