November 23, 2024
৫ মাসে বিএনপির ২৬০০০ এরও বেশি নেতাকর্মী গ্রেপ্তার

৫ মাসে বিএনপির ২৬০০০ এরও বেশি নেতাকর্মী গ্রেপ্তার

৫ মাসে বিএনপির ২৬০০০ এরও বেশি নেতাকর্মী গ্রেপ্তার

৫ মাসে বিএনপির ২৬০০০ এরও বেশি নেতাকর্মী গ্রেপ্তার

দলটির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, এই ডিসেম্বরসহ গত ৫ মাসে সারাদেশে ২৬ হাজারের বেশি বিএনপি নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

আর ৫ মাসে ৮১টি মামলায় দলের ৯ নেতাকর্মীর মৃত্যুদণ্ড এবং ১২ জনের বেশি নেতাকর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ সময়ে বিভিন্ন হামলা ও কারাবরণে দলের ২৬ নেতাকর্মী মারা যান।

আজ (মঙ্গলবার) সন্ধ্যায় ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ তথ্য জানান।

রিজভী দাবি করেন, গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের ১৭৫ জনের বেশি নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। এ সময় সারাদেশে বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে ৪টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় ৩৬৫ নেতাকর্মীর নাম ও অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

রিজভী আরও বলেন, ১৫ নভেম্বর আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ‘একতরফা’ তফসিল ঘোষণার পর বিএনপির ১১ হাজার ৪৪৫ জনের বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ সময় মামলা হয়েছে ৪১৩টি। এসব মামলায় ৪৪ হাজার ৬৬৮ নেতাকর্মীকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। এ সময় বিভিন্ন হামলা ও কারাগারে দলের ১৩ নেতাকর্মী মারা যান।

রিজভীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ২৮ ও ২৯ জুলাই পর্যন্ত সারাদেশে দলটির ২৬ হাজার ৪৪১ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ সময়ে ১০৮৪টির বেশি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় ৯৭ হাজার ৩৪৬ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। আর এই ৫ মাসে বিভিন্ন হামলা ও কারাগারে এক সাংবাদিকসহ দলের ২৬ নেতাকর্মী মারা গেছেন। ৮১টি মামলায় ৯ জনের মৃত্যুদণ্ড এবং ১ হাজার ২৬৫ জনের বেশি নেতাকর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

বর্তমানে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, আলতাফ হোসেন, মোহাম্মদ শাহজাহানসহ শতাধিক কেন্দ্রীয় নেতা কারাগারে রয়েছেন।

জানুয়ারিতে বাংলাদেশের নির্বাচনের দিন ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার আওয়ামী লীগ দল টানা চতুর্থ মেয়াদে ক্ষমতায় আসার জন্য ‘প্রধান বিরোধী’ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর বিরুদ্ধে তাদের নৃশংস দমন-পীড়ন জোরদার করেছে। বাংলাদেশে খুব কম লোকই বিশ্বাস করে যে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু বা গণতান্ত্রিক হবে। বিএনপি বলেছে, যতদিন হাসিনা দায়িত্বে থাকবেন, ততদিন তারা নির্বাচনে অংশ নেবে না।

অন্যদিকে শুক্রবার (১০ নভেম্বর) যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনীতি নিয়ে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

কয়েক মাস ধরে বিরোধীদের হয়রানি সত্ত্বেও, ২৮শে অক্টোবর শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে ঢাকায় বিএনপির একটি সমাবেশ সরকারি দমন-পীড়নকে প্ররোচিত করেছিল, প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। সমাবেশের আগের দিনগুলোতে বিএনপির শতাধিক নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই দিন বিএনপি সমর্থকরা রাস্তায় নামলে পুলিশের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের লাঠিসোঁটা, লোহার রড, ছুরিসহ বিভিন্ন অস্ত্র নিয়ে সমাবেশে হামলা করতে দেখা যায়। সমাবেশের দিন সহিংসতায় বিএনপির এক কর্মী, একজন পুলিশ কর্মকর্তা ও একজন সাংবাদিকসহ অন্তত তিনজন নিহত হন।

বিএনপি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত বিএনপি ও এর সদস্য সংগঠনের ৫ লাখের বেশি নেতা-কর্মী-সমর্থকের বিরুদ্ধে ১৩৮ হাজারের বেশি মামলা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দমন-পীড়ন ও আওয়ামী লীগের হামলায় প্রায় দুই কোটি মানুষ উদ্বাস্তু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। দলটি বলেছে, ওইসব মানুষ ফেরারি জীবন যাপন করছেন।

এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের নথিভুক্ত করা ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট জাস্টিস প্রজেক্টের মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান বলেন, বিরোধীদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘন পদ্ধতিগত। যার মধ্যে রয়েছে বলপূর্বক গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা, নির্যাতন। বাংলাদেশে যতবারই নির্বাচন হয়, বিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য বিরোধী দলের নেতাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয় এবং মিথ্যা ফৌজদারি মামলা দিয়ে নির্বিচারে আটক করা হয়। ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে, বিরোধীদের হয়রানি এবং ব্যাপক ভোট কারচুপির অভিযোগ ছিল। সেই নির্বাচনকে ‘অগণতান্ত্রিক’ বলে ব্যাপকভাবে নিন্দা করা হয়। বেশিরভাগ মানুষ এখন মনে করে যে জানুয়ারী ২০২৪  একই রকম দৃশ্য দেখতে হবে নিশ্চিত ।

ব্রিটিশ হাইকমিশনার অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান এবং সহিংসতা বন্ধ এবং অবাধ, সুষ্ঠু ও শেখ হাসিনার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে চাপ দেওয়ার চেষ্টা করছেন।

তারা বলছেন, শেখ হাসিনার দমনমূলক পন্থা বিএনপির আন্দোলনে শক্তি জোগাচ্ছে, কারণ হাসিনার সরকার এখন দুর্বল অর্থনীতি এবং ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতির মুখে জনগণের প্রতিবাদের মুখোমুখি। এটাও সত্য যে ২৮ অক্টোবরের সমাবেশে রাজনৈতিক কর্মীদের পাশাপাশি দরিদ্র শ্রমিকরাও অংশ নিয়েছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X