বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীদের হাত-পা ভেঙ্গে ফেলার নির্দেশ দেন নৌকার প্রার্থী এমপি আ ক ম বাহাউদ্দিন
কুমিল্লা-৬ (আদর্শ সদর) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আ ক ম বাহাউদ্দিন বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মীদের কোনো প্রার্থীর পক্ষে গেলে হাত-পা ভেঙ্গে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন।
সোমবার কুমিল্লা নগরের ৩নং ওয়ার্ডের পিটিআই স্কুল মাঠে নির্বাচনী সভায় আ ক ম বাহাউদ্দিন ওই নির্দেশ দেন বলে রিটার্নিং অফিসারের কাছে অভিযোগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য আনজুম সুলতানা।
অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আজ নির্বাচনী তদন্ত কমিটির চেয়ারম্যান সিরাজ উদ্দিন ইকবাল নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়ে নৌকার প্রার্থী আ ক ম বাহাউদ্দিনকে চিঠি দিয়েছেন। তাকে ২৪ ডিসেম্বর বেলা ১১টায় ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে তদন্ত কমিটির অস্থায়ী অফিসে নিজেকে বা তার উপযুক্ত প্রতিনিধির মাধ্যমে ব্যাখ্যা করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ।
সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিনের বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। বক্তৃতায় তিনি বলেন, ‘যদি কোনো বিএনপি এবং জামায়াতের কর্মীকে কোনো প্রার্থীর পক্ষে পাওয়া যায়, তার হাত–ঠ্যাং ভেঙে দিবেন আপনারা। আমি আ ক ম বাহাউদ্দিন আপনাদের সাথে আছি। আজ ভয়ের কোনো কারণ নেই। ৭ তারিখে উত্সবমুখর পরিবেশে ভোট দিতে যাবে আমার কুমিল্লার মানুষ। আমরা উত্সবমুখর পরিবেশে ভোট দিয়ে আমাদের গণতন্ত্র রক্ষা করব, আমাদের উন্নয়নকে রক্ষা করব। ৭ তারিখ ভোট, বিএনপি–ওয়ালারা ভোট করত না। কেন? ফেল করবে। আর কোনো কারণ আছেনি। এই গত ১৫ বছরে আমি আমার একটা স্কুল নেই, যেখানে কাজ করিনি। আমার নির্বাচনী এলাকার যত স্কুল আছে, যত কলেজ আছে, যত মাদ্রাসা আছে; একটা স্কুল, কলেজ মাদ্রাসা নেই যেখানে আমার কাজ হয়নি। একটা মসজিদ নাই যেখানে আমি টাকা দেই নাই—একবার, দুইবার, তিনবার। আজকে যখন আমি শহরে বের হই। আমি নিজেও চিন্তা করি কীভাবে সম্ভব, এত কাজ করা, কীভাবে? একভাবেই শুধু সম্ভব, আমি আপনাদেরকে ভালোবাসি। সেই সকাল থেকে আরম্ভ হয় আমার কাজ। রাত্র ৮টা, ৯টা, ১০টা পর্যন্ত আমি মানুষের কাজ করি।’
রিটার্নিং অফিসার ও কুমিল্লা জেলা প্রশাসক খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি তার (একেএম বাহাউদ্দিন) কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে।
কুমিল্লা-৬ (আদর্শ সদর) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আ ক ম বাহাউদ্দিন বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মীদের কোনো প্রার্থীর পক্ষে গেলে হাত-পা ভাঙার নির্দেশ দিয়েছেন।
সোমবার কুমিল্লা নগরের ৩নং ওয়ার্ডের পিটিআই স্কুল মাঠে নির্বাচনী সভায় তিনি ওই নির্দেশ দেন বলে রিটার্নিং অফিসারের কাছে অভিযোগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য আনজুম সুলতানা।
সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিনের বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। বক্তৃতায় তিনি বলেন, ‘বিএনপি ও জামায়াতের কোনো কর্মীকে কোনো প্রার্থীর পক্ষে পাওয়া গেলে তার হাত ভেঙ্গে দেবেন। তোমার সাথে আমি বাহাউদ্দিন’ ।
রিটার্নিং অফিসার ও কুমিল্লা জেলা প্রশাসক খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি তার (একেএম বাহাউদ্দিন) কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে।
উল্লেখ্য, প্রচারণার শুরুতেই ৮টি স্থানে স্বতন্ত্র-নৌকা সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
বিএনপি-বিহীন নির্বাচনে ভোটারদের আকৃষ্ট করতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অবাধে দাঁড়ানোর সুযোগ দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। তবে প্রতীক পাওয়ার পর প্রচারণার শুরুতেই আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। গত সোমবার রাত থেকে গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত অন্তত আটটি নির্বাচনী এলাকায় হামলা সংঘর্ষ হয়েছে। প্রতিটি ঘটনায় স্বতন্ত্র প্রার্থীরা আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সমর্থকদের দায়ী করেছেন।
এ ছাড়া প্রতীক বরাদ্দের পর প্রচারণার দ্বিতীয় দিনে গতকাল দেশের বিভিন্ন স্থানে আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে। নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আবদুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মিছিল করেছেন। এ সময় তার অনুসারীরা শতাধিক মোটরসাইকেল নিয়ে মিছিলে অংশ নেন। এতে যান চলাচল ব্যাহত হয়। চট্টগ্রাম নগরীর পাঠানটুলী ওয়ার্ডের ব্যস্ততম সড়কে জনসভা করেছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী এম এ লতিফ। সেখানে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
ভোট দুই সপ্তাহেরও বেশি বাকি। নির্বাচনী প্রচারণার চূড়ান্ত পর্যায়ে উত্তেজনা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকদের। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর অবস্থানে থাকবে বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগ নেতারা।
গতকাল যশোর, জয়পুরহাট, পাবনা, জামালপুর, কুষ্টিয়া, নাটোর, টাঙ্গাইল ও ঢাকার সাভারে আওয়ামী লীগ দলীয় ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা হামলা ও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন।