November 21, 2024
সরকারের পতন নিশ্চিত করতে কঠোর ও চূড়ান্ত আন্দোলনের পথে বিএনপি

সরকারের পতন নিশ্চিত করতে কঠোর ও চূড়ান্ত আন্দোলনের পথে বিএনপি

সরকারের পতন নিশ্চিত করতে কঠোর ও চূড়ান্ত আন্দোলনের পথে বিএনপি

সরকারের পতন নিশ্চিত করতে কঠোর ও চূড়ান্ত আন্দোলনের পথে বিএনপি

বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচনের সময় যত ঘনিয়েছ আসছে ততই বিএনপির আন্দোলন তীব্রতর বলে মনে হচ্ছে । এবং সরকারও তার অবস্থান থেকে নড়াচড়া দিলেও সড়ছেনা । তাই দেশের সকলের জ্ঞাতার্থে আজকের এই লেখা।

  • সর্বোচ্চ শক্তি নিয়ে মাঠে নামার ও থাকার নির্দেশ।
  • হরতাল অবরোধ ঘেরাও এর মত কঠিন কর্মসূচি আসতে পারে ।
  • অশান্ত হয়ে উঠতে পারে তামাম বাংলাদেশ।
  • ডু অর ডাই ফর্মুলায় চলছে চূড়ান্ত আন্দোলনের নির্দেশনাও।

ক্রমেই সরকার পতনের আন্দোলনের গতি বাড়াচ্ছে বিএনপি। আগামী অক্টোবর থেকে চূড়ান্ত আন্দোলনের সব প্রস্তুতি শুরু করছে দলটি। তৃণমূল থেকে সর্বস্তরে সরকারবিরোধী আন্দোলনে সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখার জোরালো বার্তা দেওয়া হয়েছে। দলের ‘চেইন অব কমান্ড’ ঠিক রেখে সার্বিক প্রস্তুতি চলছে। এরই মধ্যে দলটির ঘোষিত ১৫ দিনের কর্মসূচি বাস্তবায়নে ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে। গঠন করা হয়েছে একাধিক সাংগঠনিক টিম । প্রতিদিন জেলা-উপজেলা ভিত্তিক সভা, প্রস্তুতি সভা, পরিকল্পনা ও দিকনির্দেশনামূলক কার্যক্রম চলছে। কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে ভৈরব বাসস্ট্যান্ড থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার হয়ে সিলেট পর্যন্ত রোডমার্চ অনুষ্ঠিত হবে।

ঢাকার প্রবেশমুখে অবস্থান কর্মসূচি দেয়ার  পর সবকিছু গুছিয়ে মাঠে নামার কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিরোধী দলগুলো। বিএনপির ঘোষিত ১৫ দিনের কর্মসূচি ছাড়াও গণতন্ত্র ফোরাম একযোগে ঢাকা কেন্দ্রিক চার দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে, ১২ দলীয় জোট পাঁচ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে, এলডিপি চার দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এবং গণঅধিকার পরিষদ (নূর) পাঁচ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।

বিএনপির কয়েকজন শীর্ষ নেতা বলেন, চূড়ান্ত আন্দোলনের প্রথম পর্বে শান্তিপূর্ণ ও ঐতিহ্যবাহী কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। তারা এ মঞ্চের কর্মসূচি থেকে সরকারের মনোভাব বোঝার চেষ্টা করবেন। দাবি মানা না হলে বা সরকার কঠোর হলে দ্বিতীয় পর্বে তাদের  কর্মসূচিও  কঠোর হবে। এ পর্যায়ে নীতিনির্ধারকরা হরতাল-অবরোধের মতো বিভিন্ন নামে কর্মসূচি প্রস্তাব করেছেন। আর সেটা হবে ‘ডু অর ডাই’ আন্দোলন।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এদেশে আন্দোলনের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। অতীতে যেমন অনেক স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন হয়েছে, ১৫ বছর ধরে তারা এই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছে। আন্দোলন কখন কোন দিকে মোড় নেবে তা রাজপথই  বলে দেবে। জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোনো সরকার টিকে থাকতে পারেনি। এই সরকারও টিকতে পারবে না।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ভৈরব থেকে শুরু হয়ে সিলেটে পৌঁছে তিনটি ধারার মধ্য দিয়ে রোডমার্চ শুরু  হয় । এতে নেতৃত্ব দেবন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। এ ছাড়া কর্মসূচি বাস্তবায়ন দলের প্রধান উপদেষ্টা দলের ভাইস চেয়ারম্যান ড. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাবিব-উন-নবী খান সোহেলকে দলনেতা করা হয়েছে।

আগামী শনিবার বরিশাল বিভাগে আয়োজিত রোডমার্চ সকাল ৯টায় বরিশাল শহর থেকে শুরু হয়ে ঝালকাঠি হয়ে পিরোজপুরে গিয়ে র‌্যালির মাধ্যমে শেষ হবে। এ কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেবেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ও বেগম সেলিমা রহমান। অন্যদিকে সেলিমা রহমানকে বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান উপদেষ্টা এবং দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হারুন ও রশিদকে দলনেতা করা হয়েছে। ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমেদ, এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী ও যুগ্ম মহাসচিব মুজিবুর রহমান সরোয়ারকে পরামর্শক  করা  হয়েছে।

আগামী মঙ্গলবার খুলনা বিভাগীয় রোডমার্চের নেতৃত্ব দেবেন স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। প্রধান উপদেষ্টার ভূমিকায় থাকবেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এবং দলনেতা হিসেবে থাকবেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু। আগামী ১ অক্টোবর ময়মনসিংহ থেকে কিশোরগঞ্জ পর্যন্ত রোডমার্চের নেতৃত্ব দেবেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান ও নজরুল ইসলাম খান। এখানে প্রধান উপদেষ্টা নজরুল ইসলাম খান এবং দলের যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালকে দলনেতা করা হয়েছে। ৩ অক্টোবর কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত রোডমার্চের নেতৃত্ব দেবেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ কমিটিতে প্রধান উপদেষ্টা করা হয়েছে স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে। দলের ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহানকে দলনেতা করা হয়েছে।

সাংগঠনিক দলের প্রতিটি কমিটির সদস্যরা হলেন সংশ্লিষ্ট বিভাগের ভাইস চেয়ারম্যান, উপদেষ্টা ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, কার্যনির্বাহী সদস্য, অঙ্গ সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং এলাকার সাবেক সংসদ সদস্যরা। ওই বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদককে সমন্বয়ক করা হয়েছে। সমন্বয়কারী সম্পাদকদের টিম কো-অর্ডিনেটর করা হয়েছে।

বিএনপি নেতারা জানান, শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালনে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে দলের নেতাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এমনকি ক্ষমতাসীন দলের কারও উস্কানিতে পা না দেওয়ার জন্যও বিশেষ বার্তা দেওয়া হয়েছে। তবে কেন্দ্রীয়ভাবে কর্মসূচি ঘোষণার পর থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে গ্রেফতার অভিযান শুরু হয়েছে। রাতে বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চলছে। এই  আতঙ্কের সাথে  সমানতালে চলছে হামলা ও মামলা। এত কিছুর পরও তাদের আন্দোলন কর্মসূচি সফল হবে বলে জানিয়েছেন দায়িত্বশীল নেতারা।

আরও পড়ুন

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে এক রাতেই আ.লীগকে শেষ করে দেবে: ভীত-সন্ত্রস্ত ক্ষোভে ওবায়দুল কাদের

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হুঁশিয়ারিঃ বিএনপি বেশি বাড়াবাড়ি করলে খালেদা জিয়াকে আবারও জেলে পাঠিয়ে দেওয়া হবে

সূত্র জানায়, আন্দোলনের প্রথম ধাপে লক্ষ্য অর্জনে ৩ অক্টোবরের পর চূড়ান্ত আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়ে একযোগে মাঠে নামার ঘোষণা দিতে পারে বিএনপি। আর সেই আন্দোলনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে এবারের রোডমার্চ, সমাবেশের মতো কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে। এসব কর্মসূচির সঙ্গে জনসম্পৃক্ততা বাড়ানোর কৌশলের পাশাপাশি তৃণমূল নেতাকর্মীদের সক্রিয় করার উদ্যোগ রয়েছে। যাতে কর্মসূচির শেষ পর্বে সর্বোচ্চ শক্তি নিয়ে রাজপথে আপনার ভূমিকা পালন করতে পারেন। এ জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে সব নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। যেখানেই বাধা-বিপত্তি সেখানেই প্রতিরোধের ‘ফর্মুলায়’ নেতাকর্মীদের প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে।

1 Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X