March 25, 2025
আমেরিকার প্রতি ইরানের পাল্টা হুঁশিয়ারি

আমেরিকার প্রতি ইরানের পাল্টা হুঁশিয়ারি

আমেরিকার প্রতি ইরানের পাল্টা হুঁশিয়ারি

আমেরিকার প্রতি ইরানের পাল্টা হুঁশিয়ারি

“২০১৮ সালে, তার প্রথম মেয়াদে, রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প একতরফাভাবে ২০১৫ সালের ইরান পারমাণবিক চুক্তি থেকে  যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেন। তিনি তেহরানের উপর পুনরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন।  যুক্তরাষ্ট্র প্রত্যাহারের পর এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ইরান চুক্তি মেনে চলে। কিন্তু তারপর থেকে তারা ধীরে ধীরে তাদের প্রতিশ্রুতি থেকে সরে এসেছে। ইরান দাবি করে যে, চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী অন্যান্য দেশগুলিও তেহরানের স্বার্থ রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে।তারপরে বাইডেন ও ইরান সম্পর্ক মোটামুটি ভালোভাবেই কেটেছিল। এখন আবার ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকেই পুরানো বৈরিতা আবারো জেগে উঠেছে”।

হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ বলেছেন, আমেরিকা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির ‘সম্পূর্ণ নির্মূল’ চায়। একই সাথে তিনি ইরানকে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ‘এটা ছেড়ে দাও, নাহলে তোমাকে পরিণতি ভোগ করতে হবে’।

এর জবাবে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন যে, ইরান যেকোনো আগ্রাসন মোকাবেলায় ১০০ শতাংশ প্রস্তুত এবং ‘আমি নিশ্চিত যে কেউ ইরানে আক্রমণ করার কথা ভাববেও না’।

সোমবার ইসলামিক রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির একটি অনুষ্ঠানে যোগদানের সময় তিনি এই মন্তব্য করেন।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মতে, ‘ইরানের প্রস্তুতি অত্যন্ত উচ্চ স্তরে, ১০০ শতাংশ। আমি নিশ্চিত যে কেউ এই দেশটিতে আক্রমণ করার কথা ভাববেও না। কারণ তারা পরিণতি জানে। আমাদের সশস্ত্র বাহিনী, চিকিৎসা ও প্যারামেডিক্যাল বাহিনী, সরকার এবং জনগণের ক্ষমতা সবই প্রস্তুত।’

ট্রাম্পের চিঠি সম্পর্কে তিনি বলেন, “সর্বোচ্চ নিষেধাজ্ঞা এবং হুমকির চাপে ইরান কখনই আমেরিকার সাথে সরাসরি আলোচনায় বসবে না।”

আব্বাস আরাঘচি জোর দিয়ে বলেন, “প্রতিদিন যেসব নীতি এবং অভিযোগ উত্থাপিত হচ্ছে, আমরা সেসব নীতি এবং অভিযোগের সাথে সরাসরি কোনও আলোচনায় বসব না। তবে, পরোক্ষ আলোচনার দরজা খোলা আছে।”

এর আগে, রবিবার এক সাক্ষাৎকারে তিনি ট্রাম্পের চিঠি সম্পর্কে বলেছিলেন, “কিছু পরিবর্তন না হলে আমেরিকার সাথে আলোচনা আর সম্ভব নয়।”

তার মন্তব্য এমন এক সময়ে এসেছে যখন তেহরান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছ থেকে একটি চিঠি পেয়েছে। যেখানে তেহরানের সাথে সরাসরি আলোচনার আহ্বান জানানো হয়েছে।

তবে, তেহরান স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, “কোনও হুমকি এবং চাপের মুখে ইরান সরাসরি আলোচনায় বসবে না এবং যদি কোনও সামরিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়, তবে তার চূড়ান্ত প্রতিক্রিয়া জানানো হবে।”

এই বিষয়ে, ইরানের শীর্ষ কূটনীতিক সোমবারও বলেছেন যে, ইরান তার শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে রাশিয়া, চীন এবং ইউরোপীয় দেশগুলির সাথে পরোক্ষ আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।

ইরান মার্কিন হুমকিতে ভীত নয়, পারমাণবিক কর্মকর্তার সতর্কবাণী

হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির “সম্পূর্ণ নির্মূল” চায়। তিনি ইরানকে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, “এটা ছেড়ে দিন, নাহলে পরিণতি ভোগ করতে হবে।”

এর জবাবে, ইরানের পারমাণবিক শক্তি সংস্থার (AEOI) মুখপাত্র এবং উপ-প্রধান বেহরুজ কামালভান্দি বলেছেন, “ইরান পশ্চিমা চাপের কাছে মাথা নত করবে না এবং ইরান ইউএস  হুমকিতে ভয় পায় না।”

বেহরুজ কামালভান্দির মতে, ইরান তার অধিকার রক্ষায় দৃঢ় এবং অবিচল। তবে, যদি তার অধিকারকে সম্মান করা হয়, তাহলে দেশটি জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অফ অ্যাকশন (JCPOA) প্রতিশ্রুতিতে ফিরে যেতে প্রস্তুত।

কামালভান্দি আরও উল্লেখ করেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র একতরফাভাবে চুক্তি থেকে সরে আসার পর ইরান তার কিছু পারমাণবিক প্রতিশ্রুতি স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছিল।

তিনি বলেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র প্রত্যাহারের এক বছর পর ইরান এই পদক্ষেপ নিয়েছে। যখন দেশটি নিশ্চিত ছিল যে, পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে না।

ইরানের পারমাণবিক শক্তি সংস্থার উপ-প্রধান পুনরায় নিশ্চিত করেছেন যে, যদি ইরানের অধিকার সংরক্ষণ করা হয়, তাহলে দেশটি তার প্রতিশ্রুতিতে ফিরে যেতে প্রস্তুত।

ইরানের বিরুদ্ধে “সমস্যাজনক পারমাণবিক কর্মকাণ্ড” পরিচালনার অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন যে, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি কঠোর পরিদর্শনের আওতায় পড়েছে এবং বিশ্বের অন্য কোনও দেশ এই ধরনের পরিদর্শনের আওতায় পড়ে না।

ইরানের অধিকার সমুন্নত রাখার দৃঢ় সংকল্পের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এই চাপগুলি অবশ্যই দেশের জন্য কিছু ক্ষতি বয়ে আনবে, তবে শেষ পর্যন্ত আমরাই বিজয়ী হব।”

আরও জানতে

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X