গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতি ট্রাম্পের ‘পূর্ণ সমর্থন’
ইস্রায়েল গাজায় আবারও আক্রমণ শুরু করেছে। গত তিন দিনে ৭০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। যাদের মধ্যে ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু। ইসরায়েলের এই আকস্মিক আক্রমণ বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় তুলেছে, তবুও হোয়াইট হাউস জানিয়েছে যে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এর প্রতি পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।
এখানে উল্লেখ করা দরকার যে, দায়িত্ব গ্রহণের আগে ট্রাম্প বলেছিলেন যে, তিনি রাষ্ট্রপতির শপথ গ্রহণের পর গাজায় যুদ্ধ শেষ করবেন। তবে শপথ গ্রহণের দুই মাসেরও কম সময়ের মধ্যেই ট্রাম্পের সুর বদলে গেছে। নারী ও শিশু নির্বিশেষে গাজায় মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধির মধ্যে হোয়াইট হাউস তেল আবিবের প্রতি ট্রাম্পের পূর্ণ সমর্থন ঘোষণা করেছে।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত কয়েকদিনে ইসরায়েলি হামলায় প্রায় ৭০০ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন, যার মধ্যে কমপক্ষে ২০০ শিশুও রয়েছে। আরও ১,০৪২ জন আহত হয়েছেন।
এই হামলার পর ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী তীব্র প্রতিবাদ সত্ত্বেও, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েলের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে যে, গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতি ট্রাম্পের ‘পূর্ণ সমর্থন’ রয়েছে। একই সাথে, ওয়াশিংটন গাজায় চলমান সহিংসতার জন্য হামাসকে দায়ী করেছে। শুক্রবার টিআরটি ওয়ার্ল্ড সংবাদমাধ্যমটি এই তথ্য জানিয়েছে।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট বলেন, ‘গাজায় ইসরায়েলের বিমান ও স্থল হামলা পুনরায় শুরু করার বিষয়টি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘পূর্ণ সমর্থন’ করেন। গত মঙ্গলবার থেকে ইসরায়েল কর্তৃক ফিলিস্তিনিদের উপর গণহত্যার জন্য তিনি হামাসকে দায়ী করেছেন।
সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে, ট্রাম্প গাজায় যুদ্ধবিরতি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছেন কিনা, লিভিট বলেন, “আমি ইসরায়েল এবং আইডিএফ (ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী) এবং সাম্প্রতিক দিনগুলিতে তাদের গৃহীত পদক্ষেপগুলিকে সম্পূর্ণ সমর্থন করি।”
যদিও এই বছরের ১৯ জানুয়ারী থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর রয়েছে, ইসরায়েল একতরফাভাবে তা লঙ্ঘন করে আসছে। গত মঙ্গলবার থেকে, ইসরায়েলি বাহিনী অবরুদ্ধ অঞ্চলে প্রায় ৭০০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। তাদের মধ্যে ২০০ শিশু এবং আরও ১,০৪২ জন আহত হয়েছে। এছাড়াও, বৃহস্পতিবার গাজায় ইসরায়েলি বোমা হামলায় কমপক্ষে ১১০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে অনেকেই নারী ও শিশু। তবে, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে রক্তপাতের জন্য লেভিট হামাসকে দায়ী করেছেন।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব বলেছেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হামাসকে স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, যদি তারা সমস্ত জিম্মিকে মুক্তি না দেয়, তাহলে তাদের ভারী মূল্য দিতে হবে, এবং দুর্ভাগ্যবশত, হামাস মিডিয়াতে তাদের জীবন নিয়ে খেলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”
লেভিট আরও বলেন, “এই পরিস্থিতির জন্য সম্পূর্ণরূপে হামাস দায়ী।” রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প চান ফিলিস্তিনি জঙ্গিদের হাতে আটক “সকল জিম্মিকে” মুক্তি দেওয়া হোক।
এদিকে, বৃহস্পতিবারের রক্তাক্ত ঘটনার বিষয়ে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উত্তর গাজা উপত্যকার জরুরি পরিষেবার প্রধান ফারেস আওয়াদ বলেছেন, “বেইত লাহিয়ার জনগণের জন্য এটি একটি রক্তাক্ত রাত ছিল। উদ্ধারকারীরা এখনও ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলির ধ্বংসস্তূপের মধ্য দিয়ে অনুসন্ধান চালাচ্ছেন। পরিস্থিতি ভয়াবহ।”