March 18, 2025
‘স্ট্যাচু অব লিবার্টি’ ফেরত চাইলেন ফরাসি এমপি

‘স্ট্যাচু অব লিবার্টি’ ফেরত চাইলেন ফরাসি এমপি

'স্ট্যাচু অব লিবার্টি' ফেরত চাইলেন ফরাসি এমপি

‘স্ট্যাচু অব লিবার্টি’ ফেরত চাইলেন ফরাসি এমপি

‘স্ট্যাচু অফ লিবার্টি’ হল একটি নর্থ অ্যামেরিকার  সর্ববৃহৎ ভাস্কর্য যা ১৮৮৬ সালে ফ্রান্স কর্তৃক  যুক্তরাষ্ট্রকে উপহার দেয়া  হয়েছিল। এটি নিউ ইয়র্ক শহরের লিবার্টি দ্বীপে অবস্থিত, যেখানে অভিবাসী এবং ফিরে আসা আমেরিকান সহ সকল পর্যটকদের স্বাগত জানাযা এই মূর্তিটি ।  তামার মূর্তিটি ১৮৮৬ সালের ২৮শে অক্টোবর  যুক্তরাষ্ট্রের শতবর্ষ উদযাপন এবং  যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ফ্রান্সের বন্ধুত্বের প্রতীক হিসেবে উৎসর্গ করা হয়েছিল। ভাস্কর্যটির অভ্যন্তরীণ কাঠামোটি ফ্রেডেরিক অগাস্ট বার্থোল্ডি দ্বারা ডিজাইন এবং নির্মিত হয়েছিল। স্ট্যাচু অফ লিবার্টির ওজন ২২৫ টন বা ৪৫,০০০ পাউন্ড। স্ট্যাচু অফ লিবার্টি যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম স্বাধীনতার প্রতীক। এই ভাস্কর্যটি উত্তর আমেরিকার এই দেশের স্বাধীনতার প্রতীক। মূর্তিটি ফ্রান্সের উপহার হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে দেওয়া হয়েছিল। 

আর এখন একজন ফরাসি আইনপ্রণেতা স্ট্যাচু অফ লিবার্টি ফেরত দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। তিনি দাবি করেছেন যে, ট্রাম্প প্রশাসন সেই  মূল্যবোধগুলিকে অর্থাৎ স্ট্যাচু অফ লিবার্টিকে সম্মান করে না।  যার জন্য এটি  যুক্তরাষ্ট্রকে উপহার হিসেবে দেওয়া হয়েছিল তার সম্মান দিতে জানেনা ট্রাম্প।

ফরাসি সংবাদপত্র লে মন্ডের প্রতিবেদন অনুসারে, একজন ফরাসি সংসদ সদস্য স্ট্যাচু অফ লিবার্টি যুক্তরাষ্ট্রে ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তার যুক্তি হলো, ভাস্কর্যটি যে মূল্যবোধের প্রতিনিধিত্ব করে আমেরিকা আর সেই মূল্যবোধ ধারণ করে না।

ফরাসি সংসদ সদস্যের নাম রাফায়েল গ্লাকসম্যান। তিনি দাবি করেছেন যে, ফ্রান্স আমেরিকাকে মূর্তিটি ফেরত  চাওয়ার  কারণ হলো ডোনাল্ড ট্রাম্প সরকার আর   মূল্যবোধগুলিকে সম্মান করে না। আর তাই, ফ্রান্সের উচিত আমেরিকা থেকে স্ট্যাচু অফ লিবার্টি ফিরিয়ে নেওয়া।

বামপন্থী রাজনীতিবিদ রাফায়েল গ্লাকসম্যান রবিবার এক জনসভায় এই দাবি করেন।

সভায় তিনি বলেন, “আমাদের স্ট্যাচু অফ লিবার্টি ফিরিয়ে দিন। আমরা সেইসব আমেরিকানদের বলব যারা অত্যাচারীদের পক্ষ বেছে নিয়েছে, যারা বৈজ্ঞানিক স্বাধীনতার দাবিতে গবেষকদের বরখাস্ত করেছে, তাদের স্ট্যাচু অফ লিবার্টি ফিরিয়ে দেওয়া উচিত।”

তিনি দাবি করেন যে, এই ভাস্কর্যটি আমেরিকাকে উপহার হিসেবে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা এখন সেই ভাস্কর্যের মর্যাদা বজায় রাখতে পারছে না। তাই মূর্তিটি তার নিজের দেশেই সঠিকভাবে থাকবে।  ১৮৮৬ সালের অক্টোবরে আমেরিকান রাষ্ট্রপতি গ্লোভার ক্লিভল্যান্ড মূর্তিটির উদ্বোধন করেন।

তারপর ১৯২৪ সালে মার্কিন সরকার এই মূর্তিটিকে ‘জাতীয় স্মৃতিস্তম্ভ’ হিসেবে ঘোষণা করেন। ট্রাম্প প্রশাসনের বিভিন্ন বিতর্কিত পদক্ষেপের কারণে লিবার্টি দ্বীপে অবস্থিত এই মূর্তিটি এখন ফ্রান্সে ফিরিয়ে দেওয়া উচিত বলে রাফায়েল গ্লাকসম্যান দাবি করেন।

এটি লক্ষণীয় যে, গ্লাকসম্যান ইউক্রেন ইস্যুতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সরাসরি বিরোধিতা এবং সমালোচনা করেছেন। দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে চলমান এই যুদ্ধে ইউএস  নীতি পরিবর্তন এবং বিভিন্ন আমেরিকান প্রতিষ্ঠানে বরাদ্দ কমানোর জন্যও তিনি ট্রাম্পের সমালোচনা করেছেন।

গ্লাকসম্যান আমেরিকান গবেষকদের ফ্রান্সে এসে কাজ করার অনুমতি দেওয়ার জন্য ফরাসি সরকারের কাছেও আবেদন করেছেন।

ফরাসি আইনপ্রণেতা দাবি করেন যে, ভাস্কর্যটি আমেরিকাকে উপহার হিসেবে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা এখন ভাস্কর্যের মর্যাদা বজায় রাখতে পারছে না। অতএব, মূর্তিটি তার নিজের দেশেই থাকবে এবং এর মর্যাদা রক্ষা করা হবে।

ধারণা করা হচ্ছে যে, ইউক্রেনকে সাহায্য বন্ধ করার ওয়াশিংটনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ফরাসি এমপি এই ধরনের মন্তব্য করেছেন। গ্লাকসম্যান এর আগে ইউক্রেন ইস্যুতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সরাসরি বিরোধিতা এবং সমালোচনা করেছেন। ইউক্রেন সম্পর্কে ট্রাম্পের অবস্থান এবং জেলেনস্কির প্রতি তার প্রকাশ্য অপমান ইউরোপ জুড়ে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। এমনই এক প্রেক্ষাপটে ফরাসি এমপি আমেরিকান স্বাধীনতার প্রতীক নিয়ে মন্তব্য করেছেন।

উল্লেখ্য, ফ্রান্স ১৮৮৬ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে স্ট্যাচু অফ লিবার্টি উপহার দিয়েছিল। এটি নিউইয়র্কের লিবার্টি দ্বীপে অবস্থিত, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী এবং অন্যান্য দেশ থেকে ফিরে আসা আমেরিকান সহ সকল পর্যটককে স্বাগত জানায়। এই ব্রোঞ্জ মূর্তিটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শতবর্ষ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ফ্রান্সের বন্ধুত্বের প্রতীক হিসেবে উৎসর্গ করা হয়েছিল।

এটি স্বাধীনতার রোমান দেবী লিবার্টাসের একটি মূর্তি। তার ডান হাতে একটি মশাল এবং বাম হাতে একটি ট্যাবুলা আনসাটা, যার উপরে রোমান অক্ষরে লেখা “৪ জুলাই, ১৭৭৬”, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতার ঘোষণার তারিখ। তিনি তার পায়ের শিকল ভেঙে এগিয়ে যান, যা সেই সময়ে দাসত্বের বিলুপ্তির প্রতীক।

Read More

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X