ক্যালিফোর্নিয়া কিনতে চায় ডেনমার্ক, আবেদনে লাখো স্বাক্ষর
ক্যালিফোর্নিয়া:
“ক্যালিফোর্নিয়া যুক্তরাষ্ট্রের একটি রাজ্য। ১৮৫০ সালে ক্যালিফোর্নিয়া ৩১তম রাজ্য হিসেবে স্বীকৃতি পায়। জনসংখ্যার দিক থেকে ক্যালিফোর্নিয়া যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম রাজ্য। আয়তনের দিক থেকে এটি যুক্তরাষ্ট্রের তৃতীয় বৃহত্তম রাজ্য। ক্যালিফোর্নিয়ার রাজধানী স্যাক্রামেন্টো। লস অ্যাঞ্জেলেস এবং সান ফ্রান্সিসকো এই রাজ্যের দুটি বৃহত্তম শহর। ১৮৪৬ সালে স্পেনীয় এবং মেক্সিকো শাসন থেকে স্বাধীনতা লাভ করে ক্যালিফোর্নিয়া। সেই ক্যালিফোর্নিয়াকে কেনার আগ্রহ দেখিয়েছেন ডেনমার্ক। আর সেটা ট্রাম্পের একতরফা সম্প্রসারণ নীতির পরিণতি বলা চলে”।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গ্রিনল্যান্ড কেনার প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়ায় ডেনিশ নাগরিকরা ক্যালিফোর্নিয়া কিনতে একটি ব্যঙ্গাত্মক আবেদন শুরু করেছেন।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গ্রিনল্যান্ড কেনার প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়ায় ডেনিশ নাগরিকরা মার্কিন ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্য কিনতে একটি অনলাইন আবেদন শুরু করেছেন। এই আবেদনে ইতিমধ্যেই দুই লক্ষেরও বেশি মানুষ স্বাক্ষর করেছেন।
আবেদনে বলা হয়েছে, “আপনি কি কখনও মানচিত্র দেখে ভেবেছেন, ‘ডেনমার্কের আরও রোদ, তালগাছ এবং রোলার স্কেটিং দরকার? জীবনে একবারই পাওয়া যায় এমন সুযোগ—সেটা হলো ক্যালিফোর্নিয়া কেনার সুযোগ !’”
আবেদনকারীরা মজা করে বলছেন, “আসুন ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছ থেকে ক্যালিফোর্নিয়া কিনে নিই! হ্যাঁ, আপনি ঠিক শুনেছেন। ক্যালিফোর্নিয়া আমাদের হতে পারে, আমাদের কেবল আপনার সাহায্যের প্রয়োজন।”
সিএনএন বুধবার জানিয়েছে যে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গ্রিনল্যান্ড দখলের ইচ্ছার প্রতিক্রিয়ায় ডেনিশ ব্যঙ্গাত্মক উদ্যোগটি এসেছে। গ্রিনল্যান্ড একটি স্বায়ত্তশাসিত ডেনিশ অঞ্চল। ট্রাম্পের গ্রিনল্যান্ড দখলের দাবি ডেনমার্ক দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে।
বিপরীতভাবে, ক্যালিফোর্নিয়া কেনার জন্য ব্যঙ্গাত্মক ডেনিশ আবেদনে বেশ কয়েকটি সুবিধার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন—
- উন্নত আবহাওয়া,
- অ্যাভোকাডোর নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ এবং
- প্রযুক্তি খাতে আধিপত্য। বলা হয়,
“কিছু অতিরিক্ত প্রযুক্তি ভাই পাওয়া? সত্যিই দুর্দান্ত! প্রতিটি গণতন্ত্রের এটি প্রয়োজন!”
আবেদনে আরও বলা হয়েছে—যদি ডেনমার্ক ক্যালিফোর্নিয়া কিনে নেয়, তাহলে তারা সেখানে কিছু নতুন সংস্কার আনতে পারবে, যেমন—ডিজনিল্যান্ডের নাম পরিবর্তন করে ‘হ্যান্স ক্রিশ্চিয়ান অ্যান্ডারসেনল্যান্ড’ রাখা হবে এবং মিকি মাউসের মাথায় থাকবে ভাইকিং হেলমেট।
ক্যালিফোর্নিয়া কিনতে এখন যা প্রয়োজন তা হলো এক ট্রিলিয়ন ডলার। কয়েক বিলিয়ন ডলার কমবেশিও হতে পারে। তবে দাম নিয়ে আলোচনা করতে হবে। এর জন্য, সেরা বিশেষজ্ঞদের একটি দলকে আলোচনার জন্য পাঠানো হবে। তাদের মধ্যে থাকবেন লেগো কোম্পানির নির্বাহী এবং জনপ্রিয় ডেনিশ টিভি সিরিজ বার্গেনের অভিনেতারা!
আবেদনে আরও বলা হয়েছে—ক্যালিফোর্নিয়া হবে নিউ ডেনমার্ক। লস অ্যাঞ্জেলেসকে লুস আংহেলেস’ নামকরণ করা হবে। আমরা হলিউডে ডেনিশ ‘আগা’ আনব। আমরা বেভারলি হিলসে বাইক লেন চালু করব এবং প্রতিটি রাস্তার মোড়ে ডেনিশ ঐতিহ্যবাহী খাবার থাকবে।’
এতে আরও বলা হয়েছে, ‘আইনের শাসন, সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা এবং তথ্য-ভিত্তিক রাজনীতি চালু করা যেতে পারে।’
রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প ২০ জানুয়ারী ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে গ্রিনল্যান্ডকে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি ‘প্রয়োজনীয় অঞ্চল’ হিসেবে বর্ণনা করে আসছেন। যদিও গ্রিনল্যান্ড এবং ডেনিশ কর্মকর্তারা এই দাবি দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
তবে, গ্রিনল্যান্ডের ভবিষ্যৎ নিয়ে বিতর্ক তীব্রতর হচ্ছে। বিশেষ করে দ্বীপের স্বাধীনতা আন্দোলনকে ঘিরে। নববর্ষের ভাষণে গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে, দ্বীপটি উপনিবেশবাদ থেকে মুক্ত হতে চায়।