ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে চায় বাংলাদেশ: ড. মুহাম্মদ ইউনূস
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউটের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাতে এ আলোচনা হয়। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে বাংলাদেশ নিবিড়ভাবে কাজ করতে চায়।
বুধবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউটের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তার সঙ্গে দেখা করতে এলে তিনি এ কথা বলেন। প্রধান উপদেষ্টা দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রচেষ্টা প্রত্যক্ষ করতে মার্কিন রিপাবলিকান পার্টির শীর্ষ নেতাদের বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।
আইআরআই, রিপাবলিকান পার্টির সাথে যুক্ত একটি থিঙ্ক ট্যাঙ্ক। এটি বিশ্বব্যাপী গণতন্ত্রের প্রচার করে। ইনস্টিটিউটের আঞ্চলিক প্রধান স্টিভ চিমার নেতৃত্বে, আইআরআই কর্মকর্তারা তাদের চলমান সফরে রাজনীতিবিদ, ছাত্র সমাজ এবং সুশীল সমাজের কর্মকর্তাদের সাথে দেখা করেন।
চিমা বলেন, আইআরআই-এর অগ্রাধিকার হল অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার প্রচেষ্টাকে সমর্থন করা, বিশেষ করে এখন যখন দেশের মূল প্রতিষ্ঠানগুলিকে ঠিক করার জন্য ব্যাপকভাবে আহ্বান জানানো হচ্ছে।
চিমা আরও বলেন, “আওয়ামী লীগের মূল উদ্বেগ ছিল দেশের সঠিক দিকনির্দেশনা নিয়ে। আর এ সরকারে সংস্কার সফল হচ্ছে তা দেখা মার্কিন স্বার্থে।”
অধ্যাপক ইউনূস, তার সরকার গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের সাথে সাথে নির্বাচন করবে উল্লেখ করে বলেন, নির্বাচনী ট্রেন ইতিমধ্যে প্রথম স্টেশন ছেড়ে গেছে এবং একটি নতুন নির্বাচন কমিশন সাধারণ নির্বাচনের জন্য মাঠ প্রস্তুত করবে।
ছাত্র-নেতৃত্বাধীন গণ-অভ্যুত্থানের ফলে যে অভূতপূর্ব পরিবর্তনগুলি শুরু হয়েছে তা প্রত্যক্ষ করতে তিনি শীর্ষ রিপাবলিকান সিনেটর এবং কংগ্রেস সদস্যদের বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।
বৈঠকে আইআরআই কর্মকর্তা জিওফ্রে ম্যাকডোনাল্ড, আইআরআই কান্ট্রি চিফ জোশুয়া রোসেম্বলম এবং বাংলাদেশ সরকারের সিনিয়র সচিব লামিয়া মোর্শেদ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ব্যবধান মেটাতে সক্ষম হবেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান ড. ব্যবধান কাটিয়ে নতুন মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে কাজও শুরু করতে পারবেন তিনি। এমনটাই প্রত্যাশা করছেন দেশ-বিদেশের বিশেষজ্ঞরা। হংকং ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ট্রাম্পের সঙ্গে ড. ইউনূসের দূরত্ব ও বিরোধপূর্ণ সম্পর্ক একটি ‘ওপেন সিক্রেট’। তবে বাংলাদেশেরও যুক্তরাষ্ট্রকে প্রয়োজন কারণ বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত ও চীনের ‘ভালো কৌশলগত সম্পর্ক’ রয়েছে।
ওয়াশিংটন ভিত্তিক পর্যবেক্ষণ সংস্থা উইলসন সেন্টারের দক্ষিণ এশিয়া ইনস্টিটিউটের পরিচালক মাইকেল কুগেলম্যান বলেছেন, ‘ট্রাম্প এমন এক সময়ে ক্ষমতায় এসেছেন যখন শেখ হাসিনার পর ড. ইউনূস বাংলাদেশকে পুনর্গঠন ও স্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন। তাই আমি মনে করি ড. ইউনূস দ্রুত ট্রাম্পের সঙ্গে বিরোধের সমাধান করবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি মনে করি ডক্টর ইউনূস আর ট্রাম্পের সমালোচনা করবেন না। ট্রাম্প জয়ী হওয়ার পরপরই ড. ইউনূসের অভিনন্দন বার্তায় সেই ইঙ্গিতই দেয়।’