ট্রাম্পকে হত্যাচেষ্টা: ইরানি ষড়যন্ত্রের দিকে ইঙ্গিত
সদ্য সমাপ্ত মার্কিন নির্বাচনে জয়ী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হত্যার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে এক ইরানি নাগরিকের বিরুদ্ধে। ইরানি কমান্ডার কাসেম সোলাইমানি হত্যার প্রতিশোধ নিতে ট্রাম্পকে কারাগারে হত্যার ষড়যন্ত্র চলছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ দাবি করেছে যে, ইরানের বিপ্লবী গার্ড কর্পস এরোস্পেস ফোর্স বা ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের নেতৃত্বে একজন ইরানি নাগরিক হত্যা প্রচেষ্টার সাথে জড়িত ছিল।
শুক্রবার (৯ নভেম্বর) বিচার বিভাগ জানায়, ওই ব্যক্তি ৭ অক্টোবর ট্রাম্পকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন। তবে বহুল সমালোচিত ফরহাদ শাকেরি এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
ম্যানহাটনের ফেডারেল আদালতে দায়ের করা একটি ফৌজদারি অভিযোগ অনুসারে, ইরানের আধাসামরিক বিপ্লবী গার্ডের একজন নামহীন কর্মকর্তা ফরহাদ শাকেরিকে গত সেপ্টেম্বরে ট্রাম্পের উপর নজরদারি করার দায়িত্ব দিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, সাত দিনের মধ্যে হত্যার পরিকল্পনা করতেও বলেছেন। এরপর এটাও বলা হয় যে যত দ্রুত সম্ভব ট্রাম্পকে হত্যা করা হোক। একইভাবে ফরহাদ শাকেরিও ট্রাম্পকে পর্যবেক্ষণ করেছেন। তবে সে হত্যার পরিকল্পনা করতে পারেনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ইরানি কর্মকর্তা তখন বলেছিলেন যে, প্রেসিডেন্ট নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত হত্যার পরিকল্পনা স্থগিত রাখা উচিত। কারণ তিনি বিশ্বাস করেছিলেন ট্রাম্প হেরে যাবেন। তাহলে তাকে হত্যা করা তুলনামূলক সহজ হবে।
তবে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘাই বলেছেন, এ অভিযোগ ভিত্তিহীন।
তবে এই ঘটনা আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ভবিষ্যতে এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়বে। জানা গেছে, ফরহাদ শাকেরী তরুণ বয়সে আমেরিকায় এসেছিলেন। স্টেটেন আইল্যান্ডের ৩৬ বছর বয়সী জোনাথন লোডহোল্ট এবং ব্রুকলিনের ৪৯ বছর বয়সী কার্লিসেল রিভেরা, দুই ব্যক্তিকে নিয়ে বৃহত্তর হত্যার ষড়যন্ত্রে অংশ নেওয়ার জন্য শাকেরির বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে।
তবে ফরহাদ শাকেরি কখন আমেরিকায় এসেছেন এবং কোথায় থাকতেন সে বিষয়ে কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই।
তবে মার্কিন কৌঁসুলিরা ওই ব্যক্তির পরিচয় প্রকাশ করেনি। তবে যাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল, তিনি মসীহ আলী নেজাদ বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ইরানি বংশোদ্ভূত এই মার্কিন নাগরিক ইরানে নারী ও সাংবাদিকদের মাথা ঢেকে রাখার আইনের কট্টর সমালোচক।
এর আগে, ২০২১ সালে, তাকে অপহরণ করার ষড়যন্ত্রের সন্দেহে চার ইরানিকে অভিযুক্ত করা হয়েছিল। এছাড়াও, পরের বছর তার বাড়ির সামনে থেকে রাইফেল সহ একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
রয়টার্স জানিয়েছে ,একটি মার্কিন আদালত রিভেরা এবং লোডহল্টকে বিচারের জন্য আটকে রাখার নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু তাদের আইনজীবীরা মন্তব্যের অনুরোধে তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেননি।