November 3, 2024
পুতিন-কিম বৈঠকের সম্ভাবনা: যুক্তরাষ্ট্রের হুঁশিয়ারি

পুতিন-কিম বৈঠকের সম্ভাবনা: যুক্তরাষ্ট্রের হুঁশিয়ারি

পুতিন-কিম বৈঠকের সম্ভাবনা: যুক্তরাষ্ট্রের হুঁশিয়ারি

পুতিন-কিম বৈঠকের সম্ভাবনা: যুক্তরাষ্ট্রের হুঁশিয়ারি

চলতি মাসের মধ্যেই উত্তর কোরিয়া ও ভিয়েতনাম সফর করবেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। হতে পারে পুতিন-কিম বৈঠক। পুতিন ও উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের মধ্যে বৈঠক দুই দেশের সামরিক সম্পর্ক আরও গভীর করতে পারে। আর এ বিষয়ে সতর্ক করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া। তবে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ পুতিনের সফরের বিস্তারিত জানতে চাইলে মন্তব্য করতে রাজি হননি।

শুক্রবার (১৪ জুন) রাশিয়ার সংবাদপত্র ভেদোমোস্তির বরাত দিয়ে আলজাজিরা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

যে পরিস্থিতিতে পুতিন ইউক্রেনের যুদ্ধ শেষ করতে চান

এ ধরনের বৈঠক জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবের লঙ্ঘন বলে উদ্বেগপ্রকাশ করেছে দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র।

দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট কিম হং-কিউন মার্কিন উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী কার্ট ক্যাম্পবেলের সঙ্গে জরুরি ফোনে কথা বলেছেন।

হং-কিউন মার্কিন কূটনীতিক কার্টকে বলেন, পুতিনের সফরের মাধ্যমে মস্কো ও পিয়ংইয়ংয়ের মধ্যে সামরিক সহযোগিতার মাত্রা বাড়তে দেওয়া উচিত নয়।

মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে যে পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে এবং দুই দেশ দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে উত্তর কোরিয়ার উসকানিমূলক আচরণ এবং পারস্পরিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে এই অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা বাড়াতে পারে এমন যেকোনো উদ্যোগের বিরুদ্ধে দাঁড়াবে।

পুতিনের সফরে এই অঞ্চলে কোনো অস্থিতিশীলতা বা সমস্যা দেখা দিলে দক্ষিণ কোরিয়াকে নিরবচ্ছিন্ন সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন কার্ট ক্যাম্পবেল।

এদিকে বৃহস্পতিবার পুতিনের সফরের বিস্তারিত জানতে চাইলে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন, আমাদের প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার অধিকার রয়েছে এবং উদ্বেগের কোনো কারণ নেই। উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। তাদের সঙ্গে আমরা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক গড়ে তুলছি। আমরা ভবিষ্যতে আরও উন্নয়ন করব। এই সম্পর্ক অনেক দূর যেতে পারে।

সাম্প্রতিক সময়ে কিম জং উন উত্তর কোরিয়ার অস্ত্রাগারের আধুনিকায়নের কাজ হাতে নিয়েছেন। দেশটির সামরিক বাহিনী গত নভেম্বর থেকে মহাকাশে তার প্রথম গোয়েন্দা উপগ্রহ পাঠানো সহ বেশ কয়েকটি উন্নত অস্ত্র পরীক্ষা করেছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এর আগে দাবি করেছিল যে রাশিয়া উত্তর কোরিয়ার তৈরি ক্ষেপণাস্ত্র এবং কামান ব্যবহার করে ইউক্রেনে হামলা করেছে। তবে মস্কো এবং পিয়ংইয়ং উভয়ই এই দাবি অস্বীকার করেছে। গত সেপ্টেম্বরে দুই নেতা পূর্ব রাশিয়ায় মিলিত হন এবং সামরিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেন।

কার্ট গত বুধবার বলেছিলেন যে উত্তর কোরিয়া রাশিয়াকে যা দিয়েছে সে সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে গ্রহণযোগ্য তথ্য রয়েছে এবং যুদ্ধক্ষেত্রে এর উল্লেখযোগ্য প্রভাব রয়েছে। তবে এর বিনিময়ে রাশিয়া উত্তর কোরিয়াকে কী দিয়েছে তা স্পষ্ট নয় বলে জানিয়েছেন মার্কিন উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

তিনি আরও বলেন, নগদ অর্থ, জ্বালানি নাকি পারমাণবিক অস্ত্র ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রকল্পে অগ্রসর হওয়ার ক্ষমতা? তা আমরা জানি না। যাইহোক, আমরা বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন এবং তাই সতর্কতার সাথে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। যে রিস্থিতিতে পুতিন ইউক্রেনের যুদ্ধ শেষ করতে চান।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের যুদ্ধ শেষ করতে বেশ কিছু শর্ত ঘোষণা করেছেন। এগুলি হল:

  • কিয়েভকে আরও বেশ কিছু  অঞ্চল ছেড়ে দিতে,
  • তার সৈন্যদের দেশে আরও স্থানান্তর করতে এবং পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোতে যোগদানের ইচ্ছা পরিত্যাগ করতে হবে।
  • শুক্রবার (১৪ জুন) মস্কোতে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতদের এক বৈঠকে পুতিন ইউক্রেনের চারটি রুশ-নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল – দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, খেরসন এবং জাপোরিঝিয়া থেকে ইউক্রেনীয় সেনা প্রত্যাহারের আহ্বান জানান।
  • উপরন্তু, তিনি এটাও দাবি করেছেন যে ইউক্রেনকে আনুষ্ঠানিকভাবে ন্যাটো সামরিক জোটে যোগদানের প্রচেষ্টা ছেড়ে দিতে হবে।

পুতিন এই সপ্তাহে সুইজারল্যান্ডে পশ্চিমা নেতৃত্বাধীন ইউক্রেন শান্তি প্রচেষ্টার বিষয়ে একটি সম্মেলনে শর্তাবলী উল্লেখ করেছেন। সুইজারল্যান্ডে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বিশ্বের ৯০টি দেশের প্রতিনিধি ও সংস্থা অংশ নেয়। ওই সম্মেলনে রাশিয়াকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।

পুতিন রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাষ্ট্রদূতদের কাছে হালনাগাদ শর্ত উপস্থাপন করেছেন। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে একটি পূর্ণ-স্কেল অপারেশন শুরু করার পর এই প্রথম পুতিন তার শর্তাবলী সম্পর্কে সরাসরি কথা বলেছেন।

এই শর্তের বিষয়ে মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিন বলেছেন, পুতিন ইউক্রেনের বিষয়ে কোনো দাবি জানানো বা আজ যে যুদ্ধ শুরু করেছেন তা শেষ করার অবস্থানে নেই।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, পুতিনের প্রস্তাব বিশ্বাসযোগ্য নয়। তিনি তার শর্তে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হলেও আক্রমণ বন্ধ করবেন না।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X