January 18, 2025
স্মার্টফোন ছাড়া এক মাস থাকতে পারলে ১১ লাখ টাকা পুরস্কার

স্মার্টফোন ছাড়া এক মাস থাকতে পারলে ১১ লাখ টাকা পুরস্কার

স্মার্টফোন ছাড়া এক মাস থাকতে পারলে ১১ লাখ টাকা পুরস্কার

স্মার্টফোন ছাড়া এক মাস থাকতে পারলে ১১ লাখ টাকা পুরস্কার

বর্তমান যুগে বেশিরভাগ মানুষই স্মার্টফোনে আসক্ত। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মধ্যে এই স্মার্টফোনটি অন্যতম। জীবনের দীর্ঘ সময় কেটে যায় এতে; অনেক মূল্যবান মুহূর্ত হারিয়ে যাচ্ছে জীবন থেকে। ফোনের সঙ্গে সখ্যতার কারণে মানুষ  মানুষের মধ্যে দূরত্ব বেড়েছে অনেক ।

শুধু কথা বলা বা মেসেজ আদান-প্রদানের জন্য নয়, দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন কাজেও মোবাইলের ওপর নির্ভর করতে হয়। এক মুহূর্ত চোখ আড়াল করার উপায় নেই।

কিন্তু কেউ যদি স্মার্টফোন ছাড়া এক মাস  থাকতে পারেন, তাহলে ১০ হাজার ডলার (প্রায় ১১ লাখ টাকা) পুরস্কার ঘোষণা করেছে আমেরিকার একটি সংস্থা। এই প্রতিযোগিতার নাম ‘ডিজিটাল ডিটক্স চ্যালেঞ্জ’।

আমেরিকার বিখ্যাত দই ব্র্যান্ড ‘সিগি ডেইরি’ এমনই এক আশ্চর্যজনক প্রোগ্রাম নিয়ে এসেছে, যা মানুষকে ডিজিটাল দুনিয়া থেকে দূরে থাকার চ্যালেঞ্জ দেয়। এতে, নির্বাচিত অংশগ্রহণকারীদের একটি স্মার্টফোন নিয়ে যাওয়া হবে এবং তারা এক মাস মোবাইল ব্যবহার করতে পারবেন না।

যাইহোক, এই সময়ের মধ্যে প্রোগ্রাম অংশগ্রহণকারীরা একটি প্রিপেইড সিম কার্ড এবং মৌলিক ফিচার ফোন পাবেন। জরুরী পরিস্থিতিতে অংশগ্রহণকারীরা এই ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারেন। ১০ জন সৌভাগ্যবান ব্যক্তি যারা এই মাসব্যাপী ‘ডিজিটাল ব্রেক চ্যালেঞ্জ’ জিতবেন তারা সিগি থেকে USD ১০,০০০ পাবেন। একই সঙ্গে চ্যালেঞ্জের বিজয়ীদের তিন মাসের জন্য সিগির দই সরবরাহ করা হবে।

টাকা-ডলার অদলবদল সুবিধা চালু

সিগি ডেইরি বলছে, অ্যালকোহল ত্যাগ করার পরিবর্তে আমরা এখন আপনাকে এক মাসের জন্য আপনার স্মার্টফোন ছেড়ে দিতে বলছি। আমাদের কর্মসূচির মূল লক্ষ্য হল স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তোলার মাধ্যমে মানুষকে সুস্থ জীবনধারায় ফিরে আসতে উৎসাহিত করা।

সিগি ডেইরির এই ব্যতিক্রমী প্রোগ্রামের জন্য আবেদনের সময়কাল ৩১ জানুয়ারি শেষ হয়েছে।

হাতের মুঠোয় পৃথিবী। একটি ছোট ডিভাইস। সাত সাগর তেরো নদীও শব্দের টানে। আপনি উভয় পাশে দুটি ডিভাইসের মাধ্যমে একে অপরকে দেখতে পারেন। একই টেবিলে বসে থাকা দুজনের মতো। সময় এবং দূরত্ব দুটোই এখন ঠুনকো।  এটি মোবাইল ফোন। একটি সিঙ্গেল ডিজিট সংখ্যা জীবনের চিত্র বদলে দিয়েছে এবং জীবনের জন্য অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। কিন্তু এই অপরিহার্য যন্ত্রের বিকিরণ মানবদেহের নানাবিধ ক্ষতি সাধন করে। যার মধ্যে একটি হলো মানুষের আয়ুষ্কাল কমে যাওয়া। শুধু তাই নয়, এর ক্ষতিকর প্রভাব পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করছে। প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যের ধ্বংসও নেতিবাচক ভূমিকা পালন করে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মোবাইল ফোনের রেডিয়েশন গর্ভবতী মহিলাদের জন্য বিপজ্জনক। শিশুরা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাদের কোমল মন ও শরীর অজান্তেই পঙ্গু হয়ে যাচ্ছে। এত কিছুর পরও বিজ্ঞানের যুগে মানুষ দিন দিন যন্ত্রকে আঁকড়ে ধরে আছে।

বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি) অনুসারে, দেশে সক্রিয় মোবাইল ফোন সংযোগ বা সিম সংখ্যা ১৪ কোটি ৭ লাখ। । একই সময়ে মোট ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৭ কোটি ৯২ লাখ। মোবাইল ফোনের উপকারিতা আর অপকারিতা নানা সময়ে হয়েছে বাকযুদ্ধ। তার মধ্যে অপকারিতার আলোচনা কমই আসে। দেশে মোবাইল ফোনের ক্ষতিকর দিক নিয়ে গবেষণা হয়েছে। এই ডিভাইসের ব্যবহারকারী এবং অংশীদারদের বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। প্রস্তুতকারককে বিকিরণ কমাতে বলা হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে তাদের সতর্ক থাকতেও বলা হয়েছে। ডিভাইস থেকে নির্গত বিকিরণ মানবদেহের ক্ষতি করে।

আর সিগন্যাল টাওয়ারের অতিবেগুনি রশ্মি পরিবেশের ক্ষতি করে। বিশ্বের অন্যান্য দেশে রেডিয়েশন নিয়মিত পরিমাপ ও পর্যবেক্ষণ করা হলেও বাংলাদেশে তা কখনো করা হয়নি। আমাদের দেশে কত শতাংশ বিকিরণ প্রবাহিত হয় তাও জানা নেই। সবাই মোবাইল টাওয়ার লাগাচ্ছে। নিজেরাই আবার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে। ফলাফল কেউ কখনো জানতে পায় না। পরিবেশ ও মানবদেহকে ক্ষতিকর রশ্মি থেকে বাঁচাতে অপারেটর কোম্পানিগুলোকে ক্ষতিকর রেডিয়েশন বা ইলেকট্রনিক বর্জ্য কমাতে বলেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। পাশাপাশি সব ধরনের মোবাইল ফোনের যন্ত্রপাতি আমদানির সময় আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কিন্তু কেউ যেন  তাতে কর্ণপাত  নেই । মোবাইল ফোন রেডিয়েশনের নেতিবাচক প্রভাবে আমাদের যে ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয় তা বিভিন্ন দেশের বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের গবেষণায় উঠে এসেছে।

শুধু মোবাইল ফোন নয়, জনবসতিতে স্থাপিত টাওয়ার থেকে যে পরিমাণ বিকিরণ ছড়ায় তা মানুষের মস্তিষ্ক ও হৃৎপিণ্ডের ওপরও বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। বিষণ্ণতা, ঘুমের ব্যাঘাত, বাড়তি চঞ্চলতা, কর্মক্ষেত্রে একাগ্রতার সমস্যা, স্মৃতিশক্তি হ্রাস, হজমশক্তি হ্রাস এবং হৃদস্পন্দন বৃদ্ধির রিপোর্ট করা হয়েছে। শিশু, বয়স্ক এবং গর্ভবতী মহিলারা মোবাইল ফোন ব্যবহার না করেও রেডিয়েশনের সংস্পর্শে আসছে। জীবজগৎ এর প্রভাব থেকে মুক্ত নয়।

আরও পড়ুন

৮৬ শতাংশ প্রিস্কুল শিশু স্মার্টফোনে আসক্ত

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X