November 21, 2024
উড়ন্ত গাড়ি উড়ার অনুমতি পেয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে

উড়ন্ত গাড়ি উড়ার অনুমতি পেয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে

 ছাড়পত্র  পেয়েছে।

উড়ন্ত গাড়ি উড়ার অনুমতি পেয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে

এতদিন যা গল্প, সোশ্যাল মিডিয়া, সিনেমার পর্দা বা কার্টুন স্ট্রিপের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল, তা এখন বাস্তবে পরিণত হচ্ছে। উড়ন্ত গাড়ি এখন আর কল্পনা নয়। মার্কেটে বুকিং শুরু হয়ে গেছে। একটি উড়ন্ত গাড়ি হল এমন একটি যান যা আপনি রাস্তায় চালাতে পারেন এবং আকাশে উড়াতে পারেন। এই উড়ন্ত গাড়ি, যাতে সাধারণ মানুষও চড়তে পারে।

বেশ কিছু কোম্পানি দীর্ঘদিন ধরে এ ধরনের প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছে। রাস্তার পাশাপাশি আকাশেও গাড়ি উড়ানোর স্বপ্ন দেখেছে অনেক গাড়ি নির্মাতা। যেখানে গাড়ির দরজা ডানা মেলে আকাশে উড়ে যায়। এই ধরনের প্রযুক্তিকে EVOTL বা ‘ইলেকট্রিক ভার্টিক্যাল টেক অফ অ্যান্ড ল্যান্ডিং এয়ারক্রাফ্ট’ বলা হয়। এই প্রযুক্তির ওপর ভর করেই আকাশে গাড়ি ওড়ানোর স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

সেই অপেক্ষার অবসান হল ফ্লাইং কার (ফ্লাইং কার) মানে উড়ন্ত গাড়ি কার্যত আমেরিকান বাজারে এসেছে। কারণ এখন অনলাইনে অগ্রিম বুকিং শুরু হয়েছে। গত মাসের শেষ সপ্তাহে, মার্কিন সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের লাইসেন্স পাওয়া যায় এবং এই গাড়িটি বিশ্বের প্রথম উড়ন্ত গাড়ি হিসেবে মার্কিন পরিবহন দপ্তরে নিবন্ধিত হয়। ডানা ভাঁজ করে রাখলে চাকার গাড়ির মতো রাস্তায় ছুটবে, আর ডানা খুললে উড়ে উড়ে যাবে বিমানের মতো আকাশে। এটি মাটি থেকে ১৬ হাজার ফুট উপরে উঠতে পারে। এটি প্রিমিয়াম পেট্রোলে চলবে এবং সর্বোচ্চ  ২২০  কিলোমিটার প্রতি ঘন্টায় উড়বে।

আলেফ অ্যারোনটিক্সের উড়ন্ত গাড়ি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে উড়তে মার্কিন সরকারের কাছ থেকে আইনি অনুমোদন পেয়েছে। এটি ই হল  প্রথম উড়ন্ত গাড়ি যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে উড়তে বৈধভাবে অনুমোদিত হয়েছে।

আলেফ অ্যারোনটিক্সের ওয়েবসাইট অনুসারে, উড়ন্ত গাড়িটি নিয়মিত ‘শহর বা দেশের রাস্তায়’ ব্যবহার করার জন্য তৈরি করা হচ্ছে। এটি নিয়মিত পার্কিং লট এবং গ্যারেজে পার্ক করা যেতে পারে। এটি একটি কম গতির গাড়ি। এটি রাস্তায় ২৫ মাইল প্রতি ঘন্টা অতিক্রম করতে পারে না।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিমান চলাচল বিভাগের অ্যারো ল সেন্টারের বরাত দিয়ে গাড়িটির নির্মাতা ঘোষণা করেছে যে তারা তাদের উড়ন্ত গাড়ি;উড়ানের জন্য মার্কিন ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) থেকে একটি বিশেষ ছাড়পত্র  পেয়েছে।

আলেফ অ্যারোনটিক্স এক বিবৃতিতে বলেছে যে FAA সক্রিয়ভাবে গাড়ির বৈদ্যুতিক টেকঅফ এবং অবতরণ কৌশল নিয়ে কাজ করছে। FAA থেকে বিশেষ চার্টার ফ্লাইট এলাকা এবং উড়ন্ত যানবাহনের উদ্দেশ্য সংজ্ঞায়িত করে।

ক্যালিফোর্নিয়ার সান মাতেওর এই উড়ন্ত গাড়িটি ১০০% ইলেকট্রিক। গাড়িটি এক বা দুইজন যাত্রী বহন করতে পারে। যানজটের কারণে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেলেও এবং কোনো দুর্ঘটনা ঘটলেও গাড়ি উড়তে পারে। তাই এর দাম প্রায় তিন লাখ মার্কিন ডলার।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে গত জানুয়ারিতে সংস্থাটি বলেছিল যে এটি ইতিমধ্যে ব্যক্তিগত এবং কর্পোরেট স্তরের গ্রাহকদের কাছ থেকে ৪৪০  টিরও বেশি গাড়ির জন্য অগ্রিম অর্ডার পেয়েছে। কোম্পানি আশা করছে ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ গ্রাহকদের কাছে উড়ন্ত গাড়ি সরবরাহ করা শুরু করবে।

আলেফ অ্যারোনটিক্সের সিইও জিম ডুচভনি এই বছরের শুরুর দিকে একটি বিবৃতিতে বলেছিলেন যে আলেফ ইতিহাসে প্রথম উড়ন্ত গাড়ি সরবরাহ করার লক্ষ্য রাখে। এ ধরনের দ্রুত অগ্রিম অর্ডারের কারণে গাড়ির বাজার সম্ভাবনাও ফুটে উঠেছে। তারা গ্রাহকদের সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করছেন।

আরও খবর

বিভিন্ন দেশে টিকটকের নিষেধাজ্ঞার পিছনে মূল কারণ কী?

ইলন মাস্ক মঙ্গলে একটি মানুষের নগরী প্রতিষ্ঠা করতে চান

বর্ডার সাইড অ্যানিমেল ডিটেক্টর’ আবিষ্কারে তিন ক্ষুদে শিক্ষার্থীর চমক!

তা ছাড়া ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় এটি ওড়ানোর সমস্যা রয়েছে। কারণ এর ফ্যান ঘোরানোর জন্য চারপাশে অনেক খালি জায়গা প্রয়োজন। তারপর শব্দ সমস্যা আছে।

কিন্তু এর প্রধান নির্বাহী বলছেন, “এই গাড়িটি আপনার গ্যারেজে থাকতে পারে। আপনি এটিকে বিমানবন্দরে নিয়ে যান, তারপরে অন্য বিমানবন্দরে যান, তারপর ডানা ভাঁজ করে এটিকে গাড়িতে পরিণত করুন এবং আপনার গন্তব্যে যান।” এর দাম পড়বে দুই লাখ আশি হাজার মার্কিন ডলার।

সমস্যা হল এর জন্য আপনাকে একটি বিমানবন্দর ব্যবহার করতে হবে। এরকম আরও কিছু কোম্পানি উড়ন্ত গাড়ি তৈরি করছে। কিন্তু ব্যক্তিগত উড়ন্ত গাড়ির সামনে এখনও অনেক সমস্যা রয়েছে। কারণ গাড়ি চালানো এবং যেকোনো ধরনের বিমান ওড়ানোর মধ্যে বড় পার্থক্য রয়েছে।

বিজ্ঞান তার নিজস্ব গতিতে যেভাবে এগোচ্ছে,  সেটাতে নির্ভর করে বলাই চলে যে ভবিষ্যতে হয়তোবা এই উড়ন্ত গাড়ির ব্যবহারকারী আধুনিক প্রজন্ম এতটা অত্যাধুনিক হবেরির,  তারা হয়তোবা স্বাভাবিক রাস্তার যানজটের কথা ভুলে যাবে।  আর শুধুমাত্র স্থলভাগে গাড়ি চালানো হত সে কথাও ইতিহাস হয়ে যাবে।  অগ্রসর হবে বিজ্ঞান  আর  তা আশীর্বাদ হবে মানুষের জন্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X