যুদ্ধবিরতিতে টালবাহানা,গাজায় ঠাণ্ডায় মারা যাচ্ছে নবজাতক
দক্ষিণ গাজা উপত্যকার আল-মাওয়াসি শরণার্থী শিবিরে গত কয়েক দিনে তিন ফিলিস্তিনি শিশু মারা গেছে, কারণ ইসরায়েল খাদ্য, পানি এবং জরুরি শীতকালীন সরবরাহ বন্ধ করেই চলেছে।
গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে বিলম্বের কারণে নবজাতকের অবস্থা শোচনীয়। যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা এখন প্রচণ্ড ঠান্ডা। ফলে তারা মারা যাচ্ছে। একদিকে শিশুরা মারা যাচ্ছে, অন্যদিকে খাবারের জন্য হাহাকার। গাজার মানুষ দুর্ভিক্ষের সম্মুখীন হচ্ছে বলে ইতিমধ্যেই সতর্ক করেছে জাতিসংঘ। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হাত থেকে তাদের বাঁচাতে জরুরি ভিত্তিতে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো হয়েছে। কিন্তু কিছুই করা হচ্ছে না।
একইভাবে ইসরায়েল গাজার জনগণের ওপর হামলা চালিয়েই যাচ্ছে। প্রতিদিনই প্রাণ হারাচ্ছে মানুষ। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে শীতের তীব্রতা। যদিও প্রাপ্তবয়স্করা একরকম সামলাচ্ছেন, নবজাতক ও শিশুদের অবস্থা নাজুক। তারা ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। প্রচণ্ড ঠান্ডায় জমে এক নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। অতিরিক্ত ঠান্ডায় হাইপোথার্মিয়ায় শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। খান ইউনিস হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রধান আহমেদ আল-ফাররা বলেছেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে হাইপোথার্মিয়ায় আরও দুই শিশু মারা গেছে।
৭ অক্টোবর, ২০২৩-এ, হামাস ইসরায়েল আক্রমণ করে। এতে প্রায় ১১৬০ জন ইসরায়েলি বেসামরিক নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন। হামাস ২৫০ জনকে জিম্মি করেছে। জবাবে গাজায় পাল্টা হামলা চালায় ইসরাইল। এরপর থেকে ১৪ মাস ধরে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন অব্যাহত রয়েছে। এই ১৪ মাসের যুদ্ধে গাজা উপত্যকায় মানবিক বিপর্যয় চলছে। ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজায় অন্তত ৪৫ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। ২.৩ মিলিয়ন গাজাবাসী বাস্তুচ্যুত হয়েছে। খাদ্য, পানি ও চিকিৎসা সামগ্রীর তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। হাসপাতালগুলোতেও রয়েছে মানবিক সংকট।
এমন পরিস্থিতিতে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আলোচনা চললেও কোনো অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না। হামাস ও ইসরায়েলের পারস্পরিক অভিযোগের কারণে বারবার যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব বিলম্বিত হচ্ছে। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে একের পর এক শর্ত জুড়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে হামাস। যা তারা অগ্রহণযোগ্য বলে দাবি করেন। ফলে যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছাতে বিলম্ব হচ্ছে। আর হামাসের হাতে জিম্মিদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হচ্ছে। এতেই জিম্মিদের পরিবারে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তার পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করছেন ইসরাইলবাসি । তবে এবার হামাসের হাতে জিম্মিদের মুক্তির নির্দেশ দিয়েছেন নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী ২০ জানুয়ারি আবারও মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন। তিনি বলেছেন, ক্ষমতা গ্রহণের আগে জিম্মিদের মুক্তি না দিলে হামাসকে কঠিন পরিণতির মুখোমুখি হতে হবে।