ইসরায়েল যথার্থ জবাব পাবে: ইরানের প্রেসিডেন্ট
ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেছেন, “আমরা শুধু যুদ্ধই দেখি না। দেশ ও জাতির অধিকারের জন্য আমি যুদ্ধ প্রতিরোধ করব। ইহুদি-বিরোধী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইসরাইলকে আক্রমণের ‘যথাযথ’ প্রতিশোধ নেওয়া হবে। রোববার নিউজ-আল আরাবিয়া এ কথা বলেন।
এদিকে, দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেছেন, ইসরায়েলের হামলার জবাব কীভাবে দেওয়া হবে তা ইরানের কর্মকর্তারা সিদ্ধান্ত নেবেন। আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেছেন, ইরানের ওপর ইসরায়েলের হামলাকে অবমূল্যায়ন করা উচিত নয়,আবার অতিরঞ্জিত করাও উচিত নয়।
এদিকে ইরানের হামলাকে সুনির্দিষ্ট ও শক্তিশালী বলে মন্তব্য করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তিনি বলেন, এই হামলার মাধ্যমে ইসরায়েলের সব লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে।
শুক্রবার রাতে ইরানের সামরিক স্থাপনায় হামলা চালায় ইসরাইল। বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে তেহরানের আশপাশের এলাকা। হামলার সময় ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট বাঙ্কারের ভেতরে ছিলেন। তারা তেল আবিবে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দফতরের একটি আন্ডারগ্রাউন্ড রুমে (বাঙ্কার) ছিল। সেখান থেকে তারা এই হামলার নির্দেশনা দেন।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলেছে যে তারা ইরানে “নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তু” আক্রমণ করছে। এক বিবৃতিতে দেশটির সেনাবাহিনী বলেছে, ইসরায়েলের ওপর ইরানের হামলার জবাবে তারা ইরানের সামরিক স্থাপনায় সুনির্দিষ্ট হামলা চালিয়েছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, তেহরানে বেশ কয়েকটি শক্তিশালী বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। রাজধানীর কাছের শহর কারাজেতেও বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় এক বাসিন্দার বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিনি তেহরানে সাতটি বিস্ফোরণ গণনা করেছেন। এসব বিস্ফোরণে আশপাশের এলাকা কেঁপে ওঠে।
এদিকে, মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র সেন স্যাভেট হামলার বিষয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। তিনি বলেন, ইসরাইল বিশেষভাবে আত্মরক্ষার জন্য ইরানের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনায় হামলা চালাচ্ছে। এটি ইরানের ১ অক্টোবরের হামলার প্রতিক্রিয়া।
গত বছরের অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনি গাজায় নির্বিচারে হামলা চালাচ্ছে ইসরাইল। সম্প্রতি তারা লেবাননে ব্যাপক হামলা চালাচ্ছে। এসব হামলায় সশস্ত্র সংগঠন হামাস ও হিজবুল্লাহর প্রধান নিহত হওয়ার পর গত ১ অক্টোবর ইসরায়েলে প্রায় ২০০টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ইরান। গত ছয় মাসে এটি ছিল ইসরায়েলের ওপর ইরানের দ্বিতীয় হামলা। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট গত সপ্তাহে বলেছিলেন যে ইসরায়েলের ক্ষতি করার চেষ্টা করার জন্য শত্রুকে “উচ্চ মূল্য” দিতে হবে।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেছেন, ইসরাইল ইরানকে ভুল গণনা করেছে। সেটি ইরানকে শুধরে দিতেই হবে। রোববার (২৭ অক্টোবর) সোশ্যাল মিডিয়া এক্স-এ এক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন। খামেনি লিখেছেন, দুই রাত আগে ইহুদিদের (ইসরায়েল) হামলা বাড়ানো বা কমানোর কোনো সুযোগ নেই।
শনিবার মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত রাজধানী তেহরান ও দুটি পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশে বিভিন্ন সামরিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। তারা ইরানের বেশ কয়েকটি সামরিক ও ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটি লক্ষ্য করে।
ইসরায়েলকে হুমকি দিয়ে ইরানের প্রধান ধর্মীয় নেতা বলেছেন, দুই দিন আগে ইহুদিবাদী সরকার (ইসরায়েল) যে অপরাধ করেছে তা হালকাভাবে নেওয়া যায় না। বাড়াবাড়ি করা যাবে না। ইরানী জাতির শক্তি, ক্ষমতা, উদ্যোগ ও ইচ্ছাকে তারা এখনো সঠিকভাবে বুঝতে পারেনি। এটা তাদের বোঝাতে হবে।