আহত ফিলিস্তিনিকে গাড়ির সামনে বেঁধে নিয়ে গেল বর্বর ইসরায়েলি বাহিনী
ইসরায়েলি সেনা অভিযানের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এতে দেখা যাচ্ছে একজন মধ্যবয়সী ব্যক্তিকে বর্বর ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যানের সামনে বেঁধে রাখা হয়েছে। এই ঘটনায়, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে যে তাদের বাহিনী পশ্চিম তীরের জেনিন শহরে একটি অভিযানের সময় আহত ফিলিস্তিনি ব্যক্তিকে তাদের গাড়ির সামনে বেঁধে প্রোটোকল লঙ্ঘন করেছে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছে। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে যে অভিযানের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন ওই ব্যক্তি। তিনি এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ছিলেন। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, ঘটনার তদন্ত করা হবে।
আহত ফিলিস্তিনি পরিবার জানিয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনী তাকে আহত করার পর একটি অ্যাম্বুলেন্স খুঁজতে গিয়ে তাকে আটক করে এবং পরে তাকে একটি সাঁজোয়া যানের বনেটের সাথে বেঁধে রাখে। পরে অবশ্য ওই ব্যক্তিকে চিকিৎসার জন্য রেড ক্রিসেন্টে স্থানান্তর করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, আহত ব্যক্তির নাম মুজাহিদ আজমি। তারা তাকে স্থানীয় বাসিন্দা বলেও শনাক্ত করেন।
এক বিবৃতিতে, ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী বলেছে যে শনিবার (২২ জুন) ওয়াদি বুরকিন এলাকায় সন্দেহভাজনদের ধরতে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান চলাকালীন ফিলিস্তিনি সন্ত্রাসীরা ইসরায়েলি সেনাদের ওপর গুলি চালায়। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী পাল্টা জবাব দেয় এবং বন্দুক যুদ্ধের সময় একজন সন্দেহভাজন আহত ও গ্রেফতার হয়।
বিবৃতিতে যোগ করা হয়েছে যে সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে আদেশ এবং স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং নীতি লঙ্ঘন করে একটি গাড়ির সাথে বেঁধে রাখা হয়েছিল। আইডিএফ আরও বলেছে, ঘটনার ভিডিওতে যা দেখা যাচ্ছে তা ইসরায়েলি বাহিনীর আচরণ ও মূল্যবোধের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ঘটনার তদন্ত করে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে হামলা চালায়। জবাবে ইসরায়েল গাজায় পাল্টা হামলা চালায়। তাদের নৃশংস হামলায় এ পর্যন্ত প্রায় ৩৮,০০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
ইসরায়েল বিশ্বের সবচেয়ে নৃশংস সেনাবাহিনী: জাতিসংঘের তদন্ত কমিশন
ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি বর্বররা চলছে। যার নেতৃত্বে রয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। নারী থেকে ফিলিস্তিনি বৃদ্ধ, নিষ্পাপ শিশুরাও তাদের বর্বরতার হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না। যা সারা বিশ্বের মানুষকে নাড়া দিচ্ছে। জাতিসংঘের তদন্ত কমিশনের সদস্য ক্রিস সিডোটি ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে বিশ্বের সবচেয়ে ‘বর্বর’ বলে অভিহিত করেছেন।
২০২৩ সালের অক্টোবরে, জাতিসংঘের তদন্ত কমিশনের সদস্যরা ইসরায়েলি বাহিনী এবং হামাস যোদ্ধাদের দ্বারা সংঘটিত নির্যাতনের তদন্তের ফলাফল উপস্থাপন করেছিলেন। এ সময় তিনি বার্তা সংস্থাগুলোকে বলেন, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বিশ্বের অন্যতম অপরাধী বর্বর সেনাবাহিনী।
এছাড়াও, তদন্ত কমিশনের প্রধান এবং মানবাধিকার বিষয়ক জাতিসংঘের প্রাক্তন হাইকমিশনার এবং দক্ষিণ আফ্রিকার হাইকোর্টের সাবেক বিচারপতি নাভি পিলে ইসরায়েলি যুদ্ধাপরাধের মাত্রাকে “অভূতপূর্ব” বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, তার কমিশন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রধান প্রসিকিউটর করিম খানের কাছে ৭ হাজার প্রমাণ জমা দিয়েছে। যেখানে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালানটোকের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ রয়েছে।তবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী এসব অভিযোগ আমলে নিচ্ছেন না
বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। তিনি দাবি করেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী “বিশ্বের সবচেয়ে নৈতিক সেনাবাহিনী”।
আর জাতিসংঘের তদন্ত কমিশন তার দাবি মানতে রাজি হয়নি। রিপোর্টের উদ্ধৃতি দিয়ে কমিশনের সদস্য ক্রিস সিডোটি বলেছেন, “আপনি উপসংহারে আসতে পারেন যে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী সবচেয়ে অপরাধমূলক সেনাবাহিনীর একটি।” মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ইসরাইল দায়ী। তারা ফিলিস্তিনে ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। পুরুষ এবং ছেলেদের লক্ষ্য করে লিঙ্গ নিপীড়ন; জোরপূর্বক অভিবাসন; এবং তাদের উপর নির্যাতন, অমানবিক ও নিষ্ঠুর আচরণ করা হয়।’
আদিকাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত ইহুদিদের কর্মকাণ্ড পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, তারা সমগ্র বিশ্বের কাছে বিষ ও পয়জন । তাদের সকল কর্মকান্ডই মুসলিম বিরোধী। তা সত্ত্বেও বিশ্বের ৫০টি মুসলিম দেশের মধ্যে ২০টি বুদ্ধিহীন, মেরুদণ্ডহীন মুসলিম রাষ্ট্র ইসরাইলকে স্বীকৃতি দিয়েছে।
মানবাধিকারের পতাকাবাহী পশ্চিমা দেশ ইসরায়েলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও অংশীদার। পশ্চিমা মানবাধিকার বুলি ইসরায়েলের কাছে অন্ধ। ইসরায়েলের পারমাণবিক অস্ত্রের সক্ষমতা সম্পর্কেও পশ্চিমারা অন্ধ। পশ্চিম ও ইসরাইল এক দেহ, এক আত্মা। সুতরাং এটা পরিষ্কার এবং প্রমাণিত যে ইসরায়েলের বর্বরতার সমাধান পশ্চিমাদের দিয়ে হবে না। যারা পশ্চিমাদের কাছে ফিলিস্তিন সমস্যার সমাধান দেওয়ার আশা করেন তারা হয় একদল মূর্খ বা অন্ধ স্বার্থপর এবং স্বপন্ডিতি পশ্চিমাসেবক। ইসরায়েলের লাগাম ধরে রাখতে হলে বিশ্বে ক্ষমতার ভারসাম্য তৈরি করতে হবে। এতে মধ্যপ্রাচ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য সৃষ্টি হবে এবং ইসরায়েলের দাম্ভিকতা, বর্বরতা, বেপরোয়া আগ্রাসন ও হত্যা বন্ধ হবে। ফিলিস্তিনিরা তাদের অধিকার ও স্বাধীনতা ফিরে পাবে।
read more…
1 Comment