September 19, 2024

Warning: Undefined array key "tv_link" in /home/admin/web/timetvusa.com/public_html/wp-content/themes/time-tv/template-parts/header/mobile-topbar.php on line 53
৪৫ বছর ধরে মসজিদুল হারাম (কাবা শরীফের) মুয়াজ্জিন যিনি

৪৫ বছর ধরে মসজিদুল হারাম (কাবা শরীফের) মুয়াজ্জিন যিনি

৪৫ বছর ধরে মসজিদুল হারাম (কাবা শরীফের) মুয়াজ্জিন যিনি

৪৫ বছর ধরে মসজিদুল হারাম (কাবা শরীফের) মুয়াজ্জিন যিনি

মুয়াজ্জিনঃ

মুয়াজ্জিন (আরবি: مُؤَذِّن= ঘোষণাকারী, আহ্বানকারী) হল সেই ব্যক্তি যিনি দিনে পাঁচবার (ফজর যোহর আসার মাগরিব এশা এর নামাজ) মিনার বা অন্য কোন নির্ধারিত স্থান থেকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের জন্য আহবান করেন অর্থাৎ নামাজের ঘোষণা দেন বা আযান দেন   তিনিই মুয়াজ্জিন । মুসলিমদের জন্য সঠিক নামাজের সময়সূচী নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন মুয়াজ্জিন । আল্লাহর রাসূলের(স.) হাদিস দ্বারা মুয়াজ্জিনের অনেক ফজিলত মর্যাদার কথা বলা হয়েছে ।

আল্লাহর কোরআনে সূরা আরাফের ৪৪ নম্বর আয়াতে এসেছে ;

فَاَذَّنَ مُؤَذِّنٌۢ بَیۡنَهُمۡ  

…অতঃপর জনৈক ঘোষক ঘোষণা করবে…।

আজান দেওয়ার প্রচলন এবং নিয়ম নীতি প্রথম হিজরীতে প্রতিষ্ঠিত হয়। নবী করীম (সাঃ) হযরত বেলাল ইবনে রাবাহ (রাঃ) কে আজান প্রদানকারী প্রথম মুয়াজ্জিন হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন। বেলালের কণ্ঠ ছিল সুরেলা, সুমধুর ও মায়াবী । মদিনাবাসী তাঁর আযান শোনার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন। হজরত বেলাল (রা.) ছিলেন তাদের মধ্যে একজন যারা ইসলামের প্রতিকূলতার মধ্যেও ঈমানের আলোয় আলোকিত হয়েছিলেন এবং চরম প্রতিকূলতার মধ্যেও তা প্রকাশ্যে ঘোষণা করার সাহস পেয়েছিলেন।

হজরত বেলাল (রা.) যুদ্ধ ও সফরে রাসূল (সা.)-এর সঙ্গে থাকতেন এবং সঠিক সময়ে আযান দিতেন। মক্কা বিজয়ের দিন বেলাল (রা.) কাবার উপরে উঠে উচ্চস্বরে আযান দেন।

মহানবী (সা.) পৃথিবী ছেড়ে চলে যাওয়ার পর প্রিয় নবীর স্মৃতি তাঁর হৃদয় জুড়ে বিজড়িত ছিল। রাসূল ছাড়া মদীনায় থাকা তাঁর পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়ে। তখন তিনি মদীনা ছেড়ে সিরিয়ার দামেস্কে চলে যান।

সেই বেলাল রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহুর উত্তরসূরী শায়খ আলী আহমদ মোল্লা ৪৫ বছর ধরে পবিত্র কাবার মুসল্লিদের সুরেলা সুরে আজান শুনিয়ে মুগ্ধ করে চলছেন। তার আজানের সুর গত অর্ধশতক ধরে হাজিদের কাছে খুবই পরিচিত। তিনি পবিত্র মসজিদের সবচেয়ে বিখ্যাত এবং সিনিয়র মুয়াজ্জিনদের একজন। দীর্ঘক্ষণ নামাযের জন্য আযান দেওয়ার কারণে অনেকেই তাকে ইসলামের প্রথম মুয়াজ্জিন বিলাল (রা.)-এর নামের সাথে মিলেমিশে ‘বিলাল আল-হারাম’ বা হারাম শরীফের বিলাল উপাধি দিয়েছেন।

বর্তমানে তিনি ‘শাইখুল মুয়াজ্জিন’-বা  প্রধান মুয়াজ্জিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার চাচাতো ভাই শায়খ আব্দুল মালিক মোল্লার মৃত্যুর পর, তিনি মসজিদ আল-হারামের প্রধান মুয়াজ্জিন নিযুক্ত হন।

শায়খ আলী আহমদ মোল্লা ১৯৪৫ সালে মক্কা শহরের বিখ্যাত সৌক আল-লাইল এলাকায় এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পূর্বপুরুষদের একটি রেওয়ায়েত পবিত্র মসজিদ আল-হারামে আজান দেওয়া। তার দাদা, বাবা, চাচা, ভাই এবং তার অনেক আত্মীয় এই দায়িত্ব পালন করে।

শেখ আলী মোল্লা শৈশবেই মসজিদ আল-হারামে শেখ আশুরের অধীনে প্রাথমিক শিক্ষা শুরু করেন। তারপর মাসাইতে অবস্থিত রহমানিয়া মাদ্রাসায় পড়াশুনা করেন। ১৯৭১ সালে, তিনি রিয়াদের ইনস্টিটিউট অফ টেকনিক্যাল এডুকেশন থেকে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। ১৯৭৫ সালে, তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে মসজিদ আল-হারামের মুয়াজ্জিন হিসাবে নিযুক্ত হন। মসজিদে আযান দেওয়ার পাশাপাশি নিজের ব্যবসাও দেখাশোনা করেন।

১৩৯৫ হিজরিতে ১৩ বছর বয়সে তিনি বাব আল জিয়াদায় ফজরের প্রথম আজান দেন। তখন মাইক্রোফোন ব্যবহার করা হতো না। তাই আশেপাশের কিছু লোক শুনতে পেত। এরপর তাকে বাব আল মাহাকামার মুয়াজ্জিন নিযুক্ত করা হয়। পরে তিনি পুরো মসজিদ আল-হারামে মুয়াজ্জিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

মসজিদুল হারামে লাউডস্পিকার ব্যবহার করার আগেই শায়খ আলী মোল্লা আযান দেওয়া শুরু করেন। তখন মুয়াজ্জিনরা মসজিদুল হারামের সাতটি মিনার থেকে নামাজের আযান দিতেন। প্রধান মুয়াজ্জিন জমজম কূপের পাশে ‘আল মাকাম আল শাফেয়ী’ থেকে আজান শুরু করতেন। অন্যরা এটি পুনরাবৃত্তি করতেন। আজানের এই প্রথা শুরু হয়েছিল উসমানীয় শাসনামলে। এই নিয়ম এখনও তুরস্কে প্রচলিত আছে।

শেখ আলী মোল্লা বলেন, আমার জীবনের সবচেয়ে বড় সুসংবাদ ছিল যেদিন আমার বাবা আমাকে বলেছিলেন যে একদিন আমি মসজিদুল হারামের মুয়াজ্জিন হব। বিলাল আল-হারাম উপাধি পেয়ে আমি খুবই অভিভূত। সৌদির সহায়তায় নির্মিত একটি মসজিদ উদ্বোধন করতে ব্রিটেনে গেলে সেখানকার মুসলমানরা আমাকে এই উপাধি দেন। পত্রিকায় প্রকাশিত হলে এই শিরোনামটি সবার জানা হয়ে যায়।

১৯৭৯ সালে মসজিদ আল-হারাম অবরোধের সময় ২৩ দিনের জন্য নামাজের আযান বন্ধ ছিল। অবরোধ তুলে নেওয়ার পর তিনিই প্রথম মাগরিবের আযান দেন। এ সময় বাদশাহ খালেদ মসজিদে উপস্থিত ছিলেন।

কিন্তু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট সম্পূর্ণ ভিন্ন, এখানে সব সময় সব এলাকার মসজিদে প্রভাবশালীদের মন জুগিয়ে চলতে হয়।। মতের বিরুদ্ধে গেলে চাকরি নিয়ে শুরু হয় টেনশন। মুয়াজ্জিন-ইমামরা সব সময় চাকরি হারানোর ভয়ে থাকেন। তাই সর্বোচ্চ ইসলামিক প্রতিষ্ঠান, মসজিদ কমিটিকে রাজনীতির বাইরে রাখা জরুরি বলে মনে করেন আলেমরা।

আরও পড়ুন

নিউইয়র্কে প্রকাশ্যে আজানের অনুমতিঃ মুসলিমদের মধ্যে আনন্দের জোয়ার

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X