November 22, 2024
হামাস ইসরাইল সামরিক শক্তি

হামাস ইসরাইল সামরিক শক্তি

হামাস ইসরাইল সামরিক শক্তি

হামাস ইসরাইল সামরিক শক্তি

নিজেদের সামরিক শক্তি ও এবং গোয়েন্দা সংস্থা সবচেয়ে বেশি তৎপর বলে ঘোষণা দেওয়া দখলদার ইসরাইলের ভিতরে; আজীবন অত্যাচারিত নিষ্পেষিত নির্যাতিত দেশ প্রেমিক স্বতস্র হামাস বাহিনী ঢুকে যাওয়ার পর সারা বিশ্ব চমকে গেছে কোথায় ইসরাইলের বিশ্ব কাঁপানো গোয়েন্দা বাহিনীর নজরদারি?  কোথায় তাদের অস্ত্রের বাহাদুরি?  আলোচনা করা যাক কি শক্তি নিয়ে নেমেছে হামাস আর কতটুক শক্তিতে আছে ইসরাইল ।

যদিও রণকৌশলে অনেক সময় সামরিক শক্তির চেয়ে বুদ্ধিমত্তার শক্তি বেশি কাজে লাগে । আর ইসলামের সকল যুগের ইতিহাস তেমনিই । এরপরেও হামাস সহকারে ফিলিস্তিনের হারানোর আর কিছুই নেই । ফিলিস্তিনে এরকম পরিবার খুঁজে পাওয়া খুবই কঠিন হবে যে পরিবারে ইজরায়েলের অবৈধ হামলায়শহীদের সংখ্যা নেই ,মা বোন হারানোর সংখ্যা নেই  ,এতিম বিধবা নেই ।

গত ৬ অক্টোবর রাতে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলের ওপর ভয়াবহ রকেট হামলা চালায় হামাস। হামাসের এই হামলার পর ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী গাজায় পাল্টা বিমান হামলা চালাচ্ছে। প্রতিশোধমূলক হামলায় দুই দেশের ১,৩০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। আহত হয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। দুই দেশের মধ্যে এখনো লড়াই চলছে। ফলে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে মনে করছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা।

এরই মধ্যে হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী। ইসরায়েলি মন্ত্রিসভাও  ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের অনুমোদন দিয়েছে। এখন প্রশ্ন হল এই যুদ্ধে কে জিতবে বা সামরিক শক্তির দিক থেকে কে এগিয়ে- হামাস নাকি ইসরায়েলি সশস্ত্র বাহিনী?

এই প্রশ্নের সরাসরি উত্তর দেওয়া কঠিন। এমনকি হামাসের সামরিক শক্তি এবং ইসরায়েলি সশস্ত্র বাহিনীর সরাসরি তুলনা করাও সম্ভব নয়। কারণ হামাস কোনো প্রচলিত সেনাবাহিনী নয়। তারা ফিলিস্তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দেশ-প্রেমী  সংগঠন মাত্র।

তবে হামাসের এবারের অভিযান ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’ অন্য সবগুলোর থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। নতুন অস্ত্র ব্যবহারের পাশাপাশি হামাস ভূমি, সমুদ্র ও আকাশ- এই তিন দিক থেকে ইসরায়েলে হামলা চালিয়েছে। ফলে সেখান থেকে তাদের সামরিক শক্তি সম্পর্কে কিছুটা ধারণা পাওয়া যায়।

হামাসের সামরিক শক্তি

শনিবার পূর্ণ সামরিক স্টাইলে ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। হামাস এই অভিযানে এমন সব অস্ত্র ব্যবহার করেছে যা আগে কখনো দেখা যায়নি।

হামাসের হামলার পর থেকে বিভিন্ন ভিডিও প্রচার হচ্ছে। ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে হামাস যোদ্ধারা শক্তিশালী গ্লাইডার ব্যবহার করে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে প্রবেশ করছে। ইসরায়েলের নিরাপত্তা চৌকি এড়াতে তারা এই পথ বেছে নেয়। এছাড়া যুদ্ধ ট্যাংকের চোখ এড়াতে ইসরায়েলে প্রথমবারের মতো সশস্ত্র ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে।

হামাস বরাবরই ইসরায়েলে হামলা চালাতে রকেট ব্যবহার করে আসছে। যাইহোক, এই বছরের রকেটটি ৭০ কিলোমিটার দূরে তেল আবিবে আঘাত হানে। বোঝাই যায় যে এবার খুব উন্নত গাইডেন্স  সিস্টেম ব্যবহার করা হয়েছে।

গত শনিবার হামাস যোদ্ধারা সমুদ্রপথে ইসরায়েলে প্রবেশের চেষ্টা করে। তবে, তাদের বেশিরভাগ নৌকা ইসরায়েলি বাহিনী বাধা দেয়। হামাসের সামরিক শাখা আল-কাসাম ব্রিগেড এবার সব হামলা চালিয়েছে।

আরেকটি দিক হলো, হামাস এবার হামলা চালানো ছাড়াও অনেক ইসরাইলি সামরিক ও বেসামরিক নাগরিককে জিম্মি করেছে। পরবর্তীতে এগুলোকে মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করাই উদ্দেশ্য। এগুলো  আদর্শ অভিযানের নমুনা ।

এবার রকেট হামলার পাশাপাশি সংগঠনটির প্রায় এক হাজার যোদ্ধাও ইসরায়েলের অভ্যন্তরে হামলা চালায়। ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্রের জন্মের পর এই প্রথম ইহুদি রাষ্ট্রে এমন হামলার ঘটনা ঘটল।

ইসরায়েলের সামরিক শক্তি

ইসরায়েলি গোয়েন্দাদের খ্যাতি বিশ্বব্যাপী। তবে এবার হামাসের হামলার বিষয়ে তারা বিন্দুমাত্র টেরও পারেনি। ফলে দেশটিকে এখন তার প্রচলিত সামরিক শক্তির ওপর অনেক বেশি নির্ভর করতে হচ্ছে।

সশস্ত্র বাহিনীঃ

মাত্র ৮৫ লাখ জনসংখ্যার একটি ছোট দেশ হওয়া সত্ত্বেও, ইসরায়েলের সামরিক শক্তি শক্তিশালী বলে নিজেদের দাবি । দ্রুত প্রযুক্তি এবং শক্তিশালী পশ্চিমা দেশগুলির সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কারণে দেশটি একটি দুর্দান্ত যুদ্ধ বাহিনী গড়ে তুলেছে। গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ারের মতে, ইসরায়েলের প্রায় ১৭০,০০০ সক্রিয় সৈন্য রয়েছে। এর বাইরে রিজার্ভ রয়েছে আরও ৪ লাখ ৪৫ হাজার।

বিমান বাহিনীঃ

ইসরায়েলি বিমান বাহিনী বিশ্বের অন্যতম সেরা। তাদের রয়েছে উন্নত প্রযুক্তি-যুদ্ধবিমান। তাদের পাইলটরাও অনেক অভিজ্ঞ। তারা সিরিয়া, লেবানন, গাজা এমনকি মিশরের সিনাই উপদ্বীপে লক্ষ্যবস্তুতে নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে। এর বহরে ২৫০ টি F-৩৫  Lightning-২  যুদ্ধবিমান রয়েছে। এগুলো পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান। এছাড়া F-৩৫ S মডেলের প্রায় ৫০ টি ফাইটার জেট রয়েছে।

নৌবাহিনীঃ

সেনাবাহিনী ও বিমানবাহিনীতে শক্তিশালী হলেও নৌবাহিনীর দিক থেকে ইসরাইল অনেকটা  পিছিয়ে। তাদের রয়েছে মাত্র  ৫টি সাবমেরিন, ৩টি করভেট, ৮টি মিসাইল বোট এবং ৪৫টি পেট্রোল বোট।

পারমাণবিক শক্তিঃ

তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ইসরাইল একটি পারমাণবিক শক্তিধর দেশ। ফলে তাদের হাতেই তুরুপের তাস মনে করছে নেতানিয়াহু ।

 উল্লেখ্য, ইসরায়েলি মুদ্রা শেকেলের দাম কমেছে

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় সশস্ত্র শাসকগোষ্ঠী হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান যুদ্ধে তেলের দাম বাড়তে শুরু করেছে।সংঘাত বাড়ার সাথে সাথে মূল্য হ্রাস পেয়েছে। ইসরায়েলি মুদ্রা শেকেলের ,

প্রায় আট বছরের মধ্যে ডলারের বিপরীতে শেকেল সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। হামাস ইসরায়েলের অভ্যন্তরে নাটকীয় আক্রমণ শুরু করার পর দেশটির আর্থিক বাজার কঠিন চাপে পড়ছে।

1 Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X