November 24, 2024
শায়খ আলী আহমদ মোল্লাঃ৪৫ বছর ধরে মসজিদুল হারামের মুয়াজ্জিন

শায়খ আলী আহমদ মোল্লাঃ৪৫ বছর ধরে মসজিদুল হারামের মুয়াজ্জিন

শায়খ আলী আহমদ মোল্লাঃ৪৫ বছর ধরে মসজিদুল হারামের মুয়াজ্জিন

শায়খ আলী আহমদ মোল্লাঃ৪৫ বছর ধরে মসজিদুল হারামের মুয়াজ্জিন

শায়খ আলী আহমদ মোল্লা ৪৫ বছর ধরে পবিত্র কাবার মুসল্লিদের সুরেলা সুরে আজান শুনিয়ে  মুগ্ধ করে চলেছেন। তার আজানের সুর গত অর্ধশতক ধরে হাজিদের কাছে খুবই পরিচিত। তিনি পবিত্র মসজিদের সবচেয়ে বিখ্যাত এবং সিনিয়র মুয়াজ্জিনদের একজন। ইসলামের প্রথম মুয়াজ্জিন বিলাল (রা.)-এর নামানুসারে অনেকেই তাকে ‘বিলাল আল-হারাম’ বা হারাম শরীফের বিলাল বলে ডাকেন।

বর্তমানে তিনি ‘শাইখুল মুয়াজ্জিন’-বা প্রধান মুয়াজ্জিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার চাচাতো ভাই শায়খ আব্দুল মালিক মুল্লার মৃত্যুর পর, তিনি মসজিদ আল-হারামের প্রধান মুয়াজ্জিন নিযুক্ত হন।

শেখ আলী আহমদ মোল্লা ১৯৪৫ সালে মক্কা শহরের বিখ্যাত সৌক আল-লাইল এলাকায় এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পূর্বপুরুষদের একটি রেওয়াজ ছিল  পবিত্র মসজিদ আল-হারামে আজান দেওয়া। তার দাদা, বাবা, চাচা, ভাই এবং তার অনেক আত্মীয় এই দায়িত্ব পালন করেছেন।

শায়খ আলী মোল্লা শৈশবেই মসজিদ আল-হারামে শায়খ আশুরের অধীনে প্রাথমিক শিক্ষা শুরু করেন। তারপর মাসাইতে অবস্থিত রহমানিয়া মাদ্রাসায় পড়াশুনা করেন। ১৯৭১সালে, তিনি রিয়াদের ইনস্টিটিউট অফ টেকনিক্যাল এডুকেশন থেকে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। ১৯৭৫ সালে, তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে মসজিদ আল-হারামের মুয়াজ্জিন হিসাবে নিযুক্ত হন। মসজিদে আযান দেওয়ার পাশাপাশি নিজের ব্যবসাও দেখাশোনা করেন।

১৩৯৫ হিজরিতে ১৩ বছর বয়সে তিনি বাব আল জিয়াদায় ফজরের প্রথম আজান দেন। তখন মাইক্রোফোন ব্যবহার করা হতো না। তাই আশেপাশের কিছু লোক শুনতে পায়। এরপর তাকে বাব আল মাহাকামার মুয়াজ্জিন নিযুক্ত করা হয়। পরে তিনি পুরো মসজিদ আল-হারামে মুয়াজ্জিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

মসজিদুল হারামে লাউডস্পিকার ব্যবহার করার আগেই শায়খ আলী মোল্লা আযান দেওয়া শুরু করেন। তখন মুয়াজ্জিনরা মসজিদুল হারামের সাতটি মিনার থেকে নামাজের আযান দিতেন। প্রধান মুয়াজ্জিন জমজম কূপের পাশে ‘আল মাকাম আল শাফেয়ী’ থেকে আজান শুরু করতেন। অন্যরা এটি পুনরাবৃত্তি করতেন। আজানের এই প্রথা শুরু হয়েছিল উসমানীয় শাসনামলে। এই নিয়ম আজও তুরস্কে প্রচলিত আছে।

শেখ আলী মোল্লা বলেন, আমার জীবনের সবচেয়ে বড় সুসংবাদ ছিল যেদিন আমার বাবা আমাকে বলেছিলেন যে একদিন আমি মসজিদুল হারামের মুয়াজ্জিন হব। বিলাল আল-হারাম উপাধি পেয়ে আমি খুবই অভিভূত। সৌদির সহায়তায় নির্মিত একটি মসজিদ উদ্বোধন করতে ব্রিটেনে গেলে সেখানকার মুসলমানরা আমাকে এই উপাধি দেন। পত্রিকায় প্রকাশিত হলে এই শিরোনামটি সবার জানা হয়ে যায়।

১৯৭৯ সালে মসজিদ আল-হারাম অবরোধের সময় ২৩ দিনের জন্য নামাজের আযান বন্ধ ছিল। অবরোধ তুলে নেওয়ার পর তিনিই প্রথম মাগরিবের আজান দেন। এ সময় বাদশাহ খালেদ মসজিদে উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X