March 31, 2025
ইসলামে ঈদ এল যেভাবে: ঈদের ইতিহাস

ইসলামে ঈদ এল যেভাবে: ঈদের ইতিহাস

ইসলামে ঈদ এল যেভাবে ঈদের ইতিহাস

ইসলামে ঈদ এল যেভাবে: ঈদের ইতিহাস

ঈদ শব্দটি আরবি। এর অর্থ খুশি, আনন্দ, উদযাপন, উৎসব, প্রত্যাবর্তন ইত্যাদি। শব্দের মূল রূপ হল আউদ, যার অর্থ প্রত্যাবর্তন।আরবদের কাছে ঈদকে এমন একটি সময়কে বলা হতো যখন আনন্দ এবং দুঃখ ফিরে আসে। ঈদ নামকরণের কারণ হল এটি প্রতি বছর ফিরে আসে এবং এর আসল রূপ হল আউদ, যার অর্থ প্রত্যাবর্তন।

ইসলামী পরিভাষায় ঈদ

মুসলমানরা বছরে যে দুটি দিন আনন্দ এবং উৎসবের দিন হিসেবে উদযাপন করে তাকে ঈদ বলা হয়।

মদিনায় প্রথম ঈদ

মক্কায় নবী (সাঃ) এর জীবনের ১৩ বছর সময় রোজা এবং ঈদের নিয়ম প্রচলিত ছিল না। প্রথম বা কারো কারো মতে দ্বিতীয় হিজরিতে ঈদের নামাজের নিয়ম চালু হয়েছিল। ৬২২ খ্রিস্টাব্দে তিনি আল্লাহর নির্দেশে মদিনায় হিজরত করেন। মদিনায় আগমনের আগে নওরোজ এবং মেহেরজান নামে দুটি উৎসব প্রচলিত ছিল। মদিনার লোকেরা নববর্ষ উপলক্ষে নওরোজ এবং বসন্ত উপলক্ষে মেহেরজান উদযাপন করত।

আনাস ইবনে মালিক (রা.) বর্ণনা করেছেন যে, জাহিলি বা অজ্ঞতার  যুগের অধিবাসীরা প্রতিবছর দুটি দিনে উৎসব করত। মহানবী (সা.) মদিনায় এসে বললেন, ‘তোমাদের জন্য দুটি দিন ছিল, তোমরা ফুর্তি করতে। আল্লাহ এখন তোমাদের ওই দুটি দিনের বদলে আরও বেশি উত্তম দুটো দিন সুনির্দিষ্ট করে দিয়েছেন—ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা। “

মদিনার অনেক মানুষ নবী (সা.)-এর দাওয়াতের মাধ্যমে ইসলাম গ্রহণ করে। নওরোজ এবং মেহরজান তাদের জন্য নিষিদ্ধ হয়ে যায়। তারা নবী (সা.)-এর কাছে এসে একটি বৈধ উৎসবের আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করে। আরও দুই বছর কেটে গেল। ৬২৪ খ্রিস্টাব্দে রমজানে রোজা ফরজ হয়ে গেল। সেই সময় আল্লাহ জাহিলিয়া যুগের দুটি উৎসবের পরিবর্তে ইসলামে দুটি উৎসব প্রবর্তন করেন। একটি ছিল ঈদুল ফিতর, অন্যটি ছিল ঈদুল আযহা।

এই দুটি উৎসবে মুসলিমরা পারস্পরিক ভালোবাসা, ভ্রাতৃত্ব, বন্ধুত্ব এবং সৌহার্দ্যের এক অনন্য উদাহরণ উপস্থাপন করে। এটি পার্থক্য দূর করে। আল্লাহ্‌ এর আগে অন্য কোন জাতিকে এমন দুটি বরকতময় উৎসব উপহার দেননি।

রাসূলুল্লাহ্‌ (সা.) বলেছেন, ‘রোজাদারের জন্য দুটি আনন্দ রয়েছে। একটি হলো ইফতারের আনন্দ (ঈদুল ফিতর), এবং অন্যটি হলো (পরকালে) আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের আনন্দ।

সেই সময়ে ঈদে বর্তমান ঈদের মতো নতুন পোশাক এবং কেনাকাটার জাঁকজমক ছিল না। তবে খুশি ও আনন্দও কম ছিল না।

রাসূলুল্লাহ্‌ (সা.) ঈদের দিনে ছোট-বড় সকলের আনন্দের দিকে মনোযোগ দিতেন। রাসূলুল্লাহ্‌ (সা.) মদিনার ছোট শিশু-কিশোরদের সাথে আনন্দ করতেন। তিনি শরীয়তের অন্তর্ভুক্ত সকল আনন্দকে অনুমোদন করতেন।

ঈদ কেন উদযাপন করা হয়?

মূলত, পুরো এক মাস রোজা রাখার পর এবং তারাবীহ আদায় করার পর, ঈদের দিনে, আল্লাহ্‌ রোজাদারকে তাদের পরিশ্রমের মূল্য এবং প্রতিদান দেবেন। তিনি জাহান্নামীদের তালিকা থেকে তাদের নাম মুছে ফেলবেন। তাই, রোজাদাররা আনন্দের সাথে দান-খয়রাত করে এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্য ঈদের নামাজ আদায় করে।

রাসূলুল্লাহ (সা.) এই নামাজের প্রতি এতটাই গুরুত্ব দিয়েছিলেন যে ইসলামের প্রাথমিক যুগে নারী ও শিশুদেরও ঈদগাহে নিয়ে যাওয়া হত; এমনকি ঋতুবতী মহিলারাও ঈদগাহে উপস্থিত হতেন এবং একপাশে দাঁড়াতেন।

আল্লাহ তায়ালা ইসলামের রীতি নীতি বজায় রেখে সবাইকে ইসলামের নির্দেশ অনুসারে ঈদ উদযাপন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X