March 2, 2025
রমজানের রোজার গুরুত্ব ও ফজিলত

রমজানের রোজার গুরুত্ব ও ফজিলত

রমজানের রোজার গুরুত্ব ও ফজিলত

রমজানের রোজার গুরুত্ব ফজিলত

রমজান মাস অন্যান্য সকল মাসের তুলনায় উত্তম এবং তাৎপর্যপূর্ণ। এই মাসে অর্জিত জ্ঞানকে অন্য সকল মাসে প্রয়োগ করলে আমাদের জীবন সুন্দর ও আলোকিত হয়। রহমত, ক্ষমা ও মুক্তির বার্তা বহনকারী রমজান নিঃসন্দেহে অন্যান্য মাসের তুলনায় অধিক মর্যাদাবান। একজন ধর্মপ্রাণ মুসলিম হিসেবে আমাদের জীবনে রমজানের গুরুত্ব ও ফজিলত অনেক বেশি।

রমজানে রোজা:

রমজানে রোজা রাখা ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে একটি। ঈমান, নামাজ ও যাকাত এর পরেই রোজা। রোজার আরবি শব্দ হলো সাওম, যার আক্ষরিক অর্থ হলো বিরত থাকা।

পরিভাষায় সাওম বা রোজা  বলতে প্রতিটি সুস্থ, প্রাপ্তবয়স্ক মুসলিম নর-নারীর ভোর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার, নারীর সাথে যৌন মিলন এবং রোজা ভঙ্গকারী সকল কাজ থেকে বিরত থাকার নিয়তকে বোঝানো হয়।

অতএব, রমজান মাসের চাঁদ ওঠার সাথে সাথে, ঋতুস্রাব থেকে মুক্ত প্রতিটি সুস্থ, মুকিম (নিজ এলাকায় অবস্থানকারী) প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ ও প্রাপ্তবয়স্ক নারীর জন্য পুরো রমজান মাস রোজা রাখা ফরজ। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন-

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا كُتِبَ عَلَيْكُمُ الصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى الَّذِينَ مِنْ قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ

‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর রোযা ফরয করা হয়েছে, যেমন ফরয করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর, যেন তোমরা মুত্তাকী হতে পার’।– সূরা বাকারা আয়ত- ১৮৩

অন্য আয়াতে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন-

فَمَنْ شَهِدَ مِنْكُمُ الشَّهْرَ فَلْيَصُمْهُ

‘সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তিই এ মাস পাবে, সে যেন অবশ্যই রোযা রাখে’।– সূরা বাকারাঃ – আয়াত-  ১৮৫

বছরের শ্রেষ্ঠ মাস হলো রমজান

একজন মুমিনের জীবনে রমজান হলো কর্ম ও ইবাদতের বসন্তকালীন মাস। তার চেতনে-অবচেতনে কর্মের আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয় এই মাসে। মাসব্যাপী রোজা রেখে সে সারা বছরের জন্য চলার পাথেয় সংগ্রহ করে।

রোজার প্রতিদান দেন আল্লাহ নিজেই

রোজা এমন একটি আমল যার প্রতিদান আল্লাহ নিজ হাতে  দেন। আল্লাহ্‌ বান্দার রোজাকে নিজের রোজা বলে অভিহিত করেছেন।

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ্ ঘোষণা করেন যে, সওম আমার জন্যই, আর আমিই এর প্রতিদান দেব। যেহেতু সে আমারই সন্তোষ অর্জনের জন্য তার প্রবৃত্তি, তার আহার ও তার পান ত্যাগ করেছে। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৭৪৯২)

রোজাদারের জন্য জান্নাতের বিশেষ দরজা

“সাহল (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ জান্নাতে রাইয়্যান নামক একটি দরজা আছে। এ দরজা দিয়ে কিয়ামতের দিন সওম পালনকারীরাই প্রবেশ করবে। তাদের ব্যতীত আর কেউ এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। ঘোষণা দেয়া হবে, সওম পালনকারীরা কোথায়? তখন তারা দাঁড়াবে। তারা ব্যতীত আর কেউ এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে না। তাদের প্রবেশের পরই দরজা বন্ধ করে দেয়া হবে। যাতে করে এ দরজাটি দিয়ে আর কেউ প্রবেশ না করে”। (সহিহ বুখারি, হাদির: ১৮৯৬)

রোজা মুমিনের জন্য ঢাল সরূপ

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আল্লাহ্ ঘোষণা করেন যে, সওম আমার জন্যই, আর আমিই এর প্রতিদান দেব। যেহেতু সে আমারই সন্তোষ অর্জনের জন্য তার প্রবৃত্তি, তার আহার ও তার পান ত্যাগ করেছে। আর সওম হল ঢাল’

রোজাদারের জন্য আনন্দ

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘রোজাদারের জন্য দুটি আনন্দের মুহূর্ত রয়েছে, যখন সে আনন্দিত হবে—এক. যখন সে ইফতার করে, তখন ইফতারের কারণে আনন্দ পায়। দুই. যখন সে তার রবের সাথে মিলিত হবে তখন তার রোজার কারণে আনন্দিত হবে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৯০৪)

আরও পড়তে

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X