১০০ মিলিয়ন ডলারে নির্মিত হলো মধ্য এশিয়ার সবচেয়ে বড় মসজিদ
মসজিদ:
মসজিদ অর্থ ‘সিজদার স্থান’। ইসলামী পরিভাষায়, নামাজের জন্য নিবেদিত একটি নির্দিষ্ট স্থানকে মসজিদ বলা হয়। মসজিদকে বলা হয় ‘মহান আল্লাহর ঘর’। মসজিদের উৎপত্তি ‘সিজদা’ থেকে। তবে মসজিদ শুধু সিজদার স্থানই নয়। এতে নামাজসহ আরো অনেক কাজ করতে হয়। এ কারণেই প্রথম দিন থেকেই মসজিদকে আল্লাহর অধিকার ও বান্দার অধিকারের কেন্দ্র হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। মসজিদ ইসলামী সমাজের প্রাণকেন্দ্র এবং একটি পবিত্র স্থান। ইসলামী সমাজ ব্যবস্থায়, মসজিদ হল ইবাদতের স্থান, একটি সামাজিক, ধর্মীয় , শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, ন্যায়বিচার ও সম্প্রীতির জন্য একটি অন্যতম স্থান। সম্প্রচার,নেতৃত্ব ও আনুগত্যের একটি মূল পয়েন্ট। তাই মুসলিম সমাজে মসজিদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কাতারের সহায়তায় নির্মিত ১০০ মিলিয়ন ডলারের (১০৮২ কোটি ১৬ লাখ ১০ হাজার টাকা) ‘মসজিদুল ইমাম আবু হানিফা আন নুমান’ মসজিদ সম্প্রতি তাজিকিস্তানে উদ্বোধন করা হয়েছে। এটি মধ্য এশিয়ার বৃহত্তম মসজিদ। তাজিকিস্তানের রাজধানী দুশানবেতে কাতারের অর্থায়নে নির্মিত মসজিদ ‘মসজিদুল ইমাম আবু হানিফা আন নুমান’ উদ্বোধন করা হয়। সুযোগ থাকলে মধ্য এশিয়ার সৌন্দর্যের অন্যতম নিদর্শন সবচেয়ে বড় মসজিদটিকে আপনার ভ্রমণের তালিকায় রাখতে পারেন।
গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, মসজিদটিকে মধ্য এশিয়ার বৃহত্তম মসজিদ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। মসজিদের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানি এবং তাজিকের প্রেসিডেন্ট ইমাম আলী রহমান।
মসজিদটির নির্মাণ কাজ ২০০৯ সালে শুরু হয় এবং ১৪ বছর পর ২০২৩ সালে শেষ হয়। মসজিদটি নির্মাণে $১০০ মিলিয়ন খরচ হয়েছে। টাকার হিসাবে যা ১০৮২ কোটি ১৬ লাখ ১০ হাজার টাকা।
মসজিদটিতে চারটি বড় মিনার রয়েছে, প্রতিটি ৭৪ মিটার উঁচু এবং আরও দুটি মিনার, প্রতিটি ২১ মিটার উঁচু। ৪৩ মিটার উচ্চতার একটি বড় গম্বুজ ছাড়াও, ১৭টি ছোট গম্বুজ রয়েছে, প্রতিটি ৩৫ মিটার উঁচু।
মসজিদ ভবনের বাইরের অংশের আয়তন ৬২ হাজার বর্গমিটারের বেশি। মসজিদটি তার পুরো এক ওয়াক্তে মসজিদটির পুরো সীমানাজুড়ে মুসল্লি ধারণক্ষমতা ১ লাখ ৩২ হাজার জন।
এর মধ্যে ৪৩,০০০ মুসল্লিদের মসজিদের ভিতরে থাকার ব্যবস্থা করা যেতে পারে, আর বাকিরা মসজিদের সীমানা চত্বরের মধ্যে।
মসজিদ কমপ্লেক্সে একটি সাংস্কৃতিক ভবন, একটি লাইব্রেরি রয়েছে এবং এর কেন্দ্রে রয়েছে শিক্ষা বিভাগ, যার লক্ষ্য ইসলামী ও শিক্ষাগত মূল্যবোধের একত্রীকরণে অবদান রাখা।
তাজিকিস্তানের ধর্মীয় বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান সুলেমান দৌলত জাদা বলেছেন, “মধ্য এশিয়ার বৃহত্তম মসজিদ, ‘মসজিদুল ইমাম আবু হানিফা আন-নুমান’, কাতারি অর্থায়নে নির্মিত।”
এর উদ্বোধন প্রমাণ করে ইসলামী বিশ্বে কাতারের মহান ভূমিকা এবং একটি দেশ হিসেবে এর মহান অবস্থান। তিনি জোর দিয়ে বলেন, “মসজিদটির উদ্বোধন দুই দেশ ও জনগণের মধ্যে বন্ধুত্বের চেতনায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।”
১০০ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে মধ্য এশিয়ার বৃহত্তম মসজিদটি নির্মিত হয়েছে, “এই মসজিদটি তাজিকিস্তানের মুসলমানদের জন্য বহু শতাব্দী ধরে উপকৃত হবে এবং বন্ধুত্ব ও সহযোগিতা জোরদার করার ক্ষেত্রে একটি প্রভাবশালী উপাদান হিসেবে কাজ করবে।”
ধর্মীয় বিষয়ক কমিটির প্রধান বলেন, “কাতারের আমির এবং তাজিকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইমাম আলী রহমানের অংশগ্রহণে মসজিদের উদ্বোধন উভয়ের মধ্যে উন্নত সম্পর্কের ইঙ্গিত দেয়।”
আরো পড়ুন