November 21, 2024
বন্দিদেরকে জোর করে প্রস্রাব খাওয়াচ্ছে এবং গায়ে পেট্রোল ঢেলে দিচ্ছে মিয়ানমারের সামরিক জ্যান্তা

বন্দিদেরকে জোর করে প্রস্রাব খাওয়াচ্ছে এবং গায়ে পেট্রোল ঢেলে দিচ্ছে মিয়ানমারের সামরিক জ্যান্তা

বন্দিদেরকে জোর করে প্রস্রাব খাওয়াচ্ছে এবং গায়ে পেট্রোল ঢেলে দিচ্ছে মিয়ানমারের সামরিক জ্যান্তা

বন্দিদেরকে জোর করে প্রস্রাব খাওয়াচ্ছে এবং গায়ে পেট্রোল ঢেলে দিচ্ছে মিয়ানমারের সামরিক জ্যান্তা

গত সপ্তাহে মিয়ানমারের সেনারা রাখাইন রাজ্যের একটি গ্রামে সহিংসতা চালায়। এতে অন্তত ৫০ জন নিহত হয়েছেন বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, আড়াই দিন ধরে ওই গ্রামে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালায় সেনাবাহিনী। তারা চোখ বেঁধে এবং বন্দী বাসিন্দাদের মারধর করে, তাদের গায়ে জ্বলন্ত পেট্রোল ঢেলে দেয় এবং তাদের প্রস্রাব পান করতে বাধ্য করে।

সেনাবাহিনী গ্রামে আরাকান আর্মির সদস্যদের খুঁজছিল। মূলতঃ যারা দেশের বর্তমান জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে তাদের ।

জাতীয় ঐক্য সরকার (এনইউজি), যা ক্ষমতাচ্যুত বেসামরিক সরকারের প্রতিনিধিত্ব করে, একটি বিবৃতিতে বলেছে, ১৫থেকে ৭০ বছর বয়সী ৫১জন লোককে (গ্রামে) সহিংসভাবে নির্যাতন করা হয়েছে এবং হত্যা করা হয়েছে।

অন্যদিকে, আরাকান আর্মি বিশ্বাস করে যে মৃতের সংখ্যা ৭০ ছাড়িয়ে যেতে পারে। তবে দেশটির জান্তা সরকার এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

একজন ভুক্তভোগী সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, “সৈন্যরা লোকদের জিজ্ঞাসা করছিল আরাকান আর্মি গ্রামে আছে কি না। তারা বলেছিল যে তারা এ বিষয়ে কিছুই জানে না, কিন্তু সৈন্যরা তাদের নির্যাতন করছে।” এদিকে, মাত্র ছয় মাসে আরাকান আর্মি রাখাইন রাজ্যের বেশির ভাগ দখল করেছে। এতে সেনাবাহিনী সেখান থেকে পিছু হটতে বাধ্য হয়।

আরাকান আর্মি গত বছর সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধবিরতি থেকে সরে আসে। এবং সংগঠনটি শাসক জান্তাকে উৎখাত করতে ২০২১সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতিগত বিদ্রোহীদের সাথে যোগ দেয়।

রাখাইন রাজ্যের একটি গ্রামে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অভিযানে অন্তত ৫০ জন নিহত হয়েছে বলে স্থানীয় বাসিন্দা ও বিরোধী বাহিনী জানিয়েছে।

সেনা সদস্যদের অভিযানে আড়াই দিন গ্রামটিতে আতঙ্ক বিরাজ করছে। সে সময় চোখ বেঁধে মারধর, গায়ে গরম পেট্রোল ঢেলে প্রস্রাব করতে বাধ্য করা হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।

সৈন্যরা আরাকান আর্মির সমর্থকদের খুঁজছিল, যেটি মিয়ানমারের সবচেয়ে কার্যকর জাতিগত বাহিনীতে পরিণত হয়েছে।

ক্ষমতাসীন সামরিক কাউন্সিল বা জান্তা মিয়ানমারের তিন বছরের গৃহযুদ্ধে সবচেয়ে ভয়াবহ নৃশংসতার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

“তারা পুরুষদের জিজ্ঞাসা করছিল গ্রামে আরাকান আর্মি আছে কি না,একজন মহিলা  বলেছেন। আরাকান আর্মি সেখানে ছিল কি ছিল না বা তারা জানত না – যাই উত্তরই হোক না কেন, সৈন্যরা তাদের আঘাত করে।

মাত্র ছয় মাসের মধ্যে, আরাকান আর্মি রাখাইন রাজ্যের বেশির ভাগ দখল করে এবং সেনাবাহিনীকে পিছু হটতে বাধ্য করে।

একজন মহিলা বলেন, আমি নিজের চোখে দেখেছি আমার স্বামীকে সামরিক গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।আমার ছেলেকে আমাদের দুজনের কাছ থেকে আলাদা করা হয়েছে। সে কোথায় আছে আমি জানি না। এখন আমি জানি না আমার স্বামী ও সন্তান বেঁচে আছে নাকি মারা গেছে।’

নিরাপত্তার কারণে প্রত্যক্ষদর্শীদের নাম ব্যবহার করা হচ্ছে না। তারা বলেছে যে  এক হাজারের বেশি পরিবারের প্রত্যেককে দুই দিন ধরে রোদে রাখা হয়েছে। এই সময়ে তাদের খুব কমই  খাওয়া বা পান করার সুযোগ দেওয়া হয়।

তারা ১২ জনের হাত-চোখ বেঁধে রাখে। আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কয়েকজনকে ট্রাকে করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাদের অনেকেই এখনো ফিরে আসেননি।

ওই নারী বলেন, তারা তৃষ্ণার্ত ছিল, সারাদিন রোদে দাঁড়িয়ে পানি চাইল । কিন্তু সৈন্যরা পানির বোতলে প্রস্রাব করে পুরুষদের হাতে তুলে দিত। তিনি আরও বলেছিলেন যে, তিনি অনেক গুলির শব্দ” শুনেছেন। তবে মাথা নিচু থাকার কারণে’ কাকে গুলি করা হয়েছে তা তিনি দেখতে পাননি।

তিনি বলেন, আমি তাকাতে সাহস পাইনি। তারা আমার কাছে দাঁড়িয়ে থাকা একজনকে ডাকল। তখন গুলির শব্দ শুনতে পাই। সে আর ফিরে আসেনি।

স্বামী ও ছেলের জন্য তিনি চিন্তিত ছিলেন বলে সারাক্ষণ কাঁদছিলেন। তিনি বলেন, ‘ওরা মৃত না জীবিত তা আমি জানি না। আমি তাদের জন্য প্রার্থনা করছি, বুদ্ধ, দয়া করে তাদের রক্ষা করুন।জীবিতরা বলছেন, সৈন্যরা মৃতদেহ কবর দেওয়ার জন্য কোদাল চেয়েছিল।

বুধবার ১০০ জনেরও বেশি সৈন্য রাজ্যের রাজধানী সিত্তওয়ের ঠিক বাইরে বিয়াই ফিউ গ্রামে অভিযান চালিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

স্থানীয়রা বলেছেন যে পুরুষরা আরাকান আর্মির সমর্থনে তাদের শরীরে ট্যাটু করেছিল তাদের নির্যাতনের জন্য চিহ্নিত করা হয়েছিল। একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন, সৈন্যরা ট্যাটু করা চামড়া কেটে ফেলে, তাতে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।

উত্তর শান রাজ্যের কথা উল্লেখ করে আরেক প্রত্যক্ষদর্শী একজন সেনা কর্মকর্তার কথা বলেছেন যে, গত বছরের শেষের দিকে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিল তারা , এই কর্মকর্তা  বলেন যে , তিনি সেখান থেকে তাদের প্রতিশোধ নিতে এসেছেন।৯৪৮

উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী রাখাইন রাজ্যের ক্ষয়ক্ষতি ছিল ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতার পর থেকে দেশটিতে আধিপত্য বিস্তারকারী সশস্ত্র বাহিনীর জন্য সবচেয়ে অপমানজনক।

আরও পড়তে

মিয়ানমার বিভক্ত হয়ে টুকরা টুকরা হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন প্রেসিডেন্ট সুই

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X