November 25, 2024
এশিয়ার সেরা ৩০০ বিশ্ববিদ্যালয়: ভারতে ৪০, পাকিস্তান ১২, বাংলাদেশ ০

এশিয়ার সেরা ৩০০ বিশ্ববিদ্যালয়: ভারতে ৪০, পাকিস্তান ১২, বাংলাদেশ ০

এশিয়ার সেরা ৩০০ বিশ্ববিদ্যালয়: ভারতে ৪০, পাকিস্তান ১২, বাংলাদেশ ০

এশিয়ার সেরা ৩০০ বিশ্ববিদ্যালয়: ভারতে ৪০, পাকিস্তান ১২, বাংলাদেশ ০

দুনিয়ার রাঙ্কিং থেকে তো অনেক আগেই বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো একেবারেই বাদ পড়ে গেছে এরপর যখন এশিয়ার রাঙ্কিং আছে আসে তখনও অবৈধ ক্ষমতার পচা গান্ধা থাবায় জর্জরিত ছাত্র রাজনীতির নোংরামির শিকার বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর চরম দূর অবস্থা।

বিশ্বের বা এশিয়ার শীর্ষ ৩০০ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয় স্থান পায়নি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এক সময় বিখ্যাত ছিল। কিন্তু এবার ৩০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটিও জায়গা পায়নি। অন্যদিকে ভারতের ৪০ টি বিশ্ববিদ্যালয় এবং পাকিস্তানের ১২টি বিশ্ববিদ্যালয় এই তালিকায় স্থান পেয়েছে। এশিয়ার ৩১টি দেশের ৭৩৯ টি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে এই র‌্যাঙ্কিং প্রকাশ করা হয়েছে। যেখানে  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ৫০০ ।

জানা গেছে, যুক্তরাজ্যভিত্তিক টাইমস হায়ার এডুকেশনের ‘এশিয়ান ইউনিভার্সিটি র‍্যাঙ্কিং২০২৪ ‘ র‍্যাঙ্কিং তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) র‌্যাঙ্কিং প্রকাশ করা হয়। ৩১ টি এশিয়ান দেশের মোট ৭৩৯ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের র‌্যাঙ্কিং করা হয়েছে।

টাইমস হায়ার এডুকেশন এশিয়া ইউনিভার্সিটি র‌্যাঙ্কিং ২০২৪-এর শীর্ষ ৩০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয় নেই। বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে সেরা র‌্যাঙ্কিংয়ে দেশের সেরা।

এরপর রয়েছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি ৩৫১-৪০০ এর মধ্যে। ৪০১-৫০০০ এর মধ্যে রয়েছে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। আর ৫০১-৬০০ এর মধ্যে রয়েছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

এ ছাড়া দেশের আরও ১২টি বিশ্ববিদ্যালয় ওয়েবসাইটে বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় স্থান পেলেও তাদের র‌্যাঙ্কিং প্রকাশ করা হয়নি। এই প্রতিষ্ঠানগুলো হলো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশ, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, যশোর ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ, ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এগ্রিকালচার। এবং প্রযুক্তি, বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় এবং ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ।

এ বছরের র‌্যাঙ্কিংয়ে এশিয়ার শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে চীনের সিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয় এবং পিকিং বিশ্ববিদ্যালয় প্রথম ও দ্বিতীয়। তৃতীয় হয়েছে সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি। এছাড়া চীনের ৫টি, সিঙ্গাপুর ও হংকং থেকে ২টি এবং জাপানের একটি বিশ্ববিদ্যালয় শীর্ষ দশের মধ্যে রয়েছে।

যে কোনো দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মান নির্ধারণ অপরিহার্য। দেশের শিক্ষাব্যবস্থা কোন স্তরে, আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী আমাদের অবস্থান কোথায়, বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার কোথায় উন্নতি করতে হবে- সর্বোপরি আমাদের কোন স্তরে তা জানা জরুরি। পেশাগত জীবনে তারুণ্য আছে বা থাকবে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের মানই বলে দেবে সামগ্রিকভাবে আমরা উন্নতি করছি না বরং পিছিয়ে পড়ছি।

পাঠদান এবং শেখা যে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের মানের প্রথম সূচক হিসাবে বিবেচিত হতে পারে। শিক্ষার গুণগত মান বিবেচনায়, শিক্ষা কার্যক্রম (পাঠ্যক্রম), শিক্ষাদান, ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর প্রোগ্রামের সংখ্যা, সর্বোচ্চ স্তর অর্থাৎ ডক্টরেট ডিগ্রিধারী শিক্ষকের সংখ্যা ইত্যাদি বিবেচনায় নেওয়া হয়। সাক্ষরতার সূচকগুলি আন্তর্জাতিক মানের প্রায় সর্বত্র ব্যবহৃত হয়।

একটি নির্দিষ্ট শীর্ষ ৫০০ তালিকায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে কীভাবে স্থান দেওয়া যায় সে সম্পর্কে গভীরভাবে চিন্তা করার সময় এসেছে। সেটা করতে হলে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক মাস্টার প্ল্যান থাকতে হবে। মৌলিক সূচকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে উন্নত করতে হলে সবচেয়ে মেধাবী শিক্ষার্থীদের প্রথমে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিতে হবে। নিয়ম করতে হবে- গবেষণা ছাড়া শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া যাবে না। এ ছাড়া আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ব্যাপকভাবে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি দেওয়া হয়। এটা ঠিক না।  যারা মাস্টার্স করছেন তাদের জন্য গবেষণা-ভিত্তিক ডিগ্রী গবেষণার সংখ্যা এবং শিক্ষার মান বাড়াবে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক সুনাম বাড়াতে সাহায্য করবে।

শিক্ষকরা পিএইচডি ও পোস্ট-ডক্টরাল গবেষণাকে গুরুত্ব না দিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের র‌্যাঙ্কিংয়ে স্থান পাওয়া আমাদের জন্য কঠিন হবে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত বাড়াতে অতি দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা কমিশন যত দ্রুত সম্ভব গঠন করতে হবে, যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষকদের গবেষণার মান বাড়ানো যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী অধ্যাপক থেকে অধ্যাপক পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে পদোন্নতি পেতে পিএইচডি ডিগ্রিসহ আন্তর্জাতিক মানের গবেষণা থাকা প্রয়োজন।এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের র‌্যাঙ্কিংয়ে সাহায্য করবে। নোংরা রাজনীতি বন্ধ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে গঠনমূলক রাজনীতির পরিবেশ সৃষ্টি করা একান্ত প্রয়োজন। কারণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের র‌্যাঙ্কিংয়ে স্থান না পাওয়ার জন্য নোংরা রাজনীতিই অনেকাংশে দায়ী বলে মনে হচ্ছে

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X