ইসরাইলের জেলে বসে উপন্যাস লিখে পুরস্কার জিতে নিলেন ফিলিস্তিনি লেখক
ফিলিস্তিনি লেখক বাসিম খন্দকজি ২০ বছর ধরে ইসরায়েলের কারাগারে বন্দী। সেখান থেকে তিনি ‘এ মাস্ক, দ্য কালার অফ দ্য স্কাই’ উপন্যাস লিখে আরবি ফিকশন পুরস্কার পান। বইটির ইংরেজি অনুবাদের জন্য বাসিমকে ৫০ হাজার ডলার সম্মাননা দেওয়া হয়। বাসিম খন্দকজি ২০০৪ সাল থেকে ইসরায়েলি কারাগারে বন্দী রয়েছেন। খন্দকজি এই বছরের আরবি কথাসাহিত্যের আন্তর্জাতিক পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন। তবে তিনি কারাবন্দি থাকায় তার পক্ষে পুরস্কার গ্রহণ করেন রানা ইদ্রিস । রানা ইদ্রিশ লেবাননের দার আল-আদাব প্রকাশনা সংস্থার প্রকাশক। সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবিতে এক অনুষ্ঠানে বাসেমের পক্ষে পুরস্কার গ্রহণ করেন রানা। বইটির শিরোনামে ‘মুখোশ’ শব্দটি রামাল্লার একটি শরণার্থী শিবিরে বসবাসরত প্রত্নতাত্ত্বিক নূরের পাওয়া একটি নীল আইডি কার্ডকে বোঝাতে ব্যবহৃত হয়েছে। কার্ডটি পাওয়া গেছে একটি ইসরায়েলিদের পুরনো কোটের ভেতর।
প্রতিযোগিতায় জমা দেওয়া ১৩৩টি কাজের মধ্যে বাসিমের বইটি বিজয়ী নির্বাচিত হয়।
জুরির দায়িত্ব পালনকারী নাবিল সুলেমান বলেন, উপন্যাসটি পারিবারিক ভাঙ্গন, বাস্তুচ্যুতি, গণহত্যা এবং বর্ণবাদের জটিলতার তিক্ত বাস্তবতা তুলে ধরেছে। কারাবাসের পর থেকে বাসিম ‘রিচুয়ালস অফ দ্য ফার্স্ট টাইম’ এবং ‘দ্য ব্রেথ অফ আ নক্টার্নাল পোয়েম’ সহ বেশ কয়েকটি বই লিখেছেন। ২১ বছর বয়সে জেলে যাওয়ার আগে বাসিম বেশ কয়েকটি ছোট গল্প লিখেছিলেন।
১৯৮৩ সালে নাবলুসে জন্মগ্রহণকারী, খন্দকজি তেল আবিবের উটের বাজারে ২০০৪ সালে একটি মারাত্মক আত্মঘাতী বোমা হামলার অভিযোগে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগ করছেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রীয় মিডিয়া, দ্য ন্যাশনালের মতে ঐ ঘটনায় তিনজন নিহত ও শতাধিক আহত হয়েছিলেন । তার ভাই, ইউসুফ খন্দকজি, আবুধাবির ফেয়ারমন্ট বাব আল বাহরের পুরস্কার অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন এবং বলেন: “আমার প্রিয় ভাই এই পুরস্কারটি সমস্ত ফিলিস্তিনি জনগণকে উৎসর্গ করেছেন। আমি তাকে প্রতিদিন মিস করি এবং তিনি আমাদের হৃদয়ে আছেন। খন্দকজি থাকবেন। ২০২১ সালে “এ মাস্ক, দ্য কালার অফ দ্য স্কাই” উপন্যাসটি শেষ হতে ছয় মাস লেগেছিল, জেলে থাকাকালীন, খন্দকজিও কবিতা লিখেছিলেন।
আরবি কথাসাহিত্যে এবারের আন্তর্জাতিক পুরস্কার জিতেছেন ফিলিস্তিনি লেখক বাসিম খান্দাকজি, যিনি বিশ বছর ধরে ইসরায়েলের কারাগারে বন্দী আছেন ‘আরবি বুকার’ পুরস্কারে ভূষিত হন।
রোববার আবুধাবিতে এক অনুষ্ঠানে ‘আরবি ফিকশন ইন্টারন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড’ ঘোষণা করা হয়। একটি জুরি বোর্ড আরবি কথাসাহিত্যের ১৩৩টি বইয়ের মধ্যে থেকে বাসিমের উপন্যাসটিকে পুরস্কারের জন্য বেছে নেয়।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বসিমের উপন্যাস সম্পর্কে বলতে গিয়ে জুরি বোর্ডের সভাপতি বহুমাত্রিক সিরিয়ান লেখক নাবিল সুলেমান বলেন, উপন্যাসটিতে পারিবারিক বিচ্ছেদ, স্থানচ্যুতি, গণহত্যা এবং বর্ণবাদের জটিল ও তিক্ত বাস্তবতা তুলে ধরা হয়েছে।
লেখক বাসিম খন্দকজির পক্ষে বইটির লেবানন-ভিত্তিক প্রকাশনা সংস্থা দার আল-আদাবের মালিক রানা ইদ্রিস এই পুরস্কার গ্রহণ করেন।
ফিলিস্তিনি লেখক বাসিম খন্দকজি ১৯৮৩ সালে ইসরায়েল-অধিকৃত পশ্চিম তীরের নাবলুসে জন্মগ্রহণ করেন। ২০০৪ সালে, যখন তিনি মাত্র ২১ বছর বয়সী ছিলেন, তেল আবিব বোমা হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইসরায়েলি পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছিল। কারাগারের ভিতর থেকে বাসিম তার বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা ও লেখালেখি চালিয়ে যান।
ইসরায়েলের হাতে বন্দী হওয়ার আগ পর্যন্ত বাসিম বেশ কিছু ছোট গল্প লিখেছেন। জেলে যাওয়ার পর কবিতা ও উপন্যাস লিখেছেন। খন্দকজী জেলে থাকা অবস্থায় একটি কবিতা সংকলন প্রকাশ করেন। বই দুটির নাম ‘রিচুয়াল অফ দ্য ফার্স্ট টাইম’ এবং দ্য ব্রেথ অফ নক্টারনাল পোয়েম।
কবিতা সংকলন ছাড়াও বাসিম তিনটি উপন্যাস লিখেছেন, যার একটি ‘এ মাস্ক,; দ্য কালার অফ দ্য স্কাই’।
ইসরায়েলের কারাগারে বন্দী ফিলিস্তিনি লেখক বাসিম খন্দকজি এ বছরের আরবি কথাসাহিত্যের জন্য আন্তর্জাতিক পুরস্কার (আইপিএএফ) জিতেছেন। এটি আরব বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ সাহিত্য পুরস্কার। একে আরবি বুকার পুরস্কারও বলা হয়।
৪০ বছর বয়সী এই লেখক পুরস্কার হিসেবে ৫০,০০০ ডলার পেয়েছেন। পুরস্কারপ্রাপ্ত বইটি ইংরেজিতে অনুবাদ করার জন্যও তিনি অর্থ পাবেন। বাসিমের ভাই ইউসুফ খন্দকজি তার পক্ষে পুরস্কার গ্রহণ করেন।
উপন্যাসটি রামাল্লার একটি শরণার্থী শিবিরে বসবাসকারী ফিলিস্তিনি প্রত্নতত্ত্ববিদ নূরের জীবন কাহিনী অনুসরণ করে লেখা । তিনি একদিন একটি পুরানো কোটের পকেটে একজন ইসরায়েলি নাগরিকের পরিচয়পত্র খুঁজে পান। এরপর তিনি ইসরায়েলি নিরাপত্তা বেষ্টনীর আড়ালে থাকা জীবনকে বোঝার জন্য পরিচয়পত্রে উল্লেখিত ব্যক্তির নামে নিজের পরিচয় দেওয়ার পরিকল্পনা করেন।
ফিলিস্তিনি লেখক বাসিম খান্দাকজি ২০০৪ সাল থেকে ইসরায়েলের একটি কারাগারে বন্দী ছিলেন। সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে ইসরায়েলি পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। কারাগারে থাকাকালীন তিনি দুটি কবিতা সংকলন, ২৫০ টি প্রবন্ধ এবং বেশ কয়েকটি উপন্যাস প্রকাশ করেন।
উল্লেখযোগ্যভাবে, তিনি আন-নাজাহ ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে সাংবাদিকতা এবং মিডিয়া অধ্যয়ন করেছেন। গ্রেফতার হওয়া পর্যন্ত তিনি ছোটগল্প লিখেছেন।
1 Comment