November 22, 2024
শিশুদের শীতের অসুখ প্রতিরোধে করণীয়

শিশুদের শীতের অসুখ প্রতিরোধে করণীয়

শিশুদের শীতের অসুখ প্রতিরোধে করণীয়

শিশুদের শীতের অসুখ প্রতিরোধে করণীয়

শীতকালে সাধারণত আমাদের সবারই সর্দি, সর্দি, কাশি, জ্বর হয়। শিশু এবং বয়স্ক মানুষ এই সমস্যায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়। কারণ শিশু ও বয়স্কদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম।

শীতের ঠান্ডা আবহাওয়ায় শিশুদের বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। বিশেষ করে এই সময়ে শিশুরা প্রায়ই নিউমোনিয়া ও সর্দিতে আক্রান্ত হয়। শিশুরা যেহেতু নিজেরা অনেক কিছুই বুঝে না তাই অভিভাবকদেরকে অবশ্যই শীত শুরুর ঘন্টা বাজলেই তাদের প্রতি তীক্ষ্ণ নজর দিতে  হবে।  এবং তাদের যেন ঠান্ডা না লাগে সেদিকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে।

এর কারণে, পিতামাতা নিশ্চিত হবেন যে শিশু শীতে সুরক্ষিত। এই সময়ে শিশুদের শীতের আগমন ও বিভিন্ন রোগ থেকে বাঁচাতে কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতে হবে, জেনে নিন কী করবেন-

শীতে শিশুর সর্দি-কাশি প্রতিরোধের উপায়

  • বাচ্চাদের ভালো মানের পর্যাপ্ত শীতের পোশাক পরা উচিত। বেশিরভাগ শিশুই তাদের গরম টুপি বা গলায় মাফলার পরতে চায় না। এদিকে অভিভাবকদের সতর্ক থাকতে হবে। এমনকি শিশুদের শীতের তীব্রতা অনুযায়ী পোশাক পরানো উচিত যাতে ঠান্ডা না লাগে।
  • বেশিরভাগ মায়েরা শীতকালে তাদের শিশুকে গোসল করাতে ভয় পান। এই ধারণা সঠিক নয়। শীতকালে শিশুদের আরও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। শিশুর শরীর থেকে তেল এবং ময়লা ধুয়ে ফেলার জন্য কুসুম গরম পানিতে গোসল করানো জরুরি।
  • যেসব রোগ শীতে শিশুদের ঝুঁকি বাড়ায়, সেগুলো প্রতিরোধ করতে হবে
  • গোসলের জন্যকুসুম গরম পানি ব্যবহার করলেও শিশুকে বেশিক্ষণ গোসল করাবেন না। গোসলের পর দ্রুত শরীর ও মাথা ভালো করে মুছে নিন। গোসলের পর শিশুকে নিয়ে কিছুক্ষণ রোদে বসুন।
  • এই সময়ে শিশুর ত্বকের যত্নে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের বিকল্প নেই। গোসলের পর শিশুর শরীরে অলিভ অয়েল বা ময়েশ্চারাইজিং বেবি লোশন ব্যবহার করুন।
  • ঘরের তাপমাত্রা একটু উষ্ণ হলে শিশুকে ভারী পোশাকে রাখবেন না। যদি ঘরে তাপমাত্রা ২৫ডিগ্রি হয় তবে শিশুকে একটি সুতির কাপড়ে একটি দস্তা দিয়ে মুড়ে দিন, যাতে শিশুর ত্বক শ্বাস নিতে পারে।
  • ঘরের তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রির নিচে হলে সোয়েটার ব্যবহার করাতে পারেন। শিশুকে ঘন ঘন বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। বুকের দুধ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ফলে শিশুরা সর্দি-কাশিতে কম আক্রান্ত হয়। মায়ের বুকের দুধ কীভাবে শিশুর বিকাশ ঘটায়
  • শীতকালে শিশুকে আরও আভসরভিং ডায়াপারে রাখুন। কারণ শীতে ডায়াপার ভিজে গেলে বা ফুটো হয়ে গেলে শিশুর ঠান্ডা লাগার আশঙ্কা বেড়ে যায়।
  • এর জন্য উচ্চ শোষণ ক্ষমতা এবং লিক-প্রুফ ডায়াপার ব্যবহার করতে হবে। এবং প্রতি ৬ ঘন্টা অন্তর শিশুর ডায়াপার পরিবর্তন করতে ভুলবেন না।
  • শীতকালে বাচ্চাদের সর্দি-কাশি ও নাক বন্ধ হলে তা তাদের রাতের ঘুমে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। এ কারণে রাতে ঘুমানোর আগে দুই নাকে দুই ফোঁটা নাকের ড্রপ দিন। তাহলে শিশু আরামে ঘুমাবে।
  • ঠাণ্ডার কারণে শিশুর কাশি, শ্বাসকষ্ট বা বুকে গর্জন শব্দ হলে বা শ্বাস নেওয়ার সময় বুকের হাড় ভেতরের দিকে দেবে গেলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
  • শীতকালে শিশুদের পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়াতে হবে। এ সময় তাদের ভিটামিন সি যুক্ত খাবার খেতে হবে।লেবু, কমলা, মাল্টা, আমলকি খেতে হবে। কিন্তু যারা চিবাতে পারেন না তাদের এসব ফলের রস খাওয়ানো যেতে পারে।
  • একটি শিশু বাইরে থেকে সুন্দর দেখতে পারে, কিন্তু ভিতরে সে গুরুতর অসুস্থ হতে পারে। তাই অভিভাবকদের উচিত সন্তানের শারীরিক লক্ষণগুলো বোঝা। শিশুর নাক, কান, পা, আঙুল ইত্যাদির রং ধূসর বা ফ্যাকাশে হয়ে গেলে বুঝবেন সে ঠান্ডায় ভুগছে।
  • যদি বাচ্চা ঠান্ডায় কাঁপতে থাকে এবং কথা বলতে সমস্যা হয় তবে বুঝুন তার হাইপোথার্মিয়া আছে। যদি এটি ঘটে তবে অবিলম্বে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।
  • শীতকালীন বিভিন্ন অসুস্থতার ঝুঁকি কমাতে ৬ মাস বা তার বেশি বয়সী শিশুদের জন্য ফ্লু’ র টিক দিন ।
  • শিশুর নাক দিয়ে রক্ত পড়লে আতঙ্কিত হবেন না। সর্দি, সাইনাসের সংক্রমণ বা অ্যালার্জি থাকলে শিশুর নাক দিয়ে রক্ত পড়তে পারে। এই কারণে, শিশুকে শুষ্ক বায়ু থেকে রক্ষা করা উচিত।
  • এ ছাড়া প্রতিদিন শিশুর নাকে স্যালাইন স্প্রে বা নাকের জেল ব্যবহার করে রক্তপাতের সমস্যা রোধ করতে পারেন।

যখন কারও সর্দি, হাঁচি, কাশি এবং গলা ব্যথা হয়, তখন এটি একটি সাধারণ সর্দি, মৌসুমী ফ্লু বা ঠান্ডা অ্যালার্জি কিনা তা বলা সবসময় সহজ নয়। পার্থক্য বোঝার চেষ্টা করে, সুস্থ থাকা সহজ হয়ে যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X