November 21, 2024
একাকীত্ব: সমাধান

একাকীত্ব: সমাধান

একাকীত্ব: সমাধান

একাকীত্ব: সমাধান

বর্তমান সময়কে বলা হয় সংযোগের যুগ। হাতে ফোন আর গ্যাজেট। আমরা সব সময় বিভিন্ন নেটওয়ার্কের সাথে সংযুক্ত থাকি। এই সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করার সময় আমরা সবচেয়ে বড় যে সমস্যার মুখোমুখি হই তা হল একাকীত্ব।

একাকীত্ব কি?

একাকীত্ব হল বিচ্ছিন্নতার একটি অবস্থা,এই বিচ্ছিন্নতা, বা সংসর্গহীনতা  যা অন্য ব্যক্তির সাথে সংযোগ বা যোগাযোগের অভাবের কারণে ঘটে।

একাকীত্ব সাধারণত তিন ধরনের হতে পারেঃ-

(১) যখন আমি স্বেচ্ছায় একা থাকতে চাই এটা এক ধরনের একাকীত্ব ।

(২) পরিস্থিতির চাপ, জীবিকা বা পড়াশোনার দাবিতে যখন আমি একা থাকতে বাধ্য হই বা একা থাকতে হয় তখন এটা এক ধরনের একাকীত্ব।

(৩) এমনও দেখা গেছে যে অনেক মানুষের মাঝেও মাঝে মাঝে নিজেকে খুব একা মনে হয়। দু-একজন ছাড়া অনেকের সান্নিধ্য সেভাবে হোয়হুলোর মনকে আকর্ষণ করে না। যেমন, কোনো সামাজিক অনুষ্ঠানে গিয়ে সেখানে সবার সঙ্গে কথা বললেও কোথাও একটা শূন্যতা অনুভব হয়। তাহলে এত ভিড়েও মানুষের সাথে মেলানো খুব কঠিন। আমি কখন সেখান থেকে পালাতে পারি? – আমরা সকলেই এক সময় বা অন্য সময়ে কমবেশি এই অনুভূতি পেয়েছি এবং এটিও এক ধরণের একাকীত্বের অন্যরকম অনুভূতি ।

অনেক বিশেষজ্ঞ একমত যে একাকীত্ব একক সম্পর্কে থাকা বা একা থাকা নয়। বরং মনের এমন উপলব্ধি; যা আমাদের মনকে সমস্ত বাহ্যিক যোগাযোগ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। উদাহরণস্বরূপ, আপনি বন্ধুদের মধ্যে বা অফিসের অনেক লোকের মধ্যেও একাকী বোধ করেন। প্রিয় বাবা-মা, ভাইবোন বা প্রিয়জনের কাছে  থেকেও আপনি একাকী বোধ করেন। আপনার মন কিছু চায় বা একা থাকতে চায়। এবং কখনও কখনও আপনি হতাশ হয়ে পড়েন এই ভেবে যে আপনি আপনার হৃদয় যা চায় তা খুঁজে পাচ্ছেন না।

একাকীত্ব দূর করতে কী করা উচিত?

মাঝে মাঝে একা থাকা ভালো। কেননা অনেক সময় এই নির্জনে থাকতে থাকতে নিজেকে চেনা যায়।  কিন্তু এই একাকীত্ব যদি খুব বেশি হয়ে যায় তাহলে তখনই মনে শুরু হয় আনচান । তাই এই ক্ষেত্রে আপনি বিভিন্ন উপায় বের করতে পারেন।

  • সমস্যা খুঁজে বের করুন

সমাধানের আগে সমস্যা খুঁজুন। কারণ, বের করার পর সম্ভাব্য সমাধানের কথা ভাবুন। আসলে একাকীত্বের সমাধানের আগে এর মূল কারণ খুঁজে বের করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

  • সৃজনশীল কাজ করুন

দুঃখকে শক্তিতে পরিণত করুন। সৃজনশীল কাজের মাধ্যমে আবেগ প্রবাহিত হতে দিন। আঁকতে  চাইলে আঁকুন, গান করুন, খোশ আনন্দে মেতে উঠুন। এমন কাজ করুন যা আপনাকে পুনরুজ্জীবিত করে বা আপনাকে সৃষ্টির আনন্দ দেয়।

  • আপনি আপনার সেরা বন্ধু হন

আপনার সেরা বন্ধু হন আপনি নিজেই ।  একা একা  বেড়াতে যান। হতে পারে রেস্তোরাঁয় বসে কিছু   খান ,  নিজের পছন্দের জিনিস নিজেকে উপহার দি্ন । নিজের সাথে সময় কাটান। দেখবেন, অনেকটা কুয়াশা মুছে গেছে। হালকা অনুভব  হচ্ছে  ।

  • অন্যদের সাহায্য করুন

চারপাশে তাকান . দেখবেন, কেউ আপনার চেয়েও দুঃখী। তারা আপনার চেয়ে কঠিন দুঃখের শ্বাস নিচ্ছে। এই চিন্তা ভাবনা করলেও কষ্টটা ভালই হালকা হয়। একাকীত্ব কাটিয়ে ওঠার আরেকটি উপায় হল অন্যদের সাহায্য করা। দেখবেন, অন্যকে সাহায্য করলে নিজের মধ্যে অনেক  প্রশান্তি তৈরি হবে।

  • প্রকৃতির সাথে সময় কাটান

মন ভালো করার জন্য প্রকৃতির চেয়ে ভালো বন্ধু ও  ওষুধ আর নেই। এবং তাই প্রকৃতিতে যান। আপনি সমুদ্র, পাহাড় বা নদীতীরের কাছাকাছি ,  একটি পার্ক কাছাকাছি যে কোন জায়গায় যেতে পারেন।  এটি আপনাকে একাকীত্ব থেকে মুক্তি দিতে কাজ করবে।

  • পুরানো বন্ধুদের সাথে সংযোগ করুন

সেই বন্ধুদের কাছে যান যারা সত্যিই আপনার মিত্র, আপনার আত্মার সাথী। আপনাকে এই যন্ত্রণা থেকে বের করার জন্য প্রয়োজনে তাদের সাহায্যের জন্য জিজ্ঞাসা করুন।

  • গান শুনুন

প্রকৃতি যেমন মানুষকে সুস্থ করে, তেমনি সঙ্গীতও মানুষকে শান্তি দেয়, মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। তাই প্রিয় ভাল গান শুনুন ।

নিজেকে সময় দিন। আপনি যদি নিজেকে ভালোবাসেন তবে আপনি একাকীত্ব অনুভব করবেন না। আমি যখন একা থাকি তখন আমি আমার সেরা অবস্থায় থাকি, আমি মনে করি, আমি এই মুহূর্তে যার সাথে থাকতে চাই তার সাথেই আছি, এবং যখন আমি এরকম ভাবতে পারি, তখন আমার আত্মসম্মান বহুগুণ বেড়ে যায়। আমি একটুও বাড়াবাড়ি করছি না,যে নিজের সাথে ভালো থাকতে পারেনা সে পৃথিবীতে কার সাথে ভালো থাকবে? সর্বত্র তিনি একা। নিজেকে সম্মান করুন, আপনি ভালো থাকবেন, আপনার চারপাশের সবাই ভালো থাকবে।

1 Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X