মালদ্বীপের আকর্ষণীয় কয়টি স্থানঃ ঘুরে আসতে পারেন স্বাচ্ছন্দে
{মালদ্বীপ: দক্ষিণ এশিয়ায় অবস্থিত ভারত মহাসাগরের একটি দ্বীপরাষ্ট্র। এর রাজধানীর নাম মালে। দেশটি দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক জোট সার্কের সদস্য। এই দেশটি বিশ্বের সর্বনিম্ন দেশ। পর্যটনের জন্য বিখ্যাত, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে সর্বোচ্চ উচ্চতা মাত্র ২.৩ মিটার এবং গড় উচ্চতা মাত্র ১.৫ মিটার। মালদ্বীপ এক হাজার দুই শতাধিক ছোট দ্বীপ নিয়ে গঠিত। এটি শ্রীলঙ্কার প্রায় ৪০০ মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে ১০১০ টি প্রবাল দ্বীপসহ মোট ১২০০ অধিক দ্বীপ নিয়ে গঠিত।মালদ্বীপীয় রুপিয়াহ তাদের মুদ্রা, তারা দিবেহি ভাষায় কথা বলে। ইতিহাস ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিতে তারা ইসলামকেই প্রাধান্য দেয় এবং মেনে চলার চেষ্টা করে।প্রাচীনকাল থেকেই সামুদ্রিক মাছ দেশের অর্থনীতির প্রধান ভিত্তি। কিন্তু বর্তমানে দেশটি পর্যটন শিল্পেও যথেষ্ট উন্নতি করেছে। বলা যায়,বর্তমানে পর্যটন দেশের সবচেয়ে বড় শিল্প। মোট আয়ের ২৮ শতাংশ এবং মোট বৈদেশিক আয়ের ৬০ শতাংশ আসে পর্যটন শিল্প থেকেই।}
বিশ্বের সবচেয়ে ছোট দেশ মালদ্বীপ, ভ্রমণের জন্য খুব ভালো একটি দেশ। সমুদ্রের বিভিন্ন দ্বীপের সমন্বয়ে এটিকে দ্বীপরাষ্ট্র বলা হয়। এই ছোট্ট দেশটিতে দেখার মতো অনেক জায়গা রয়েছে। এই সব জায়গা ঘুরে ঘুরে মন জয় করবে। মালদ্বীপে ভ্রমণ বাস্তব জীবনের স্বর্গে পা রাখার মতো। এখানে আপনি গ্রীষ্মমন্ডলীয় দ্বীপ এবং সুন্দর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সাদা বালুকাময় সৈকত দেখতে পারেন। মালদ্বীপে এক হাজারেরও বেশি প্রবাল দ্বীপ পাওয়া যায়। এখানকার প্রধান আকর্ষণ বিশ্বমানের ডাইভিং এবং স্নরকেলিং সাইট। আপনি ডুবে যেতে পারেন পানির নিচের জগত আবিষ্কার করতে। এতে রঙিন প্রবাল প্রাচীর এবং বহিরাগত মাছের প্রজাতি দেখা মিলবে। তাহলে দেখে নিন মালদ্বীপের দর্শনীয় ক’টি আকর্ষণীয় স্থান।
-
মালে
বিশ্বের ক্ষুদ্রতম দেশের ক্ষুদ্র রাজধানী হিসেবে পরিচিত মালে। এখানে এলে দেখতে পাবেন রঙিন সব দালান আর পুরনো আমলের শৈল্পিকতায় বিমোহিত মসজিদ সমূহ । এছাড়া দেশের এখানে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন পর্যটকরা।
-
গ্র্যান্ড ফ্রাইডে মসজিদ
মালদ্বীপের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হল গ্র্যান্ড ফ্রাইডে মসজিদ। এখানে প্রতিদিন পর্যটকদের ভিড়। এটি একটি আকর্ষণীয় জায়গা।এটিও মালদ্বীপের এক বড় মসজিদ। ইউনেস্কো ২০০৮ সালে মসজিদটিকে তালিকাভুক্ত করেছে। মালদ্বীপের শীর্ষ ধর্মীয় স্থানগুলির মধ্যে একটি হল গ্র্যান্ড ফ্রাইডে মসজিদ যা শুধুমাত্র আধ্যাত্মিক সাধকদের কাছেই নয়, পর্যটকদের কাছেও প্রিয়। এটি তার আধুনিক সাদা মার্বেল কাঠামোর জন্য বিখ্যাত। এর সৌন্দর্যে আকৃষ্ট হয় পর্যটকরা। মসজিদটির প্রধান চত্বর জুমহোরি ময়দানে একটি বিশাল সোনার গম্বুজ রয়েছে। হ্যাঁ, মসজিদে প্রবেশে উপযুক্ত পূর্ণ দৈর্ঘ্যের পোশাক পরতেতো হবে।
-
উথিমু দ্বীপ
উথিমু দ্বীপ মালদ্বীপের ইতিহাস সমৃদ্ধ একটি দ্বীপ। পর্যটকরা এখানে এলে উচ্ছ্বসিত। দ্বীপটি পর্যটকদের কাছে খুবই জনপ্রিয় এবং আকর্ষণীয়। মালদ্বীপের ইতিহাস-ঐতিহ্য,সমৃদ্ধি ও উন্নতির ধারা এই দ্বীপটিতে অঙ্কিত রয়েছে । এখানে আসলে আপনার নিজ দেশের প্রতি অনেকটাই আকর্ষণ বেড়ে যাবে ।
-
ওয়াটার স্পট
অনেকে চায় সমুদ্রের পানি যেন তাদের শরীর স্পর্শ করে। তাদের জন্য উপযুক্ত জায়গা হল ওয়াটার স্পট । এখানে কিছুক্ষণ কসরত করলে আপনার মন দ্রুত উন্নত হবে এবং আপনাকে হতাশা ও উদ্বেগ থেকে দূরে রাখবে।
-
ব্যানানা রিফ
বাংলায় যাকে কলাবর্ম বলা যায় । প্রবাল দিয়ে তৈরি এই বর্মটি মালদ্বীপের প্রাচীনতম নিদর্শনগুলির মধ্যে একটি। দর্শনার্থীরা এখানে এলে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ হবেনই ।
-
সুইমিং দ্বীপ
মালদ্বীপের পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ হল সুইমিং দ্বীপ বা সাঁতার দ্বীপ। এখানকার নৈসর্গিক সৌন্দর্যে সাঁতার কেটে মুগ্ধ হবেন দর্শনার্থীরা।
-
কৃত্রিম সৈকত
বিশ্বের একমাত্র মনুষ্যসৃষ্ট সমুদ্র সৈকত মালে, মালদ্বীপে। তাই এখানে এলে দেখবেন মানুষের তৈরি সমুদ্র সৈকত দেখতে কেমন লাগে। ইচ্ছে করলে খেলাধুলাও করতে পারেন এই স্থানে ।
-
মাফুশি দ্বীপ
আপনি যদি মাফুশি দ্বীপে না যান তবে আপনার মালদ্বীপ ভ্রমণই যেনো অসম্পূর্ণ থেকে যায়। কারণ এই দ্বীপে থাকলে আপনি স্বর্গে থাকার মতো অনুভব করতে পারেন। দ্বীপে এলে আপনি অনেকটা চিন্তামুক্ত হয়ে যাবেন । মালদ্বীপের জাতীয় জাদুঘর তার সংরক্ষিত নিদর্শনগুলির অনন্য সংগ্রহ দিয়ে পর্যটকদের মুগ্ধ করে। ইসলামিক এবং বৌদ্ধ রাজকীয় পুরাকীর্তিগুলির একটি বড় সংগ্রহও এখানে প্রদর্শিত হয়। যারা ইতিহাস এবং হস্তশিল্প ভালবাসেন তারা এখানে স্বর্গ খুঁজে পান। জাদুঘরটি চমৎকার পোশাক, অলঙ্কার, সিংহাসন, পালকি, রাজকীয় সানশেড, পাণ্ডুলিপি, অস্ত্র এবং বর্ম, সংরক্ষিত ঐতিহ্যের একটি ভান্ডার। যাদুঘরটি মালদ্বীপের নাগরিকদের মধ্যে দেশপ্রেমের গভীর অনুভূতি জাগায় এবং পর্যটকদেরও এটি পরিদর্শনে গভীর আনন্দ দেয়।
-
ফুলহাদু
এই ছোট দ্বীপটি মালদ্বীপের দক্ষিণে মালহুসমাদুহুতে অবস্থিত। রাজধানী মালে থেকে মাত্র দুই ঘণ্টার ড্রাইভের পরই এখানে আসা সম্ভব। দ্বীপটি জনবসতিহীন এবং এখানে এলে আপনার মনে হবে আপনি কেমন একরকম স্বর্গেই আছেন।
-
ভাদু দ্বীপ
দ্বীপটি পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয়। চমৎকার এই দ্বীপটিতে এসে অজান্তে নিজেকে নিজে হারিয়ে ফেলবেন সৌন্দর্যের মোহনায়। প্রতিদিন দর্শনার্থীরা দ্বীপে ভিড় করে এবং আশেপাশের এলাকা ঘুরে দেখে।