November 23, 2024
ঠোঁট-লিপিস্টিক-ক্ষতি

ঠোঁট-লিপিস্টিক-ক্ষতি

ঠোঁট-লিপিস্টিক-ক্ষতি

ঠোঁট-লিপিস্টিক-ক্ষতি

ঠোঁট মানব সৌন্দর্যের একটি অন্যতম অর্গান। সেটা হতে পারে কোন পুরুষের হতে পারে নারীর । সৃষ্টিকর্তার  অপূর্ব সৃষ্টির এক অন্যতম নিদর্শন হলো এই ঠোঁট ।  অন্যান্য অঙ্গের মতো ঠোঁটেরও রয়েছে আলাদা ক্ষমতা । চোখ যেমন মনের আয়না তেমনি ঠোঁট ব্যক্তিত্ব প্রকাশের অন্যতম মাধ্যম ।অনেক সময়  ঠোঁটের আকৃতিই  নির্দেশ করে যে একজন ব্যক্তি উদ্যমী বা প্রায়শই হতাশাগ্রস্ত, মিশুক বা একা থাকতে পছন্দ করেন।

আমেরিকান সাইকোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের মতে, পাতলা ঠোঁটযুক্ত ব্যক্তি বুদ্ধিজীবী এবং অন্তর্মুখী। একাকীত্ব পছন্দ করে। আবেগপ্রবণ এবং একটু রেগে যান। তবে হ্যাঁ, মানসিক চাপেও ভোগেন। ‘ওরা আমাকে নিয়ে খারাপ কিছু ভাবছে’, এই ভাবনাটা তাদের কুরে কুরে খায়। বুক ফেটে যায়, কিন্তু মুখ ফেটে না।

পুরু ঠোঁটযুক্ত একজন ব্যক্তি স্নেহ, দয়া, ভালবাসায় পূর্ণ। সবসময় অন্যদের জন্য যত্নশীল. সবকিছুতেই তাদের অদম্য উৎসাহ। অত্যন্ত আশাবাদী। সে নিজের সুবিধা-অসুবিধার চেয়ে অন্যের চাহিদাকে বেশি গুরুত্ব দেয়। এতটাই যে মাঝে মাঝে একজন অন্যের দোষও দেখতে পায় না। আত্মবিশ্বাসে ভরপুর। তাদের মতামতের প্রতি রয়েছে অটুট আস্থা। এই মনোভাব ভাল, কিন্তু অন্যদিকে, তারা সম্পর্কের ক্ষেত্রে তাদের সঙ্গীর কাছে তাদের ভালবাসা প্রকাশ করতে অক্ষম।

ঠোঁট নিয়ে তো অনেক কথাই লিখা হয়ে গেল এবার ঠোঁটের সৌন্দর্য বৃদ্ধির একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান নিয়ে  আলোচনা করছি কারণ সেই ঠোঁট যদি হয় কোন  মেয়ের  তাহলেতো কথাই নেই  । আর ঠোঁটের মত একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গাকে সৌন্দর্যের বৃদ্ধি দিতে লিপিস্টিকের বিকল্প কিছুই ভাবছেন না অধুনা মহিলারা ।  কিন্তু লিপিস্টিক কি সুন্দর এর অন্তরালে অসুন্দরের হাতছানি কিনা তাই আজকের লেখার মূল উদ্দেশ্য ।

একজোড়া লাল ঠোঁট। তা নিয়ে কত গান, কত কবিতা। কিন্তু সেই লাল ঠোঁটের অধিকারী ব্যক্তিটি হয়তোবা জানেনই না যে,  স্বাভাবিক জীবনে আপনার বয়স ৫০ থেকে ৬০ এর ভেতরে আপনি ঠোট লাল রাখতে গিয়ে লিপস্টিক খেয়ে ফেলছেন প্রায় এক মনের উপরে।

কারণ লিপস্টিক মেয়েদের নিত্য প্রয়োজনীয়  সঙ্গী। অনেকেই ঠোঁটে লিপস্টিক না লাগিয়ে বাইরে যেতেই  পারেন না। অনেকেই আছেন যারা ঘরে বসেও হালকা রঙের লিপস্টিক লাগাতে পছন্দ করেন। আবার এই প্রসাধনীর রঙে আস্থা ফিরে পান অনেকেই। কিন্তু লিপস্টিক তৈরিতে যে ধরনের রাসায়নিক ব্যবহার করা হয় অনেক ক্ষেত্রেই তা ত্বকের জন্য শুভ  নয়।

ম্যাঙ্গানিজ, ক্যাডমিয়াম, ক্রোমিয়াম এবং অ্যালুমিনিয়াম আছে এমন লিপস্টিক ব্যবহার না করাই ভালো। এগুলো শরীরে প্রবেশ করলে নানা ধরনের ক্ষতি হতে পারে। এমনকি কয়েক বছর পরে, তা শরীরে জমা হতে পারে এবং পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। তাই লিপস্টিক কেনার সময় দেখে নিন এতে এই উপাদানগুলো আছে কি নেই।

বেশিরভাগ লিপস্টিকে সীসা এবং প্যারাবেন থাকে। সীসা শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এটি উদ্বেগ এবং হার্টের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। লিপস্টিকে প্রচুর প্রিজারভেটিভ থাকে যা ক্ষতিকর। এদের পরিমাণ বেশি হলে ক্যান্সারের সমস্যা হতে পারে। বিশেষ করে প্যারাবেনের ক্যান্সারের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। মহিলাদের স্তন ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

গর্ভাবস্থায়, যেহেতু একটি মহিলার শরীরে একটি ভ্রূণ থেকে একটি শিশু বৃদ্ধি পায়, তাই এই সময়কালে বিশেষ যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। গর্ভাবস্থায় যে কোনো প্রসাধনী কেনার আগে দেখে নিতে হবে সেগুলো ‘বিপিএ ফ্রি’, ‘ফ্রেগ্রেন্স ফ্রি’, ‘ডিইএ ফ্রি’, ‘প্যারাবেন ফ্রি’, ‘নো থ্যালেটস’ আছে কিনা। আর বিশেষ করে লিপস্টিক কেনার ক্ষেত্রে কম দামি লিপস্টিক ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।

যারা এটি অনুশীলন করেন তাদের অনেকেই বিশ্বাস করেন যে লিপস্টিকে থাকা মোম ঠোঁটকে আর্দ্র রাখতে সাহায্য করে। কিন্তু অনেকেই এটাও জানেন যে এই প্রসাধনীর গাঢ় রঙে ঠোঁট ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই যুক্তি সব লিপস্টিকের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। যদি কারও আগে থেকেই ঠোঁটের সমস্যা থাকে তবে লিপস্টিককে পুরোপুরি দোষ দেওয়া যায় না।

শুষ্ক ঠোঁটের সমস্যা: কিছু লিপস্টিক আছে, যা ঠোঁটকে শুষ্ক করে তুলতে পারে। আর যাদের শুষ্ক ত্বকের সমস্যা আছে, তাদের এই সমস্যা মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। তবে যেসব লিপস্টিক বিভিন্ন ধরনের তেল, মাখন ব্যবহার করে সেগুলো ঠোঁটের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে।

অ্যালার্জি: যাদের বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থে অ্যালার্জি রয়েছে তাদেরও ঠোঁটে  লিপস্টিক ব্যবহারে সতর্ক থাকতে হবে। যেকোনো নতুন কোম্পানির প্রসাধনী ব্যবহার করার আগে ‘প্যাচ টেস্ট’ করা জরুরি।

কালো দাগ: ঠোঁটে কালো দাগ জেনেটিক বা শারীরিক কারণে হতে পারে। সূর্য থেকে আসা অতিবেগুনী রশ্মিও এ ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। শুধু লিপস্টিক লাগালেই ঠোঁটে কালচে দাগ পড়বে এমন নয়।

এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে কি করা যেতে পারে? আর আসুন জেনে নিই ঠোঁট সুস্থ রাখার উপায়

হাইড্রেশনঃ

ঠোঁট হাইড্রেট রাখতে পর্যাপ্ত পানি পান করুন। লিপ বাম ব্যবহার করুন যা ত্বকের জন্য নিরাপদ এবং UV রশ্মি থেকে রক্ষা করতে পারে।ঠোঁট হাইড্রেটেড এবং নরম রাখতে প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে লিপবাম ব্যবহার করুন।

এক্সফোলিয়েশনঃ

ঠোঁটের মৃত ত্বকের কোষগুলি থেকে মুক্তি পেতে নিয়মিত এক্সফোলিয়েট করুন। তবে স্ক্রাবের দানা যেন খুব বেশি শক্ত না হয়। আপনি সপ্তাহে দুবার আপনার ঠোঁট এক্সফোলিয়েট করতে পারেন। আপনি বাড়িতেও এই স্ক্রাব তৈরি করতে পারেন। মধুর সঙ্গে চিনি বা বাটারের সঙ্গে কফি পাউডার মিশিয়ে ঠোঁট স্ক্রাব তৈরি করুন। এছাড়া বাজারে বিভিন্ন ধরনের ভালো মানের  লিপ স্ক্রাব পাওয়া যায়।

প্রাইমারঃ

লিপস্টিক লাগানোর আগে ঠোঁটে প্রাইমার ব্যবহার করা উচিত। এই প্রাইমার লিপস্টিকের ক্ষতিকর রাসায়নিকের কারণে ঠোঁটের কালো দাগ রোধ করবে।

পানি থেরাপিঃ

পুরো মুখ পানি দিয়ে ভালোভাবে ভিজিয়ে নিন এবং তারপর একটি পুরানো নরম ব্রাশ দিয়ে ঠোঁট ঘষে নিন। এতে ঠোঁটের পুরনো ত্বক দূর হবে।

শসার ব্যাবহারঃ

প্রাকৃতিকভাবে গোলাপি ঠোঁট পেতে কয়েক টুকরো শসা নিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। তারপর সেই মিশ্রণে মধু মিশিয়ে ঠোঁটে ব্যবহার করুন।

লেবুর শক্তিঃ

অতিরিক্ত প্রসাধনী ব্যবহার করার ফলে এর মধ্যে থাকা রাসায়নিক ঠোঁট কালো করে। লেবুতে থাকা ভিটামিন সি ঠোঁটের কালচে ভাব দূর করে। ঠোঁট কালো করতে প্রতিদিন লেবুর রস ব্যবহার করুন।

গোলাপের পাপড়িঃ

গোলাপের পাপড়ি ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। কিছু শুকনো গোলাপের পাপড়ি নিয়ে পিষে নিন। মধুর সাথে মিশিয়ে ঠোঁটে লাগান।

দুধ ও জাফরানঃ

দুধে থাকা প্রাকৃতিক এনজাইম এবং ল্যাকটিক অ্যাসিড ঠোঁট থেকে মৃত কোষ দূর করতে সাহায্য করে। দুধের সাথে সামান্য জাফরান মিশিয়ে ঠোঁটে ব্যবহার করলে ঠোঁট গোলাপি ও স্বাস্থ্যবান হবে।

বিটরুটের রসঃ

ঠোঁট গোলাপি রাখতে বিটরুটের রস দারুণ উপকারী। ঠোঁট গোলাপি রাখার পাশাপাশি বীট সূর্যের ক্ষতি থেকেও ঠোঁটকে রক্ষা করে। প্রতিদিন অল্প পরিমাণ বিটরুটের রস ঠোঁটে লাগান। ৩০ মিনিটের জন্য ছেড়ে দিন এবং ধুয়ে ফেলুন।

আরও পড়ুন

চুলকানি দূর করার সহজ উপায়

ঘুমের মধ্যে নির্বিঘ্নে পেটে ঢুকে যায় সাপটি, তরুণীর পেট থেকে বের হলো ৪ ফুট লম্বা সাপ

কাকের কীর্তিঃ ইসরায়েলি পতাকার প্রতি চটেছে সেই কাক

2 Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X