শরীরের গন্ধ শনাক্ত করে মশারা কামড় দেয়
একজনের গায়ের গন্ধের ওপর অনেক কিছু নির্ভর করে, মশারা কার প্রতি কতটা আকৃষ্ট হবে। নতুন এক বৈজ্ঞানিক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। এই গবেষণার ফলাফল সম্প্রতি কারেন্ট বায়োলজি জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
জনস হপকিন্স ব্লুমবার্গ স্কুল অফ পাবলিক হেলথের সহকারী অধ্যাপক কনর ম্যাকমেনিম্যান এবং গবেষক ডিয়েগো গিলার্ডো এবং স্টেফানি র্যাঙ্কিন-টার্নার দ্বারা গবেষণাটি পরিচালিত হয়েছিল।
এডগার সিমুলন্দুর নেতৃত্বে জাম্বিয়ার মাকা রিসার্চ ট্রাস্ট তাদের সাথে যুক্ত ছিল। মশা সাধারণত ফল-মূল ও লতা-পাতা খায়। তবে স্ত্রী মশার ডিম ফুটতে অতিরিক্ত প্রোটিনের প্রয়োজন হয়। তারপরে তারা তাদের প্রজনীয় রক্ত খাওয়ানোর জন্য মানুষ সহ বিভিন্ন স্তন্যপায়ী প্রাণীকে দংশন করে বা কামড়ায়। তবে, ভয়ের বিষয় হল তারা তাদের কামড়ের মাধ্যমে পরজীবী এবং ভাইরাস ছড়ায়। এর দ্বারা সৃষ্ট সমস্ত রোগের মধ্যে ম্যালেরিয়া এবং ডেঙ্গু সবচেয়ে বিপজ্জনক।
গবেষণার সহ-লেখক এডগার সিমুলুন্ডু বলেন, এই গবেষণার ফলাফল মশাকে প্রলোভনে ফেলা বা বিমুখ করার নতুন ধারণা সামনে নিয়ে এসেছে। এর মাধ্যমে মশাকে মানুষের প্রতি আকৃষ্ট হওয়ার পথ বন্ধ করা যেতে পারে। এতে করে আফ্রিকান অঞ্চলে মহামারী আকার ধারণ করা ম্যালেরিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হতে পারে।
এখনও প্রতি বছর ৬০,০০০০০ এরও বেশি মানুষ ম্যালেরিয়ায় মারা যায়। গবেষণাটি মূলত সাব-সাহারান আফ্রিকায় মশার প্রজাতি অ্যানোফিলিস গাম্বিয়ার আচরণের দিকে নজর দিয়েছে। গবেষকরা দেখেছেন, মানুষের ঘামের বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ মশার আকর্ষণে ভিন্ন।
মশা কিভাবে বিভিন্ন মানুষের শরীরের বিভিন্ন গন্ধে আকৃষ্ট হয় তা তুলনা করা হয়। স্পষ্টতই, এই পোকাটি ২০ মিটার বা ৬৬ ফুট দূরত্ব থেকে গন্ধ সনাক্ত করতে পারে। গবেষকরা দেখেছেন যে মশারা কার্বক্সিলিক অ্যাসিডের প্রতি সবচেয়ে বেশি আকৃষ্ট হয়। এই অ্যাসিডগুলির মধ্যে রয়েছে বুটিরিক, যা ‘দুর্গন্ধযুক্ত’ পনিরে পাওয়া যায়। মানুষের ত্বকে এই অ্যাসিড তৈরির জন্য দায়ী এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া। তারা ইউক্যালিপটল নামক রাসায়নিকের প্রতিও আকৃষ্ট হয়, যা উদ্ভিদে পাওয়া যায়।
2 Comments