১ কেজি গাঁজার জন্য ফাঁসি
থাইল্যান্ডের মতো পর্যটন কেন্দ্রীক দেশগুলি যখন গাঁজাকে বৈধ করছে, সিঙ্গাপুর গাঁজা পাচারে জড়িত থাকার জন্য একজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে। 1 কেজি (২.২পাউন্ড) গাঁজা পাচারে জড়িত থাকার জন্য ২০১৮ সালে দোষী সাব্যস্ত তাঙ্গারাজু সুপিয়াকে(৪৬)গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
তাঙ্গারাজুর পরিবার ক্ষমা প্রার্থনা করলেও তা গ্রহণ করা হয়নি। বিচারকরা পর্যবেক্ষণ করেছেন যে তার ফোন নম্বরটি মাদক চক্রের সাথে যোগাযোগের জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল। যদিও তার পরিবার অভিযোগ করেছে, তাকে পর্যাপ্ত আইনি পরামর্শ দেওয়া হয়নি। তাকে তামিল দোভাষীর সুবিধা থেকেও বঞ্চিত করা হয়েেছে।
দেশটির কারাগারের একজন মুখপাত্র বলেছেন, চাঙ্গি কারাগারে এই সাজা কার্যকর করা হয়েছে। তবে কবে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হবে তা জানা যায়নি।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (HRW) এর ডেপুটি এশিয়া ডিরেক্টর ফিল রবার্টসন মৃত্যুদণ্ডের নিন্দা করেছেন এবং বলেছেন যে তাঙ্গারাজুর বিরুদ্ধে স্পষ্টভাবে তার অপরাধ প্রমাণ করে না। তাকে আইনজীবী ছাড়াই পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। তিনি একজন তামিল দোভাষী চেয়েছিলেন, সেটিও দেওয়া হয়নি।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এই মৃত্যুদণ্ডকে বেআইনি বলে অভিহিত করেছে এবং মানবাধিকার সংস্থা বলেছে, “এই পদক্ষেপগুলি আন্তর্জাতিক আইন ও মান লঙ্ঘন করেছে।”
গত বছর ১১টি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার পর এটি সিঙ্গাপুরে ছয় মাসে প্রথম মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। ক্রমবর্ধমান সংখ্যক সিঙ্গাপুরবাসী মাদকের মামলায় বাধ্যতামূলক মৃত্যুদণ্ডের ব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, এবং দেশটি গত বছর নগেনথ্রান ধর্মলিঙ্গম নামের একজনকে ফাঁসি দেওয়ার পর নজিরবিহীন বিক্ষোভ দেখেছিল। কিন্তু দেশটির কর্তৃপক্ষ যুক্তি দেখায় যে তাদের কঠোর অবস্থান মাদক সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রেখেছে।
থাঙ্গারাজের পক্ষে ব্রিটিশ বিজনেস টাইকুন রিচার্ড ব্র্যানসনের আবেদনের জবাবে, দেশটির সরকার বলেছে যে তার বিরুদ্ধে মামলা যুক্তিসঙ্গতভাবে প্রমাণিত হয়েছে এবং ১ কেজি গাঁজা প্রায় ১৫০ জন অপব্যবহারকারীকে নেশাগ্রস্থ করার জন্য যথেষ্ট।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী এক বিবৃতিতে বলেছে, “আমাদের পদ্ধতি আমাদের জন্য কাজ করেছে এবং আমরা সিঙ্গাপুরবাসীদের সর্বোত্তম স্বার্থে আমাদের নিজস্ব পথ নির্ধারণ করতে থাকব।” তাঙ্গারাজের বোন লীলাবতী সুপিয়া জানান, জেল থেকে পরিবারের কাছে ডেথ সার্টিফিকেট হস্তান্তর করা হয়েছে।
আদালত ২০১৯ সালে মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে তার আপিল খারিজ করে দেয়। রাষ্ট্রপতির কাছে যাবজ্জীবনের আবেদনও ব্যর্থ হয়েছে। যদিও পরিবারের সদস্যরা এবং মানবাধিকার কর্মীরা পরে প্রকাশ্যে তার ক্ষমার আবেদন করেন।