রমজানের সময় যে দেশের প্রায় সকল মানুষই কোরআন তেলাওয়াত করেন
সেটা হল যুদ্ধবিধ্বস্ত ইয়ামেন দেশ বা সিরিয়া।
ইয়েমেনের একজন কোরআন তেলাওয়াতকারী মুহাম্মদ আল জুনদুবি বলেছেন, “আল্লাহকে ধন্যবাদ যে ইয়েমেনিরা সমস্ত বাধা সত্ত্বেও কুরআনের যত্ন নেয়।” বই বাঁধাই করে, দিনের পর দিন সঞ্চয় করে, সম্মান দেখায়। কোনটা জায়েয আর কোনটা হারাম সেটাও সে চিন্তা করে। এটা প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর দেওয়া নির্দেশ অনুসরণ করা।
পশ্চিম এশিয়ার দেশ ইয়েমেনের জনসংখ্যার শতকরা একশ ভাগই মুসলিম। ৬৫ শতাংশ সুন্নি; বাকিরা শিয়া মতাদর্শে বিশ্বাসী।
রমজান মাসে ইয়েমেনে বুকবাইন্ডিং কারিগররা তাদের দম ধরার পর্যাপ্ত সময় পাচ্ছেন না। ছেঁড়া-ফাটা, মলিন মলাটের কোরআন শরিফ ঠিকঠাকের জন্য বাড়ছে মুসল্লিদের ভিড়। দেশে যুদ্ধ-সহিংসতা অব্যাহত রয়েছে, বহু ভবনের পাশাপাশি ধ্বংস করা হয়েছে পবিত্র কোরআন শরীফ। রোজার মাসে তাদের সবই সংস্কার করতে হবে।
রমজান মানে উচ্চস্বরে কোরআন তেলাওয়াত করা। মসজিদ-মাদ্রাসায় এমনকি বাড়িতেও অনেকে পবিত্র গ্রন্থ পাঠ করেন। তাই পবিত্র মাসে কুরআনের চাহিদা বেড়ে যায়।
যুদ্ধ-সহিংসতায় বিধ্বস্ত ইয়েমেন। বোমা হামলায় ধ্বংস হয়েছে দেশের বহু মসজিদ, পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে পবিত্র কোরআন শরিফও। তবে, একদল কোরআনের নিবেদিত ভক্ত তাদের সংরক্ষণের জন্য কাজ করেই যাচ্ছে । যখন রমজান আসে, তারা ঐতিহ্যবাহী বই বাঁধাই কারিগরদের দরজায় ছুটে আসে।
সানার ক্রেতা ইব্রাহিম আল জাইদি বলেন, “আমি আল-মাহবিত প্রদেশ থেকে ৪৭টি কোরআন নিয়ে এসেছি। কারণ তাদের পাতাগুলো ছেঁড়া, চূর্ণবিচূর্ণ বা ফাটা। এগুলো সাধারণত মসজিদ থেকে আনা হয়। কারণ প্রায় সবাই রমজানে কোরআন তেলাওয়াত করে।
সাধারণ বই নয়; পবিত্র গ্রন্থের বাঁধন দৃঢ় হতে হবে। পাপ করা যাবেনা। তাই বুকবাইন্ডাররাও হালাল-হারামের বিষয়গুলোকে আমলে নেয়।
সানার বই বাঁধাইয়ের কারিগর হাশিম আল সিরাজি বলেন, কোরআন শরিফ বাঁধতে নতুন কাগজ ও বিশেষ কাপড়ের প্রয়োজন হয়। তারপর নাইলন সুতো দিয়ে সেলাই করা হয় । এর উপর একটি পাতলা চামড়ার মোড়ক রাখা হয়। পরের ২৪ ঘণ্টা যন্ত্রের মধ্যে চাপে রাখি বইটি। নতুবা সেটি বেঁকে যাবে। পুরো একদিন রাখা হয়, প্রখর রোদে।
মুসল্লিরাও ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় রীতিকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাদের কথা পবিত্র গ্রন্থের যত্ন নেওয়া।
1 Comment