অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহারের বিপদ
এমন দৃশ্য নতুন নয় যে, শুধু সড়কেই তাই নয় । বরং ট্রেনে, বাসে, এমনকি ঘরোয়া আড্ডায়ও অনেকে মোবাইল ফোন নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন সর্বত্র। । এটি এখন জীবনযাত্রায় পরিণত হয়েছে। আর তার হাত ধরেই জীবনে হানা দিচ্ছে নানা ধরনের রোগ। চিকিৎসা বিজ্ঞান এই রোগের নাম দিয়েছে ‘টেক্সট নেক’।
সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, ৮০ শতাংশ মানুষ এই রোগে ভুগছেন। ৩৫ শতাংশ এই রোগ সম্পর্কে সচেতন নয়। এবং প্রায়২১ শতাংশ পরম অসুস্থতার দ্বারপ্রান্তে হাজির।
এ রোগে মেরুদণ্ড স্থায়ীভাবে বাঁকা হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। শুধু তাই নয়, ঘাড় ও গলার হাড় ও স্নায়ুর ওপর চাপও স্থায়ীভাবে ক্ষতি করতে পারে। শরীর কতটা সামনের দিকে ঝুঁকবে তা নির্ভর করবে ঘাড় ও ঘাড় কতটা ওজন বহন করবে তার ওপর। মাথা নিচু করে মোবাইল বেস চলাকালীন ঘাড় প্রায় ২০ থেকে ৩০ডিগ্রি ঝুঁকে থাকে। এতে মেরুদণ্ডে চাপ পড়ে। এভাবে দীর্ঘ সময় চলতে থাকলে কোনো এক সময় মেরুদণ্ড সামনের দিকে ঝুঁকে পড়ে। ঘাড় বাঁকানো, গলা ও ঘাড়ের পক্ষাঘাত- এর কিছু পরিণতি মারাত্মক হতে পারে।
চিকিৎসকরা বলছেন, এই রোগ নিরাময়ের একমাত্র উপায় হলো মোবাইল ফোন ব্যবহার বন্ধ করা। তা না হলে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যে কোনো সময় ভর করবে
এই রোগ।
মোবাইল ফোনের উদ্ভাবক কুপার ঘাড় গুঁজে মোবাইল ঘাঁটতে নিষেধ করছেন এটা বিপজ্জনক হতে পারে. যে ব্যক্তি মোবাইল আবিষ্কার করেছেন তিনিই ডিভাইসটির অতিরিক্ত ব্যবহার নিয়ে সরব হয়েছেন।
সত্তরের দশকে ‘Motorola Dynatac 8000X’ মোবাইল ফোন দিয়ে যাত্রা শুরু হয়। আজ সেই যন্ত্রটাই বদলে দিয়েছে গোটা বিশ্ব। আর সেই মোবাইল ফোনের অন্যতম নির্মাতা মার্টিন কুপার দিনে খুব কম সময়ের জন্য ফোনটি ব্যবহার করেন। তিনি প্রথম ‘ওয়্যারলেস ফোন’ আবিষ্কার করে সারা বিশ্বে শোরগোল ফেলে দেন। কিন্তু নির্মাতা নিজেই বারবার মোবাইল ফোনের অতিরিক্ত ব্যবহারের কথার ব্যাপারে হুশিয়ারি দিয়ে যাচ্ছেন। ।
কুপারের মতে, “জীবন উপভোগ করতে চাইলে মোবাইল ফোনের ব্যবহার কমাতে হবে।” মোবাইল ফোন এখন জীবনের অংশ হয়ে গেছে। অকারণে বা অকারণে মোবাইলের স্ক্রিনে চোখ দুটো আটকে থাকে সারাক্ষণ।
সাম্প্রতিক একটি সাক্ষাত্কারে মার্টিন বলেছেন, “যখন আমি রাস্তা পার হওয়া কাউকে সেল ফোনের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখি তখন আমার হৃদয় ভেঙে যায়।”