রোজা অবস্থায় মেসওয়াকের উপকারিতা
সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর ব্রাশ করার অভ্যাস সবারই আছে। কিন্তু রোজার মাসে সুবহে সাদিকের আগে ব্রাশ করতে না পারলে সমস্যায় পড়তে হয়। কারণ রোজা অবস্থায় টুথপেস্ট, টুথ পাউডার, মাটি বা কাঠকয়লা দিয়ে দাঁত ব্রাশ করা মাকরূহ। আর পেস্ট বা মাজন গলার ভিতর চলে গেলেতো রোজাই নষ্ট হয়ে যায়। তাই রোজায় টুথপেস্ট ব্যবহার না করার কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
মিসওয়াক নবীর সুন্নত
কিন্তু সুবাহ সাদিকের আগে সেহরির শেষ মিনিটে ব্রাশ করতে না পারলে রোজার মাকরূহ দিক এড়াতে মেসওয়াক করা উচিত। এর মাধ্যমে নবীজির একটি বিশেষ সুন্নতের আমলে সারাদিনের দুর্গন্ধ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে ।
হাদিসে মিসওয়াকের ফজিলত
মুখমণ্ডল পরিষ্কারে মেসওয়াকের ব্যবহার সম্পর্কে একটি হাদিসে হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মিসওয়াক মুখমণ্ডল পরিষ্কারের মাধ্যম এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যম। (নাসাঈ )
অন্য হাদিসে, হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আমার উম্মতের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা না থাকলে আমি তাদের প্রত্যেক নামাযের সময় মিসওয়াক করার নির্দেশ দিতাম। (বুখারী)
রমজানে মিসওয়াক করা
হাসান (রহঃ) কে রোযা অবস্থায় দিনের শেষে মিসওয়াক করার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, রোযা অবস্থায় দিনের শেষে মিসওয়াক করতে কোন অসুবিধা নেই। মিসওয়াক পবিত্রতার একটি মাধ্যম। সুতরাং দিনের শুরুতে ও শেষে মিসওয়াক কর” (মুসান্নাফ আব্দুর রাজ্জাক)।
দাঁতের সুরক্ষায় মিসওয়াক
এছাড়া রমজান মাসে এবং রমজান ছাড়া সারা বছর মেসওয়াক করা মুস্তাহাব। এ ছাড়া যুগ যুগ ধরে দাঁত সুরক্ষার বিজ্ঞানসম্মত ও অত্যন্ত কার্যকরী পদ্ধতি হিসেবে মিসওয়াকের ব্যবহার হয়ে আসছে। তাই রমজানে মুখের দুর্গন্ধ এড়াতে এবং রোজাকে ত্রুটিমুক্ত রাখতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর এই বিশেষ সুন্নতটি আমল করা যেতে পারে।
টুথপেস্ট, টুথ পাউডার ব্যবহারে সতর্কতা জরুরি
আলেমদের পরামর্শ অনুসরণ করে রোজার বিশেষ ফজিলত অর্জনের জন্য টুথপেস্ট ও টুথ পাউডার ব্যবহার থেকে বিরত থাকা জরুরি। তবে রমজানে দিনের বেলায় টুথপেস্ট বা মাজন ব্যবহার করতে না পারলেও দাঁত ও মুখের যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। কারণ, দুই দাঁতের মধ্যে খাবার জমে গেলে দাঁতের ক্যারিস এবং জিনজিভাইটিস হতে পারে। তাই রমজান মাসে ইফতার ও সেহরির পর মানসম্পন্ন টুথপেস্ট ও ব্রাশ দিয়ে দাঁত ব্রাশ করার পরামর্শ দেন দাঁতের চিকিৎসকরা।
মিসওয়াকের সুন্নতকে দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরি
মিসওয়াকের সুন্নত আজকাল প্রায় হারিয়ে গেছে। অনেকেই এ বিষয়ে অবগত নন। তবে বিদ্রোহ ও ফিতনা-ফাসাদের সময়ে আল্লাহর রাসূলের সুন্নতকে দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরলে বিশেষ ফজিলত লাভের সুসংবাদ রয়েছে।
কেননা একটি হাদিসে এসেছে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “‘আমার উম্মাতের মধ্যে যখন ফেতনা-ফাসাদ হবে, তখন যে ব্যক্তি আমার সুন্নাতকে সুদৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরে রাখবে , তাকে একশত শহীদের সওয়াব দেওয়া হবে।”