November 23, 2024
অসুস্থ ও বৃদ্ধ ব্যক্তিগণ রোজা রাখতে না পারলে কী করবেন

অসুস্থ ও বৃদ্ধ ব্যক্তিগণ রোজা রাখতে না পারলে কী করবেন

অসুস্থ ও বৃদ্ধ ব্যক্তিগণ রোজা রাখতে না পারলে কী করবেন

অসুস্থ বৃদ্ধ ব্যক্তিগণ রোজা রাখতে না পারলে কী করবেন

রমজান মাসে রোজা রাখা সকল ঈমানদার নর-নারীর উপর ফরজ, যারা জ্ঞানসম্পন্ন, প্রাপ্তবয়স্ক , সুস্থ ও সামর্থ্যবান। রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার শর্তগুলো হলো: স্বাভাবিক জ্ঞানসম্পন্ন হওয়া, সাবালক হওয়া, সুস্থ ও সক্ষম হওয়া, নারীদের পবিত্র অবস্থায় থাকা, সফর বা ভ্রমণে না থাকা(নিজ এলাকায় বা নিজ বাড়িতে থাকা।)

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা নির্দেশ দিয়েছেন, সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি এ মাস পাবে, সে যেন এ মাসে রোজা রাখে। (সূরা বাকারা: .১৮৫) ।

কিন্তু যারা অসুস্থতা বা বার্ধক্যজনিত কারণে রমজানের রোজা রাখতে পারছেন না, পরম করুণাময় আল্লাহ তাদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। ইসলামের পরিভাষায় ফরজ আইন শিথিল করার বিশেষ অবস্থাকে রুখসাত(ওজর গ্রহণ বা শিথিলতা)  বলে।

স্বাভাবিক অবস্থায় সকল প্রাপ্তবয়স্ক নারী-পুরুষের উপর রোজা ফরজ, তবে কিছু ক্ষেত্রে এই বিধানে কিছুটা শিথিলতা রয়েছে।

রমজান মাসে, পাঁচটি বিভাগ রয়েছে যাদের উপর এই রুখসাত বা শিথিলতা আরোপ করা হয়েছে:

  • মুসাফির(সফরে থাকেন যিনি)
  • অসুস্থ
  • অতিবৃদ্ধ
  • গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মহিলা
  • ঋতুস্রাব এবং নেফাসগ্রস্ত (সদ্য সন্তান প্রসবকারিণী) মহিলা।

১. সম্ভব হলে মুসাফিরের জন্য রোজা রাখা উত্তম। আর কষ্টকর হলে রোজা ভাঙতে পারবে। তবে এই রোজা পরে কাজা করতে হবে। বিখ্যাত সাহাবী হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ (সা.) কোনো এক রমজানে রোজা রেখে মক্কায় গমন করেন। কাদিদ নামক স্থানে পৌঁছে তিনি যখন রোজা ভাঙলেন, তখন সবাই রোজা ভেঙে ফেললেন। (সহীহ বুখারী)

এ প্রসঙ্গে প্রসিদ্ধ সাহাবী আনাস ইবনে মালেক (রা.) বর্ণিত ঘটনাটি প্রসিদ্ধ। তিনি বলেন, আল্লাহ তায়ালা মুসাফিরের রোজা ও অর্ধেক নামাজ হ্রাস করে দিয়েছেন আর গর্ভবতী ও দুগ্ধদানকারী নারীদের রোজা (পরবর্তীতে কাজা করার শর্তে) মাফ করে দিয়েছেন। (সুনানে তিরমিযী)

২. রোজা রাখার কারণে রোগী অসুস্থ হলে বা মৃত্যুর আশঙ্কা থাকলে রোজা ছেড়ে দেওয়া যেতে পারে। যদি সে রোগ থেকে দ্রুত আরোগ্য লাভ করে এবং পরে রোজা রাখার ক্ষমতা ফিরে পায় তাহলে তাকে অবশ্যই কাযা আদায় করতে হবে, অন্যথায় তাকে ফিদয়া দিতে হবে। উল্লেখ্য যে, মাথাব্যথা, সর্দি, কাশি প্রভৃতি সামান্য অসুখের কারণে রোজা ভঙ্গ করা জায়েয নয়। রোজা রাখার কারণে রোগটি নিশ্চিত হয়ে গেলে অতি সতর্কতার কারণে রোজা পালন করা বাঞ্ছনীয় নয়। এ অবস্থায় বরং রোজা ভঙ্গ করা জরুরি।

একজন অতিবৃদ্ধ ব্যক্তি বা অক্ষম ব্যক্তি এমন রোগে ভুগছেন যেখান থেকে আরোগ্য লাভের কোনো সম্ভাবনা নেই, তাকে প্রতি রোজার পরিবর্তে আড়াই কেজি  গম (ফিতরার পরিমাণ) বা সমপরিমাণ মূল্য দিতে হবে। ইসলামী পরিভাষায় একে ফিদায়া বলা

৩.  একজন বয়স্ক ব্যক্তি যিনি রোজা রাখতে অক্ষম এবং পরবর্তীতে  রোজা রাখার ক্ষমতা ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনাও নেই, তাকে প্রত্যেক রোজার জন্য একটি সদকাতুল ফিতরের পরিমাণ সদকা আদায় করতে হবে। । অতিবৃদ্ধ ব্যক্তির রোজার সকল বিধান অসুস্থ ও রোগীর রোজার বিধান একই রকম হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X