November 21, 2024
সৌন্দর্য ঐতিহ্য আয়া সোফিয়ার ইতিহাস

সৌন্দর্য ঐতিহ্য আয়া সোফিয়ার ইতিহাস

সৌন্দর্য ঐতিহ্য আয়া সোফিয়ার ইতিহাস

সৌন্দর্য ঐতিহ্য আয়া সোফিয়ার ইতিহাস

তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরটি এশিয়া এবং ইউরোপ উভয় মহাদেশেই অবস্থিত। বসফরাস প্রণালীর কোলে দাঁড়িয়ে, ১৫০০বছরের ঐতিহাসিক এবং নান্দনিক স্থাপত্য, আয়া সোফিয়া।

বাইজেন্টাইন শাসনামলে জাস্টিনিয়ান এর নির্দেশে ৫৩৭খ্রিস্টাব্দে আয়া সোফিয়ার নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়। আয়া সোফিয়া স্থাপত্যের ইতিহাসে

অন্যরকম  আরেকটি মাত্রা যোগ করেছে। আর এই স্থাপত্য সোফিয়ার কথা অনেকেরই অজানা। এখানে প্রবেশ করলেই এর কারুকার্য যে কারো নজর কাড়বে।

ভবনটি খ্রিস্টান এবং মুসলমান উভয়ের দ্বারাই সম্মানিত। ইতিহাসের উত্তরণে এর পরিচয় ও ব্যবহার পরিবর্তিত হয়েছে। একটি বাইজেন্টাইন  খ্রিস্টান মন্দির নির্মিত হয়েছিল। সময়ের সাথে সাথে এটি গ্রীক অর্থোডক্স খ্রিস্টানদের জন্য একটি ক্যাথেড্রাল, রোমান ক্যাথলিকদের জন্য একটি ক্যাথেড্রাল এবং মুসলমানদের জন্য একটি মসজিদ হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছে। এখানে অর্থোডক্স চার্চের প্রধানের আসনও  ছিল। বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের রাজকীয় অনুষ্ঠান, রাজার রাজ্যাভিষেক ইত্যাদি এখানে অনুষ্ঠিত হতো।

আয়া সোফিয়ার রঙিন মার্বেল খোদাই গির্জার মূল অংশে দাঁড়িয়ে ছিল যেখানে নতুন বাইজেন্টাইন সম্রাটদের মুকুট পরানো হয়েছিল। আয়া সোফিয়া ৯০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের কেন্দ্র হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছিল।

কিন্তু ১৪৫৩ সালে সুলতান দ্বিতীয়   মুহাম্মদ  অটোমান সাম্রাজ্য কনস্টান্টিনোপল দখল করে। এর নতুন নাম ইস্তাম্বুল। তখন বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য চিরতরে শেষ হয়ে যায় । আয়া সোফিয়ায় প্রবেশকারী ইস্তাম্বুল বিজয়ী সুলতান দ্বিতীয়  মুহাম্মদ এর আদেশে স্থাপত্যটিকে একটি মসজিদে রূপান্তরিত করা হয়েছিল। সেখানেই তিনি প্রথম জুমার নামাজ আদায় করেন। ১৬১৬ সালে নীল মসজিদ সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত আয়া সোফিয়া ইস্তাম্বুলের প্রধান মসজিদ ছিল।

প্রায় ৫০০ বছর পর, ১৯৪৩ সালে, আধুনিক তুরস্কের নামধারী  কামাল আতাতুর্ক খ্রিস্টান ও মুসলমানদের মধ্যে বিরোধের অবসান ঘটাতে আয়া সোফিয়াকে একটি জাদুঘরে রূপান্তরিত করেন। ভবনটি জাদুঘর থাকাকালীন ১৯৮৫ সালে বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল।

আয়া  সোফিয়ার বিশাল সোনার গম্বুজটি মেঝে থেকে কমপক্ষে ১৫০ ফুট উপরে । ঐতিহাসিক এই ভবনটি দেখতে প্রতি বছর লাখ লাখ মানুষ ইস্তাম্বুলে ভিড় করে।

আয়া সোফিয়া খ্রিস্টান ও মুসলমানদের মধ্যে উত্তেজনা কমায়নি। বর্তমান ক্ষমতাসীন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান আবারো এটিকে মসজিদের  আকার দিতে এগিয়ে এসেছেন। ১০ ই জুলাই ২০২০ – হাইকোর্টের ঐতিহাসিক রায়ে মুসলমানদের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। তুর্কিরা এই রায়কে স্রদ্ধার সাথে স্বাগত  জানায়। তারই ধারাবাহিকতায় ২৪ জুলাই ২০২০  শুক্রবার জুমার নামাজের মধ্য দিয়ে আবারও এখানে ইবাদতে মগ্ন হয়েছেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা।

1 Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X